shabd-logo

পাঠ-মালা ।

10 November 2023

0 দৰ্শন কৰা হৈছে 0

বালকবিলাকর প্রতি সম্বোধন ।

হে প্রিয় লরাবিলাক ! তোমালোকে দেখিছা, যে আমার দেশাধিকারসকলে তোমালোকর হিতর নিমিত্তে ধন ভাঙ্গি পঢ়াশালি পাতি দিছে৷ এনে সুচল পাইও যদি তোমালোকে বিদ্যা আৰ্হি জ্ঞানী নোহোৱাঁ, তেন্তে সি কেৱল তোমালোকর দোষ হব। তোমালোকে জানিবা লরা বয়সেই হে বিদ্যা শিবির সময়। সেই অমূল্য সময় যদি এলাহত বা ধেমালিত খেদোৱাঁ, তেনেহলে বুঢ়া কালত শোক করিব লাগিব। সময় পাখি লগা, কাঁড়র দরে উরি যায়, আরু সি গলে বহুত ধন-রত্ন দিও তাক ওলটাই আনিব নোৱারি। এতেকে এতিয়া তোমালোকর হাতত যি সময় আছে, তাক জ্ঞান-বিদ্যা শিকাত নিযুক্ত করিলে সি ধরি রখার তুল্য হব; নাইবা শুদায় উরি যাব, আরু তাক নোপোৱাঁ । মই তোমালোকর নিজর ভালর নিমিত্তে এই কথা কৈছোঁ, এতেকে মোর এই সঞ্জ আলচলৈ আওহেলা নকরিবা ।

১ আধ্যা

১ পাঠ। নীতি-সার

১। সকলো বস্তুতকৈ বিদ্যা শ্রেষ্ঠ, কিয়নো তাক চোরে চুর করিব নোৱারে, ভাগীয়েও ভগাই নলয়, আরু সি কেতিয়াও ক্ষয় নেপায় ।

২। বিদ্যাই মানুহক নম্র করে, নম্র হলে মানুহ সৎপাত্র হয়, সেইয়ে হলে খন বাঢ়ে, ধনর পরা ধর্ম আরু

তারপরা সুখ হয়।

৩। শাস্ত্রে অনেক বিষয়র সংশয় গুচায়, নেদেখা কথাকো দেখার দরে বুজায়; এতেকে শাস্ত্ৰ সকলোৱে চক্ষু- স্বরূপ; সেই শাস্ত্র জ্ঞান যার নাই, সি-কণা

৪। যি বিদ্বান আরু ধাৰ্ম্মিক নহয়, এনে পুত্র হোৱার ফল কি? দেখা-শক্তিহীন চকু থকাকৈ নথকাই ভাল; কিয়নো তেনে চকুৱে সদায় পীড়া মাথোন জন্মায়।

৫। যেনেকৈ সোণর লগত পরিলে কাঁচেও উজ্জ্বল বরণ ধরে সেইরূপে সজ্জনর লগত থাকিলে মুর্খো পণ্ডিত

হয়।

৬। রজাও বিদ্বান লোকর সমান নহয়; কিয়নো রাজা নিজ দেশত মাথোন মান্য, বিদ্যাবন্ত মানুহে সকলো ঠাইতে সম্মান পায়।

৭। গুণহীন মানুহ উচ্চ বংশত ওপজার কি ফল? বিদ্যালয় হলে নীচ কুলর লোকেও সকলোরে আদর পায়। ৮। যেনেকৈ দেখিবলৈ বর ভাল হোৱাতো নির্গন্ধ পলাশ-ফুলক কেরে সমাদর নকরে, তেনেকৈ ভাজর বংশত জাত বর শুৱনি, যুবা পুরুষো বিদ্যাহীন হলে আদৃত নহয় । 

৯। সুগন্ধি ফুল-ধরা এজোপা গছেই গোটেইখন হাবি মলমলীয়া করে, আর এটি সুপুত্রর দ্বারাও তেওঁর বংশর

মান যশ বাড়ে।

১০। মানুহবিলাকর আলস্যর সমান শত্রু, আরু উদ্যোগর সমান বন্ধু নাই।

১১। বড়র আঠার ঢোপ এটা হাতর আঘাত লাগি মাটিত পরিলেও পুনরায় ডেও দি ওপরলৈ উঠে, সেইরূপে আপদত পরিলেও সাধুরে তারপরা উদ্ধার পায়।

১২। কটা গছরো গজালি ওলায়, ক্ষীণ হোৱা চন্দ্রও পুনরায় পূর হয়; এই কথা গমি চাই সন্তসকল, বিপদত

পরিলেও, বিবশ নহয়।

১৩। যি যি কামত পাৰ্গত, তেওঁক সেই কামত নিযুক্ত করিব লাগে; কিয়নো নজনা কাম করিব লাগিলে পণ্ডিতরো বুদ্ধি হেরায়।

১৪। যার জন্মর দ্বারা তেওঁর বংশর উন্নতি হয়, তেওঁর জন্মেই হে জন্ম; নতুবা এই অনিত্য সংসারত কোন নোপজে, আরু কার নো মৃত্যু নহয়?

১৫। উদ্যোগী পুরুষ সিংহর তুল্য শ্রেষ্ঠ; তেওঁ অৱশ্যে লক্ষ্মীর কৃপা পায়। মন্দ বুদ্ধির মানুহে মাথোন দৈবর

ওপরত ভরসা করে, এতেকে আপোনার শক্তিরে দৈৱক ঠেলি পুরুষালি করা; যত্ন করিলে যদি সিদ্ধি নহয়, তাত দোষ

কি?

১৬। আপদত পরিলে, মূর্খে দৈৱক দোষে; আপোনার কর্ম্মর দোষত যে আপদ হৈছে, তাক নেজানে।

১৭। সৎলোকে বিদ্যা হলে জ্ঞান পায়, ধন হলে দুখীয়াক দান, আরু শক্তি হলে আনক আপদরপরা রক্ষা করে; কিন্তু দুষ্ট মানুহর এই কেইটা গুণ হলে বিপরীত ফল হয়, অর্থাৎ সি বিদ্যাক বিবাদত মাথোন লগায়, ধনর দ্বারা তার অহঙ্কার হয়, আরু শক্তি হলে সি লোকক হিংসা করে।

১৮। পরর উপকারর নিমিত্তে যি লোকে ধন ব্যয় করে, তেওঁর সার্থক জীৱন। যি জনে ধন আর্জি আপোনার গে মাথোন পোহে, সি একো প্রশংসার যোগ্য নহয়; কারণ বঙ্গেও দীঘল ঠোঁটেরে মাছ ধরি আপোনার পেট পূরণ নকরে নে ?

১৯। বিনা দুখেরে সুখ নহয়, দুখ করিলে হে মুখ ভরে ।

২০। আপোনাক অজর অমর যেন ভাবি বিদ্যা আরু ধন উপার্জ্জন, আরু যমে যেন চুলিত ধরি টানিছে, এনে ভাৱে ধৰ্ম্মর চর্চ্চা করিব লাগে।

২ পাঠ

নীতি সার। (সমাপ্ত)

১। তোমার পিতৃ-মাতৃক সম্মান করিবা ।

২। অকারণত জীব হত্যা নকরিবা । 

৩। লোকৰ তিরোভার প্রেমত আসক্ত নহবা।

৪। চুর নকরিবা; মিছা কথাও নকৰা ।

৫। তোমার চুবুরীয়ার অহিতে মিছা সাক্ষী নোলাবা।

৬। তোমার চুবুরীয়ার ঘর, ভার্যা, দাস, দাসী, মহ, গরু বা আন কোনো বস্তুলৈ লোড নকরিবা ।

৭। মানুহর দশা সদায় সমানে নবর্তে, রথর চক্রর পরে ঘুরি থাকে; চন্দ্র-সূর্য্যারো উদয় অন্ত আছে; এতেকে আজি বি ওখ হৈ উঠিছে, কালিলৈ সি তললৈ নামিব পারে। ইয়াকে বুঝি জ্ঞানী লোক, বর ধনী আর ক্ষমতাবদ্ধ হলেও, অহঙ্কারী নহয়।

৮। যি ঠাইত মানুহে সম্মান আরু প্রীতি নেপায়, কোনো বন্ধু নাই, বিদ্যা আর ধন আজিবও নোৱারে ভাত থকাই

অনুচিত।

৯। প্রথম বয়সতে যি শাস্ত তাকেহে শান্ত বুলিব লাগে; শরীর দুর্ব্বল হলে নো শান্ত কোন নহয় ?

১০। সম্ভ লোকে এশ টকা ডরিও আনেরে সৈতে বিবাদ নকরে, কিন্তু মূর্খ হলে অকারণতে দন্দ করি ঘুরে

১১। অনুপস্থিত বিপদর নিবারণর নিমিত্তে যি আগেরেই সাৱধান হৈ থাকে সদায় তেওঁর সুখ হয়; কিন্তু বি উপস্থিত

আপদর প্রতিকারর কারণে চেষ্টা নকরে, তেওঁ অৱশ্যে কষ্টত পরে। ১২। দুখীয়াক প্রতিপালন করিবা, কিন্তু আঢ্যৱন্ত মানুহক ধন নিদিবা; কিয়নো ঔষর দ্বারা রোগীর উপকার হয়, নিযোগীর দরবত কি সকাম ?

১৩। উপকারীর শলাগ লবা, অপলাগীর সমান পাপী নাই ।

১৪। পরর উপকার করার সমান পুণা, আরু হিংসা করার সমান পাপ নাই।

১৫। আপদত পরিলে অধৈর্য্য নহে স্থির মনেরে তারপরা উদ্ধার পাবর উপায় চিন্তিব লাগে, নতুবা আপদে জালর দরে

মেরাই ধরে।

১৬। দয়া বা মরমর বশ হৈ যি শত্রুত বিশ্বাস করে, সি অৱশ্যে আপদত্ত পরে ।

৩ পাঠ

এজন বুঢ়া মানুষ, তার পুতেক আৰু এটা গाষর কথা

এই জগতত অনেক প্রকারর মানুহ আছে। সেই সকলোরে মত একে নহয়; এতেকে আমি কোনো কাম করি একেবারেই সকলোকে সন্তোষ দিব নোৱারোহঁক, আরু সকলোকে সন্তোষ দিব খুজিলে, আমার যত্ন সফল হওক ছারি, আমি অনেক সময়ত হাস্যাস্পদ, আরু হানির অধীন হব লাগে। এই কারণে বিবিলাকক জ্ঞানী আরু সৎলোক বুলি জনা যায়, অঞ্চল সিবিলাকর মত অনুসরি কাম করা উচিত।

এজন বুঢ়া, মানুহে তার এটা গাথ বিবির নিমিত্তে হাটলৈ লৈ বাওঁতে তার পুতেকক সেই গাধত তুলি আপুনি তার ওচরত খোজ কাঢ়ি গৈছিল। বাটত কিছুমান পথিকে সিহঁতক লগ পাই পুতেকক নিন্দা করি বুলিলে, - “চোট্টা- চোন, সেইটো কেনে নির্ব্বোধ ডেকা! সি গাধর পিঠিত উঠি সুস্থেরে গৈছে, বুঢ়াটোক হলে খোজ কঢ়াই মারিছে, এই কালত বুঢ়া মানুহর একৌ সম্মান 'নাইকিয়া হল।” তাতে বুঢ়াই বাটরুরাবিলাকর এই কথা উচিত যেন বুজি, আরু পুতেকরো নিন্দা গুচাবর ইচ্ছা করি তাক নামিবলৈ কলে, আরু নিজে গাধত উঠিল; এইরূপে অলপ দূর যোত্রার পাহুত আকৌ কিছুমান বাটরুৱা লগ পালে, তাতে সিহঁতে একেবারেই মাত লগাই উঠিল, চোৱাচোন! সেইটো কেনে এলেহুৱা বুঢ়া। সি গাধত উঠি সুখেরে যাব লাগিছে, তার সেই কোমল বয়সীয়া পুতেকটিয়ে লয় দিও তার লগত যাব পরা নাই। সি ইমান দুখ পাইছে, তেও বুঢ়াই তালৈ দৃপাতকে নকরে। আজি কালি মানুহর মনর পরা মরম-বেথা দূর হল।” হোজা বুঢ়াই এই কথা শুনি সেই কাম বেয়া যেন বুজিলে, আরু তেতিয়াই পুতেকক তার পাচফালে তুলি ললে৷ সেইদৰে গৈ হাটর ওচর পোৱাপুই হওঁতেই আন এজন পথিকে বুঢ়াক মাত লগাই বুলিলে,- “আপ! এই গাধটি তোমার নিজা নে আন মানুহর?” তাতে বুঢ়াই উত্তর করিলে, “সি মোর আপোনার বস্তু।” এই কথা শুনি বাট রাই কলে “তুমি তার ওপরত যিমান বোজা দিছা, তালৈ চালে তাক তোমার নিজা বুলিব নোৱারি; নিজা বন্ধক মানুহে ইয়াতকৈ অধিক মরম করে; তোমালোকে দুটা মানুহ তার ওপরত উঠি তাক দুখ দিয়াতকৈ দুটাই তাক কানত তুলি লৈ যোৱাই ভাল।” তাতে বুঢ়াই বোলে, “ভাল দেও! আপুনি যি বুলিছে, তাকে করিম,” এই বুলি এডাল কান-মারি আনিলে, আরু বাপেক-পুতেকে গাধটোক সাঙ্গী বান্ধি লৈ এখন দলং পালেগৈ, কিন্তু সেই কাৰ্য্যটো এনে হাস্য-জনক . আছিল যে, দলগত বহি থকা কিছুমান মানুহে একেবারেই হাতচাপরি মারি হাঁহিবলৈ, আরু বুঢ়া আরু তার পুতেকক নির্ব্বোধ, বলিয়া ইত্যাদি বুলি নিন্দিবলৈ ধরিলে; তাতে সিহঁতর হাঁহিত চক খাই উচাল মারি দিয়াত, জরী ছিগি গাথ নৈত পরিল। তেতিয়া বুঢ়াই বর লাভ আরু বেজার পালে, আরু আগলৈ সকলোকে সন্তোষ দিবর চেষ্টা নকৰিবলৈ অঙ্গীকার করি পুতেকেরে সৈতে ঘরলৈ উলটি গল ।

৪ পাঠ

দুজন বন্ধু আরু ভালুকর কথা।

সম্পদর সময়ত বন্ধু পোৱা যায়, আপদেহে বন্ধুক চিনায়।

এক দেশত দুজন বন্ধুৱে, একে লগে বাটত যাওঁতে, এটা ভালুকক দেখা পালে। তাতে এজনে ভয়ত তার সঙ্গীর কি দশা হব, তালৈ মন নকরি লর মারি গছত উঠিল, আন জনে অকলে ভালুকর হাতর পরা সারিবর উপায় নেদেখি মরা ডাও জুরি মাটিত পরিল; কারণ তার শুনা আছিল যে, ভালুকে মরা নোহোৱে৷ সি সেই দরে পরি থাকোতে, ভালুকে তার মুরর ওচরলৈ আহি, মুখ, নাক, কাগ আরু বুকু সুঙ্গি চালে; কিন্তু সি নিশ্বাস বন্ধ করি লরচর নোহোৱাকৈ পরি থকাত তাক মরা যেন বুজি গুচি গল। তেতিয়া তার সঙ্গীজনে, গছর পরা নামি আহি তাক সুধিলে, “সখি! ভালুকে তোমার কাণত মুখ দিয়া দেখিছিলোঁ, সি নো কাণে কাণে তোমাক কি কথা কলে?” তেতিয়া তার বন্ধুরেকে উত্তর করিলে, “সেইটো একো গোপনীয় কথা নহয়, সি মোক ইয়াকে মাথোন কলে বোলে, যি তার বন্ধুক আপদত এরি পলাই যায়, তুমি আগলৈ তার লগ নলবা ।” 

৫পাঠ

গরবীয়া আর বাবর থা

মিছা কোৱা অযুগুত, ধেমালিতে কোৱাও উচিত নহয়, কিয়নো মিছলীয়া মানুহে সঁচা কলেও কেৱে নপতিয়ায়।

এটা গরৰীয়া লরাই এখান গাৱঁর ওচরত গরু রাখিছিল। সি এদিন ধেমালি করি মিছাকৈয়ে “বাব আহিছে, বাঘ আহিছে” বুলি আটাহ পরাত তাক আরু গরুবোরক রক্ষা করিবর নিমিত্তে দা- যাঠী আদি লৈ কিছুমান গাৱলীয়া মানুহে খেদি গল; কিন্তু সিহঁতে বাঘ নেদেখিলে, তাতে সেই গৱৰীয়াই ইতিকিং করি সিহঁতক হঁহাত লাজ পাই ঘরলৈ উলটি গল। ইয়ার পাচতো এবার কি দুবার সি সেই দরে গাৱঁলীয়া মানুহবিলাকক লাজ দিলে। পাচে এদিন সঁচাসটিকে এটা বাঘ আহি গরুর জাকত সোমোৱাত সি আগর দরে চিঞরিবলৈ ধরিলে; কিন্তু সি মিছা কৈছে যেন ভাবি তার কথাত কোনোরে বিশ্বাস নকরিলে; তাতে বাঘে ভালেমান গরু মারি এটা লৈ হাবিলৈ গল । তেতিয়া সেই লরাই বুজিলে যে, মিছলীয়াত কেৱে বিশ্বাস নকরে।

৬ পাঠ

বামুণ আরু পিঠা-গুড়ির কথা

আপোনার উন্নতির কারণে যত্ন করা সকলোরে উচিত; কিন্তু সেইরূপে যত্ন করোঁতে যি কেতিয়াও সফল হবর সম্ভাৱনা নাই। সেই আশাত মত্ত হোৱা অযুগুত, কিয়নো তার দ্বারা একো লাভ নহৈ অনেক সময়ত লাজ পোৱা যায়, আরু হানিও হয়।

কোনো এক দেশত এজন দরিদ্র অথচ কৃপণ বামুণ আছিল। তেওঁ ভিক্ষা করি অন্য কিছুমান পিঠা-গুড়ি এটা কলহত ভরাই শোৱা চাদর উরি-পথানর ফালে বারত অঁরি থৈছিল। এছিন রাতি সেই কলহটো দেখি তেওঁ মনত ভাবিবলৈ ধরিলে, “রবা, এই কলহটো পিঠা-গুড়িয়ে পূর হৈ আছে; আকাল হলে ইয়াক বেচি এল পোণ কঢ়ি পায়। সেই কড়িরে এহাল মাইকী ছাগ কিনিম। সেই হালর পরা হুমাহর ভিতরতে এজাক ছাগলী হব। সেইবিলাক বিক্র দ্বারা দুজনী গাই কিনিবলৈ জোরা ধন পাম। সেই গাইবিলাকর গাধীর আরু বাছরুবিলাক বিকি অলপকালর মূরতে এজনী মহর গরাকী হব পারিম। সেই মহজনী জাগিলে তাইর গাধীর আরু পোৱালি বেচি যি ধন পাম তারে এজনী ঘুরী কিনিম; সেই ঘুরীর পরা বহুত ধোঁৱা হব। ধোঁয়াবিলার বিক্রয়র দ্বারা বিস্তর সোণ পাম। সেইবোরর কিছুমানেরে

অলঙ্কার গঢ়াম, উত্তম ঘর করিম, আরু দাস-দাসী কन । তেতিয়া মোর সম্পত্তি দেখি কোনো এখন উচ্চ শ্রেণীর ব্রাহ্মণে উপবাটি তেওঁর সুন্দরী কন্যাক মোলৈ দিয়া দিব। 

পাচে তেওঁর এটি পুত্র হব, তার সোমশা নাম থম। সি আঁঠু কাঢ়ি ফুরিব পরা হলে, মই এদিন এখান পুথি লৈ পঢ়িবলৈ ধরিম। তাতে সোমশাই মোক দেখি মাকর কোলার পরা মোর ওচৰলৈ আহিব, আরু মাক ভিতরলৈ উঠি যাব। তেতিয়া ম‍ই তাক নিবর নিমিত্তে, মারুক মাতিম; কিন্তু তেওঁ অন্তেষপুরত থকার কারণে মোর কথা নুশুনিব। তাতে মই উঠি গৈ মোর খঙর কিমান ভমক, তাকে দেখাবর নিমিত্তে তেওঁক এই দরে গোর মারি দিম, ” এই বুলি ভরি চলোৱা মাত্রেই তার প্রহার লাগি বামুণর সকলো আশার উরাল, পিঠা গুড়ির ভাগুটি খণ্ড খণ্ড হৈ ভাগি পরিল, আরু বপুরাক শোকর অগ্নিত পেলাই তেওঁর ধন, জন, পুত্র, ভার্য্যা, বারী, ঘর, সকলো অদৃশ্য হল।

৭ পাঠ

সাপ আরু বামুণর কথা ।

লোভর পরা পাপ, পাপর পরা মৃত্যু হয়; এতেকে অতি লোভ বর্জনীয়।

কোনো এক দেশত কৃষির দ্বারা জীবিকা করা হরিদত্ত নামেরে এজন বামুণ আছিল। তেওঁ বর খেতি করে, তথাপি তার সম্পূর্ণ ফল কেতিয়াও নেপায়; এদিন বর শ্রান্ত হৈ খেতির মাজত থকা এজোপা গছর ছাঁত শুই থাকোঁতে তেওঁর ওচরতে এটা উই-হাঁফলুত এটা বর ডাঙ্গর সাপ দেখি তেওঁ মনত ভাবিলে “অ! রবা, এরেই ক্ষেত্রর অধিপতি দেৱতা, মই কেতিয়াও এওঁর পূজা করা নাই, এই কারণে হে মোর কৃষি নিষ্ফল হয়, এতেকে আজি মই এওঁক পূজিম,” এই কথা মনতে থির করি বামুণে এটা মাটির মলাত কিছুমান এব্রা-গান্ধীর লৈ সেই হাঁফলুর গুরিলৈ গৈ উচ্চৈস্বরে বুলিলে, “হে ক্ষেত্রপাল দেৱতা! তুমি যে ইয়াত আছা, তাক মই ইমান দিনে নেজানিছিলোঁ; এই কারণে হে তোমার পূজা করিবলৈ নহল; কৃপা করি সেই দোষ ক্ষমা করা আর এই গাধীর খোৱা” এই কথা কৈ দুগ্ধর পাত্র থৈ তেওঁ ঘরলৈ গল ।

পাচ-দিনা খেতি চাবলৈ আহি ব্ৰাহ্মণে সেই চরুত এটা সোণর মোহর পালে। তাতে বহু দিনলৈকে তেওঁ সেই দরে সাপক গাখীর দি নিতৌ একোটা সোণর মোহর পাই আছিল। এদিন পুতেকক হাঁফলুত গাখীর দিবলৈ কৈ বামুণ অন্য এক গাৱলৈ গল; তাতে তেওঁর পুতেকে সেই রূপে গাধীর দি ঘরলৈ উলটি আহিল। আনেকা দিনা সি সেই ঠাইত এটা সোগর মোহর পাই ভাবিলে, “এই হাঁফটো সোগেরে পূর হৈ আছে, সাপটোক মারিব পারিলেই সমুদায় মোহর একেবারেই পাম।” এইরূপে মনতে আলচি পাচদিনা সি গান্ধীর দিবর ছলেরে গৈ সাগর মূরত টাঙ্গনেরে প্রহার করিলে; কিন্তু দৈবাৎ সেই আঘাত তার গাত নেলাগিল। তাতে ব্রাহ্মণ-পুত্রে তার অনিষ্ট চেষ্টা করা দেখি ক্রোধান্বিত হৈ সাপে তাক এনে মারাত্মকরূপে কামুরিলে যে, সি তৎক্ষণাৎ গতায়ুস হ'ল ।

পর-দিনা আকও গাখীর লৈ গৈ ব্রাহ্মণে উচ্চৈস্বরে সাপক স্তুতি করিবলৈ ধরিলে; তাতে সাপে হাঁফলুর ভিতরর পরা উত্তর করিলে, - “বাপু! তুমি কেবল ধনর লোভত ইয়ালৈ আহিছা। তোমার পুত্রই যৌৱনর মদেরে মত্ত হৈ মোর গাত প্রহার করিলে, ময়ো তাক দংশিলোঁ; এতিয়া তোমার আরু মোর মাজত প্রীতি থাকিব নোৱারে, সেই প্রহার কেনেকৈ মোর মনর পরা বিস্মৃত হব? তুমি বা তোমার পুত্রশোক কিরূপে পাহরিবা?” এই বুলি সাপে বহুমূল্য হীরা এখান দি, পুনরায় তালৈ নাহিবলৈ কৈ, বামুণক বিদায় দিলে; তাতে বামুণে পুডেকর দুষ্টুদ্ধিক নিন্দি ঘরলৈ উলটি গল। 

সাপে যে সেইরূপে কৈছিল এনে নহয়, কিন্তু কোনো জ্ঞানী মানুহে তেনে অৱস্থাত যি কথা কলেহেঁতেন, এই উপকথার দ্বারা তাকে মাথোন দেখোৱা হৈছে।

৮ পাঠ

ধৰ্ম্ম-বুদ্ধি আৰু পাপ বুদ্ধির কথা।

সম্ভ লোকে দুষ্টেরে সৈতে হাট-বাট করিলে দুষ্টই সম্ভরপরা পোরা উপকারর যে শলাগ নলয়েই, সেই উপকারর সলনি অপকার করিবলৈও যত্ন করে; কিন্তু ধৰ্ম্মপথত থাকিলে একো ভয় নাই।

কোনো এক দেশত ধৰ্ম্ম-বুদ্ধি আরু পাপ-বুদ্ধি নামেরে দুজন বন্ধু আছিল। এদিন পাপ-বুদ্ধিয়ে মনত ভাবিলে যে, “মই মূর্খ আরু দরিদ্র; এতেকে এই ধৰ্ম্ম-বুদ্ধিক লগত লৈ দেশান্তরলৈ গলে তেওঁর সহায়তার দ্বারা ধন আর্ভিব পারিম, আরু তেওঁক বঞ্চি তেওঁর ধনখিনিকো লব পারিলে মই এজন বর আঢ্যৱন্ত হয়।” ইয়াকে মনত আলচি পাচ- দিনা সি ধৰ্ম্ম-বুদ্ধিক কলে, “সখি! এতিয়া ডেকা-কালত বিদেশ নেচালে বুঢ়া হলে সন্তানাদির আগত কি কথা? এতেকে বিদেশলৈ যাওঁ আহাঁ৷” এই কথাত ধৰ্ম্ম-বুদ্ধি মান্তি হল, আরু আনন্দিত মনেরে পিতৃ-মাতৃর অনুমতি লৈ পাপ-বুদ্ধিরে সৈতে পরদেশলৈ যাত্রা করিলে। দেশান্তরত উপস্থিত হৈ ধৰ্ম্ম-বুদ্ধিয়ে নিজের সংস্বভাব আরু সুগুণর নিমিত্তে সকলোরেপরা আদর আর বহু ধন পালে; আরু তেওঁর সাহায্যর দ্বারা পাপ বুদ্ধিয়েও বিস্তর ধন আর্জিলে। এইরূপে কিছুকাল বিদেশত থাকি দুয়ো অতিশয় হৃষ্ট চিত্তেরে ঘরলৈ উলটি আহিল ।

ঘরর ওচর পাই পাপ-বুদ্ধিয়ে ধৰ্ম্ম-বুদ্ধিক কলে, “বন্ধু! এই সকলোবিলাক ধন একেবারেই ঘরলৈ নিয়া উচিত নহয়, কিয়নো আমার মিতির কুটুমে খুজিলে আমি সিবিলাকক পরাংমুখ করিব নোৱারিম, এতেকে সরহ ভাগ এই অরণ্যত পুতি থৈ কিছুমান লৈ ঘৰলৈ যাওঁহঁক, আকও ধনর প্রয়োজন হ'লে পুনরায় এই ঠাইলৈ আহিম।” এই কথা শুনি অকপটচিত্ত ধৰ্ম্ম-বুদ্ধিয়ে কলে, “ভাল, বন্ধু! তুমি যেনে উচিত বুজা, তেনে করা।” পাচে সেইরূপে ধন পুর্তিথৈ দুয়ো ঘরলৈ গল।

এদিন রাতি পাপ-বুদ্ধিয়ে, সেই হাবিলৈ গৈ সমুদায় ধন উলিয়াই ললে, আরু গাঁতটো পুরাই ঘরলৈ উলটি আহিল। ইয়ার কিছুদিনর পাচত পাপ- -বুদ্ধিয়ে ধৰ্ম্ম- বুদ্ধিক কলে, “সখি! আমার পোষা অনেক, ধনর অভাৱত বয় দুখ হৈছে, আহা, সেই ঠাইরপরা কিছু ধন আনোহঁক গৈ৷” তাতে ধৰ্ম্ম বুদ্ধিয়ে বুলিলে ভাল, তাকে করা যাওক।

পাচে সিবিলাকে সেই ঠাই পাই মাটি খানিলত ধনর শুদা ভাণ্ডটো মাথোন ওলাল! তেতিয়া পাপ বুদ্ধিয়ে কপালত ভুকুৱাই দুঃখিত ভাৱেৱে ধৰ্ম্ম-বুদ্ধিক সম্বোধন করি কলে,- “বন্ধু! আনে ধন নিয়া নাই, তুমিয়েই হে এইটো কাম করিলাঁ। ইয়াত খন থোৱার কথা আন কোনোৱে নেজানে, আরু চোৱাচোন গাতটোও পূরাই খোৱা হৈছে, আন চোরে তেনে কিয় করিব? এতেকে তার অর্ধেক মোক দিয়া, নাইবা মই রজার আগত গোচর করিম।” তাতে ধৰ্ম্ম-বুদ্ধিয়ে খঙ্গেরে মাত লগালে, “দুরাত্মা এনে কথা নকবি, ধৰ্ম্ম-বুদ্ধিয়ে চুর নকরে।” এইরূপে দন্দ লাগিলত দুয়ো বিচারালয়লৈ গৈ এজনে আনজনর ওপরত দোষারোপ করিবলৈ ধরিলে। তাতে বিচারকসকলে শপতর দ্বারা বিবাদ মিটাবর প্রস্তাব করিলে, কিন্তু পাপ-বুদ্ধিয়ে সেই কথাত মান্তি নহৈ কলে, “এই কথা অন্যায়, মই বনদেৱতাক সাক্ষা মানিছোঁ, তেওঁ আমার দুজনর ভিতরর বেইয়ে ধন নিছে বুলি কর, সেইয়ে চোর।” বিচারকবিলাকে সেই কথা যুগুত যেন যুক্তি কলে বোলে, “কালিলৈ রাতি পুৱাই তোমালোকে সৈতে আমি সেই বনলৈ যাম।” 

পাচে পাপ-বুদ্ধিয়ে, ঘরলৈ গৈ, পিতাকক কলে, “পিতৃ! মই ধৰ্ম্ম-বুদ্ধির বহুত ধন চুরি করি আনিলোঁ। এতিয়া সেই ধন তোমার থাকার দ্বারা হে জীণ যাব, নতুবা আমি ধন, প্রাণ, দুইকো বিসর্জ্জন দিব লাগিব।” ভাতে তেওঁর বাপেকে উত্তর করিলে, - “বাপা! মই যি করিলে, তোমার মন থির হয়, তাক শীঘ্ৰে কোৱা৷” পাপ-বুদ্ধিয়ে উত্তর দি বুলিলে,- “পিতৃ! সৌ হাবির ওচরত থকা এজোপা শমীধ গছত এটা বর গভীর কোটর আছে। তুমি এতিয়াই তাত সোমোৱা গৈ। কালিলৈ রাতি পুৱা যেতিয়া ম‍ই ধরম চিয়াই সঁচা কথা কবলৈ বনদেৱতাক প্রার্থনা করিম, তেতিয়া ‘ধর্ম্ম-বুদ্ধি চোর’ এই উত্তর দিবা।” বাপেকে সেই রূপে করিবলৈ গাত লোৱাত, পাপ-বুদ্ধিয়ে পাচদিনা প্রত্যুষে স্নান করি ধর্ম্মা-বুদ্ধি আরু বিচারকবিলাকেরে সৈতে সেই গছর ওচরলৈ গৈ উচ্চৈস্বরে বুলিলে, - “হে ভগৱতী বনদেৱী! আমার দুজনর ভিতরত কোন জন চোর, তাক তুমি কোৱা।” তাতে গছর খোরোপরপরা বাপেকে উত্তর করিলে, - “তোমালোকে সকলোৱে শুনিবা, ধৰ্ম্ম-বুদ্ধিয়ে সেই ধন চুর করিছে।” এই কথা শুনি বিচারক সকল বিচূৰ্ত্তি হল। তেতিয়া ধৰ্ম্ম-বুদ্ধিয়ে কিছুমান শুকান খরি আর বন গোটাই গছর খোরোতে জুই লগাই দিলে৷ তাতে আধা-পোরা আরু কণা হৈ পাপ-বুদ্ধির বাপেক শমীধর কোটররপরা ওলাই বিলাপ করিবলৈ ধরিলে। তেওঁর তেনে অৱস্থা দেখি সকলোৱে সুধিলে, “ই কি?” তেতিয়া সি সেইটো পাপ-বুদ্ধির কুমন্ত্রণার ফল বুলি কৈ প্রাণ এরিলে।

তাতে সেই বিচারকসকলে ধৰ্ম্ম-বুদ্ধিক বহুত প্রশংসা, আরু পাপ-বুদ্ধিক শমীধ গছর ডালত ওলমাই প্রাণদণ্ড করিলে, আরু কলে যে মানুহে কোনো কার্য্যর উপায় চিন্তোতে সেই উপায়র দ্বারা কোনো অমঙ্গলর সম্ভাৱনা আছে নে নাই, তাকো গমি চাব লাগে। এই পাপ-বুদ্ধিয়ে অর্থোপার্জ্জনের উপায় চিন্তিলে, কিন্তু তার দ্বারা যে অনিষ্ট হব পারে, তাঁলৈ মন নকরিলে, এই কারণে সি তার ফল পালে।

৯ পাঠ

এজন পিতা আরু তেওঁর পুতেকবিলাকর কথা

একতাই মানুহর শক্তি ; অনেক মানুহে মিলি যি কাম করিব পারে, এজনে কেতিয়াও নোৱারে৷ বহুত তৃণ গোটাই বঁটা এডাল ফয়েরে দঁতাল হাতীকো বন্ধা যায় ।

এজন সুশীল আরু পরিশ্রমী মানুহে তেওঁর পুতেকবিলাকর মাজত কন্দল হোৱা দেখি সিবিলাকক মাতি আনিলে, আরু একাটি খাগরি সিবিলাকর হাতত দি তাক ভাজিবলৈ কলে। কিন্তু সিবিলাকে গাই-পতি পারে মানে যত্ন করিও সেই আটিটোক মোকটাবই নোৱাৰিলে৷ তাতে বুঢ়াই কলে, -“বারু আটিটো এতিয়া মেলা, আরু খাগরিবোর এডাল এডাল করি ভাঙ্গিব পারা নে চোৱাহঁকচোন।” তেতিয়া সিবিলাকে সেইরূপ করি আটাইবিলাক খাগরি অনায়াসে ভাঙ্গি খণ্ড খণ্ড করিলে। ইয়াকে দেখি সিবিলাকর শিক্ষাদাতা বাপেকে কলে, “এইয়ে তোমালোকর অবস্থার দৃষ্টান্ত। যদি মিলেরে একে লগে থাকা, তেন্তে একো ভয় নাই; কিন্তু দন্দ করি বেলেগ হলেই নষ্ট হবাহঁক।”

১০ পাঠ

এজন মহ গিরীর কথা

যি মানুহে কোনো অনিশ্চিত বস্তুর আশারে আপোনার হাতত থকা বস্তুক পরিত্যাগ করে, সি কেবল সেই হাতর বস্তুকে মাথোন হেরুৱায় এনে নহয়; আশা করা বস্তুকো নেপাই দুখত পরে।

এটা মানুহর নিতৌ পাঁচ সের মান গাখীর দিয়া এজনী ডিরা মহ আছিল, আর সেই গাধীরর দ্বারা তাইর গরাকীর কোনো প্রকারে জীৱিকা চলিছিল। কিছু কালর পাচত সি ভাবিলে, যে মহজনী খুঁটিত বান্ধি নথৈ হাবিত মেলি দিলে তাই মুকলিমূরে, আপোন ইচ্ছারে, ভাল ঘাঁহ খাবলৈ পাই আরু অধিক গাধীর দিব, আরু বনরীয়া মতার লগ পোৱাত জগিবও পারিব; তাতে তার লাভর পরিমাণ বেচি হৈ সি চহকী হব। এইরূপে চিন্তা করি সি সেই মহ হাবিলৈ এরি দিলে; কিন্তু তাই বনরীয়া মহর জাকত সোমাই ঘরলৈ উলটি নাহিল; তাতে তার আগর সম্পত্তিও হেরাল ৷

১১ পাঠ

দুজন উকীলর কথা

“লোকলৈ বুলি হুল পাতি আপুনি মরে ফুটি।” যি লোকে বুদ্ধি আর চতুরতার দ্বারা আনক ছলিবলৈ উপায় করে, সি কেতিয়াবা আপোনার ফান্দতে আপুনি পরে।”

এজন বর বুধিয়ক আরু তর্ক-শাস্ত্ৰত পাৰ্গত ডেকাই তেওঁক গোচরর উত্তর প্রত্যুত্তর শিকাবর নিমিত্তে এজন প্রাচীন উকীলক প্রার্থনা করি তেওঁক ছলিবর মনেরে এইরূপে কথা বান্ধিলে, যে শিক্ষা সমাপ্তির পাচত গোচরত জিকিলে তেওঁ সেই শিক্ষকক দহ হেজার টকা দিব।

পাচে উত্তর-প্রত্যুত্তরত পাৰ্গত হৈ আরু অনেক গোচরত জিকিও অঙ্গীকৃত পুরস্কার নিদিয়াত শিক্ষকে গোচর করিলে; তাতে সেই ডেকা উকীল উপস্থিত হৈ এই উত্তর দিলে যে, তেওঁ সেইরূপে নিয়ম বান্ধি বিদ্যা শিকা সঁচা; কিন্তু সেই নিয়ম মতে কোনো প্রকারেই গোচরত টকার বাবে দায়ী নহয়। কিয়নো বাদী যদি গোচরত জিকে, তেনে তেওঁ হারিব; কিন্তু পূর্ব্বে তেওঁ জিকিলেহে ধন দিবর প্রতিজ্ঞা করিছিল; এতেকে গুচরীয়াই তেওঁরপরা একো নেপায়; আরু যদি তেওঁহে জিকে, তেনেহলে গুচরীয়া হারিব, সুতরাং গোচরর টকা পাবর তেওঁর একো অধিকারেই নাই; কারণ জিকা পক্ষরপরা হরা পক্ষে ধন পোৱাটো প্ৰচলিত বিধি আরু রীতির বিরুদ্ধ।

গুচরীয়াই প্রত্যুত্তর করিলে, যে যদি তেওঁ গোচরত জিকে তেন্তে পদকীয়া হারিব; তেতিয়া তেওঁ অৱশ্যে সেই টকা পাব; কিয়নো ব্যৱস্থা-শাস্ত্রর বিধান অনুসারে হারোতার পরা গোচরর ধন উলিয়াই জিকোতাক দিবর নিমিত্তে বিচারক বাধা, তেওঁ তার বিপরীত আচরণ করিব নোৱারে; আর যদি গোচরত তেওঁর পরাজয় হয়, তেন্তে পদকীয়ার জয় হব, তেতিয়া পদকীয়াই নিজ অঙ্গীকার অনুসরিয়েই গোচরর ধন দিব লগীয়া হব; এতেকে দুইও প্রকারে তেওঁ গোচরর ধন পাবর অধিকারী।

বিচারক দুইও ফালর উত্তর-প্রত্যুত্তর গাম চাই গুচরীয়ার কথা সঙ্গত বুজিলে আৰু বাঢ়িয়ে সৈতে গোচররা ধন তেওঁ পাবর সিদ্ধান্ত করিলে। তাতে প্রতিবাদীয়ে বর অসন্তোষেরে বাদীক সেই ধন দি গা সারিল। 

২ আধ্যা ১ পাঠ

ঈশ্বর, পিতৃ-মাতৃ, শিক্ষক, দেশর অধিকার আরু বুঢ়া লোক, এইসকল সন্মানর পাত্র।

যি আদি কারণরপরা এই পরিদৃশ্যমান জগতর উৎপত্তি হৈহে, সেই কারণর নামেই ঈশ্বর। তেওঁ সকলোরে আদি, কিন্তু তেওঁর আদি নাই; সকলোরে অস্ত্র আছে, তেওঁর অন্ত নাই। তেওঁ দেবতারো দেবতা, বিধাতারো বিধাতা, রজারো রজা আরু সকলোরে সৃষ্টি আরু পালন-কৰ্ত্তা; এতেকে তেওঁক শ্রদ্ধা আরু ভত্তি করা সকলোরে উচিত। পৃথিবীত মানুহর যত মান্য লোক আছে, তেওঁ সেই সকলোবিলাককৈ অধিক মান্য। সকলো দেশর, সকলো জাতির, সকলো ধৰ্ম্মর জ্ঞানী লোকবিলাকে তেওঁত বিশ্বাস আরু ভক্তি করে, আরু যার তেওঁত শ্রদ্ধা-ভক্তি নাই, তাক নাস্তিক বুলি ঘিণায়; এতেকে তোমার সমুদায় মন, বুদ্ধি আরু শক্তিরে তেওঁত শ্রদ্ধা আরু ভক্তি করিবা ।

ঈশ্বরর পাচতে পিতৃ-মাতৃ আমার মাননীয়; তেওঁবিলাকেই আমাক জন্ম দিছে, আরু তেওঁলোকরপরাই আমি এই বিচিত্র সংসার দেখিবলৈ পাইছোহঁক। আমি যেতিয়া কেঁচুৱা আছিলোঁ, আমার উঠি লরি ফুরিবর শক্তি নাছিল, তেতিয়া তেওঁবিলাকে কত দুখ সহি, কোলাত লৈ আমাক তুলিছিল; আমি নেখালে তেওঁবিলাকর আহারত রুচি নহৈছিল; আমি গাত দুখ পালে বা নরিয়া পরিলে শোকত বিহবল হৈ তেওঁবিলাকে আমার আরোগ্যর নিমিত্তে যত্ন করিছিল; আন কি আমার কুশলর কারণে প্রাণকো উচগিছিল। আমি অলপ ডাঙ্গর হলত সিবিলাকে আমাক জ্ঞান- বিদ্যা শিকাই ভাল লোক করিবর নিমিত্তে পারে মানে যত্ন করিছিল, আরু এতিয়াও আমি ধনী, মানী, যশস্বী হলে সিবিলাকর আনন্দর সীমা নেথাকে; কিন্তু আমার দুর্যশ বা দুর্ভাগ্যর কথা শুনিলে মুখ মলিন, আরু চকু লোতকেরে পূর হয়। সেই পিতৃ-মাতৃকৈ মনুষ্যর ভিতরত আন কোনো আমার অধিক মান্য নহয়। এতেকে আমি সদায় তেওঁলোকর আজ্ঞা মানিব আরু সিবিলাকক সম্মান করিব পাওঁহঁক। আরু তেওঁবিলাকর বুঢ়া কালত আমার শক্তি-অনুসারে শুশ্রুষা করা আরু পোহ-পাল দি তেওঁবিলাকক সুখেরে রখাও আমার কর্তব্য।

কণা মানুহক যি জনে চকু দিয়ে, তেওঁ যে কণার পরম উপকারী আরু মান্য, ভাত একো সংশয় নাই। সেইরূপে শিক্ষকেও ছাতরক চকু দিয়ে। হাতরে চকু থাকোঁতেও যি বন্ধ নেদেখি আরু যি কথা নুবুদ্ধি কণার নিচিনা হৈ থাকে, অধ্যাপকর অনুগ্রহত চকু মুকলি হৈ তাক দেখিব আরু বুজিব, পরা হয়। এনে অধ্যাপকর প্রতি যি সম্মান নকরে, তার সমান অশলাগী মানুহ নাই। আমার শাস্ত্রত লিখা আছে, যে অধ্যাপকে যদি এটা মাথোন আখর ছাতরক শিকায়, তেওঁ পৃথিবীত এনে বস্তু নাই, যাক দি ছাতরে সেই শিক্ষকর ধার শুজিব পারে। এতেকে তুমি তোমার শিক্ষকর প্রতি মান- সৎকার করিবা, আরু তেওঁর বশ হবা।

দেশর অধিকারসকল দুষ্টর দমন, আরু শিষ্টর পালন করোতা। যি দেশর অধিকার নাই, শাসনকর্তা নাই, সেই দেশ অরাজক, আরু ধুমুহা-বতাহত গুরিয়াল নথকা নাএর দরে অস্থির। তাত সকলো মানুহে 'স্বপ্রধান হৈ আপোনার ইচ্ছার দরে আচরণ করে। এই কারণ নিজ বলেরে নোবারিলে মানুহর ধন-প্রাণর রক্ষাই টান হয়, আরু কারো সুখ- শান্তিও নেথাকে। কিন্তু দেশর অধিকারে দুষ্টক দমি সম্ভক পালন করা হেতু কেও কারো প্রতি অন্যায় করিব নোৱারে, আরু দেশত শান্তি প্রবল হয়। এতেকে যিসকলর ভাত চোর, ডকাইত আৰু আন দুষ্ট মানুহবিলাক শঙ্কিত হৈ থকার কারণে আমার ধন, প্রাণ, আরু মান রক্ষা পরিছে, আরু আমি নির্ভয় মনেরে আছোঁহঁক সেই শাসন-কৰ্ত্তাসকল আমার অবশ্যে মানা, আমি তেওঁবিলাকর শলাগ লব, আরু সম্মান করিব লাগে।

যি লোক তোমাকে কোনো কথাত শ্রেষ্ঠ, তেৱেঁই তোমার মানা; বুঢ়া মানুহবিলাক তোমাকৈ বয়সে শ্রেষ্ঠ, তেওঁবিলাকর কোনো জন তোমার জ্যেষ্ঠ ভ্রাতৃর, কোনো জন মাতৃর, কোনোজন বা পিতৃর বয়সীয়া, আর কোনো জন তোমাকৈ বহুদর্শী। এতেকে তুমি তেওঁবিলাকর প্রতি সমুচিত সম্মান করিব লাগে, আরু সিবিলাক নিঃকিন হলেও, উপালস্তর যোগ্য নহয় ।

২ পাঠ

নিৰ্ম্মলতা।

যি নিৰ্ম্মল, সেইয়ে শুদ্ধ । নিৰ্ম্মল শব্দে মল-নথকা বুজায়, 'শুদ্ধ' শব্দর অর্থ বেয়া বন্ধুরে মিছলি নোহোৱা; এতেকে ইয়ারো সেইয়ে অর্থ, এই কারণে শুদ্ধ বা শুচি হব লাগিলে নিৰ্ম্মল হব লাগে। যি বস্তু মলিন, সি অগুটি; আমি যদি সাত ভার গঙ্গার জল মূরত ঢালি কাকো নোহোৱাকৈ ঘরর ভিতরত সোমাই থাকো, আমার গা মলিন হলে, তেও আমি অশুচি। আরু অঞ্চল গাটো নির্মূল হলেই সকলো হল, এনে নহয়; আমার কাপোর আসন, লোটা-বাটি, শয্যা আর আমি ব্যবহার করা আন সকলো বস্তু নিকা হব লাগে; কিয়নো মলিন বস্তু মাত্রেই অপবিত্র। আমার ঘর-চোতাল ছাই, জাবর আরু গোবরেরে পূর হলে আনবিলাক বস্তু নিৰ্ম্মল আর পরিষ্কৃত হলেও কোনো ফল নহয়। এতেকে আমার গা আর কাপোর আদির দরে চোঁতাল ঘরকো নিকাকৈ রাখিব লাগে। নির্মূল হলে পবিত্র হোৱা যায়, অঞ্চল সেয়ে নহয়; নিৰ্ম্মলতারপরা আমার মন প্রফুল্ল হয়, আরু গা ভাল থাকে। আমার গা, কাপোর ঘর-চোতাল আমি মলিন হলে সেই বিলাকরপরা দুর্গন্ধ ওলাই মন সঙ্কুচিত হয়, আরু গাতো রোগ জন্মে। মনেই রোগর আকর। আমার গার ভিতররপরা নাক, মুখ, কাণ আরু নোমর গুরিয়ে দি প্রতি উশাহতে কিছুমান দূষিত বস্তু অর্থাৎ যদি ওলাব লাগিছে, আরু বাহিরর ধূলি, মাটি পরিও গাত মলি বন্ধ যায়; এতেকে নিতৌ অতি কমেও এবার মুখ-হাত আদি শরীরর সকলো ভাগ ধুই পরিষ্কার করিব লাগে। কিন্তু গা ধোৱার পাচত মলিন কাপোর পিন্ধিব, বা জেগেলা ঠাইত থাকিব লাগিলে, গা ধুই নিকা হোৱার একো সকাম নাই। এতেকে সেইবিলাকো যেন মলি নথকা হয়, তালৈ যতন করিব লাগে। সেয়ে হলেই মন, গা দুয়ো ভাল থাকে। মলিন মানুহ সমাজের অযোগ্য আরু তেওঁক সকলোৱে বিপায়। এতেকে কোনো এজন জ্ঞানী লোকে কৈছে, “নিৰ্ম্মলতাই ঈশ্বর-পরায়ণতা।” 

৩ পাঠ

মিঠা মাত আর সময় ব্যবহার

সকলোকে মিঠা মুখেরে মাতিব লাগে। কর্কশ মাত কেৱে ভাল নেপায়; মিঠা কথাই হলে সকলোকে বশ করে। আমার শ্রেষ্ঠ কি সমনীয়া মানুহর কথাকে নকওঁ, আমাকৈ নীহ মানুহকো সাদরেরে কথা কোৱাত একো হানি নহয়, বরং তার বাবে আমি প্রশংসা হে পাওঁহঁক। কিন্তু বর ডাঙ্গর লোকরো আনক কটুকথা কোৱা অভ্যাস হলে তেওঁ আটাইরে অপ্রিয় হয়। সকলো মানুহ একে জাতির জীব্র, কেৱল কোনো বিশেষ কারণর নিমিত্তে অবস্থার হীন-ডেঢ়ি হয়, এই মাত্র প্রভেদ; এতেকে যি যেনে অবস্থার মানুহ, তেওঁক তেনে অৱস্থার উপযুক্ত সম্বোধন করি মতাটো, ভদ্রতা আরু সুশিক্ষার চিন; কিন্তু ছটা মাতে, যার প্রতি সেই মাত প্রয়োগ করা যায়, সেই মাতে তেওঁর অসন্তোষ জন্মাইয়ে নেথাকে, যি সেই মাতর ব্যবহার করে, তারো নীচতা আরু শিক্ষার অভাৱ দেখায়। লোকে আমাক টেঙ্গা কথা কলে আমি ভাল পাওঁ নে? তেন্তে লোকে নো তেনে মাত কিয় ভাল পাব? এতেকে সকলোকে মিঠা মুখেরে মতা উচিত।

লোকর দুখ দেখি মন কোমল হোৱার নাম দয়া। এই দয়া মানুহর মনর এটি কোমল মধুর ভাব। সি মানুহক দেবতার তুল্য করে, আরু তার অভাৱত মানুহ পিশাচর সদৃশ হয়। যার দয়া নাই, তার মন শিল বা কাঠর দরে টান, আরু যার হৃদয় কাঠ সি ‘মানুহ” এই নামরে অযোগ্য। দয়াই তাক পাওঁতা আরু দিওঁতা দুইকো ধন্য করে, কিন্তু তার বিপরীত নিষ্ঠুরতাই তাক পাওঁতাক ক্লেশ দিয়ে, আরু দিওঁতাকো সকলোরে গরিহণার পাত্র করে। দয়ালু লোক সকলো বন্ধু, নিষ্ঠুর মানুহক তার পুত্র ভার্য্যাইও ভাল নেপায়। যি আনর প্রতি দয়া করে, সি দয়া পায়, কিন্তু নিষ্ঠুর মানুহ টানত পরিলে তাক পুতৌ করোঁতা কেও নাই। এতেকে সকলোরে প্রতি সদয় ব্যবহার করা উচিত। লোকে তোমার প্রতি যেনে ব্যবহার করিলে তুমি ভাল পোৱা, তুমিও লোকর প্রতি তেনে ব্যবহার করিব লাগে; ঘাইকৈ কণা, খোরা অসহায় আরু আতুর এনেবিলাক মানুহর প্রতি দয়া করা, আরু সাধ্য অনুসরি সিহঁতর সহায় হোৱা সকলোৱে উচিত। তেনে কোনো অৱস্থাত পরিলে তুমি লোকর পরা সহায়তা নিবিচারিবানে? তেন্তে এতিয়া তুমি তেনেবিলাক মানুহর প্রতি মন কোমল করা, আরু সিহঁতর দুখ উপশম করিবর নিমিত্তে দয়া মোনার মূর মেলা। তোমার পরিয়াল আরু আশ্রিত লোকর প্রতিও সদয় হোৱা আৰু সিবিলাকক পোহপাল দি সুখেরে রাখা উচিত; কিয়নো সিবিলাকর তোমাতে সর্ব্ব ভারসা, তুমি সিবিলাকক পুতৌ নকরিলে কোনে করিব? এতেকে সিবিলাকর প্রতিও সদয় হবা।

মানুহর কথাকে নকওঁ, ইতর জন্তুর প্রতিও সদয় ব্যবহার করিব লাগে। মানুহর দরে সিহঁতরো সুখ-দুখ বুজিবর শক্তি আছে, আরু সিহঁতে সেই সুখ-দুখ প্রকাশ করিবও পারে। লরাই চরাইর ঠেঙ্গত জরী লগাই টানিলে সি যে চেঁ- চেঁ করি আটাহ পারে, তার দ্বারা সি কি বুজায়? সি যে লরার সেই কার্য্যর দ্বারা দুখ পাইছে, তাকে মাথোন কৈ তাক এরি দিবলৈ কাকৃতি করে। তেনে অৱস্থাত পরিলে লরা বা ডাঙ্গর মানুহেও কাকৃতি করে, কিন্তু সি মানুহর দরে স্পষ্ট মাতেরে সেই কথা ব্যক্ত করিব নোৱারে, এই মাত্র প্রভেদ। সেই দরেই আন কোনো জন্তুকো আমি দুখ দিলে বা সি আহার নেপালে নিজ মাতেরে তার দুখ আমাক জনায়, তেতিয়া আমি তার প্রতি আওকাণ নকরি তার দুখ গুচাব, বা তাক আহার দিব লাগে; কিয়নো আমি তাকে জ্ঞানী, আরু সি আমার অধীন; এতেকে আমি তার মুখ বুজি মল্লা নকরিলে তার উপায় নাই। তার যে মানুহর সমান জ্ঞান আর স্পষ্ট মাতেরে নিজ-দুখ জনাবর, শক্তি নাই, এই বাবেই আমি আরু আধিকরূপে তার প্রতি সদয় হোৱা উচিত, কিয়নো তেনে শক্তি থকা হলে সি আমার সমান হলহেঁতেন, সেই শক্তি নথকা হেতু সি আমাতকৈ নিকৃষ্ট, আরু যি আমাতকৈ নিকৃষ্ট, সি আমার সমনীয়াকৈ অধিক দয়ার পাত্র। এতেকে তুমি কোনো জড়র প্রতি নিষ্ঠুর আচরণ নকরিবা, কিন্তু সকলোরে দুখত পুতৌ করিবা ।

৪ পাঠ

পরিশ্রমর সুগুণ

মানুহে চরাই পহু আদি সামান্য জর দরে অনায়াসে আহার নেপায়, আরু তেওঁর গার আচ্ছাদনো স্বভাৱ- জাত নহয়; এতেকে জীৱন রাখিবর কারণে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় অন্ন, বস্ত্র দুইকো পরিশ্রমের দ্বারা উৎপন্ন করিব লাগে। এই কথাত ইতর প্রাণীকৈ মানুহর অবস্থা নিকৃষ্ট। কিন্তু মানুহে অভ্যাস আরু যত্নর দ্বারা বৰ্দ্ধিত হোৱা যি বুদ্ধি পাইছে, তার দ্বারায় তেওঁর সকলো অভাব দূর হয়। অন্ন-বস্ত্রাদি আবশ্যকীয় বস্তুর উপার্জনের নিমিত্তে যত্ন করোতেই বুদ্ধি পরিচালিত আরু তীক্ষ্ণ হৈ মানুহ সকলো জন্তুতকৈ শ্ৰেষ্ঠ হৈছে, আৰু ইন্দ্রিয়বিলাকক বশ করি সিহঁতর দ্বারা আপোনার কাম করাই লৈছে৷ মানুহর লাগতিয়াল বস্তুবিলাক পরিশ্রমর দ্বারা উৎপন্ন করিব লগীয়া নহৈ অন্যান্যজন্তুর দরে অনায়াসে পাব পরা হোৱা হলে তেওঁর বুদ্ধি ইমান প্রখর নহলহেঁতেন; এতেকে পরিশ্রমেই মানুহক ইতর জন্তুতকৈ শ্রেষ্ঠ করিছে। এনে পরিশ্রমক দুঃখদায়ক বা ঘৃণার বিষয় বুলি ভবা বর ভ্রমর কথা। যি পরিশ্রমর দ্বারা আমার জীবনর উপায় ভাত- সেই কাপোর অর্জ্জা যায়, আরু যার অভাৱত আমি মনুষ্য হৈ থাকিব- আন কি?- জীৱনকে রাখিব নোৱারোহঁক, সেই পরিশ্রমলৈ ঘিণ করাকৈ, আরু বিবোর মানুহে আমার প্রাণ রক্ষার নিমিত্তে অন্ন-বস্ত্র আজিবলৈ পরিশ্রম করে, বিলাকক তুচ্ছ ভবাকৈ আরু ডাঙ্গর শ্রম কি আছে?

স্বরূপাৰ্থত গোটেই এলেহুৱা, অকামিলা আর অসাঠন কিছুমান মানুহত বাজে প্রায় সকলোৱে কোনো এক প্রকারর পরিশ্রম করে। খেতিয়কে খেতি করি সকলোকে আহার যোগাইছে, তাঁতীয়ে কাপোর বৈ মানুহর শরীর ঢাকিছে, আন শিল্পকারকে আমার প্রয়োজনীয় নানা বিধর শিল্পকৰ্ম্ম করি আমার অভার গুচাইছে, আরু সুখ বঢ়াইছে; গ্রহৰ্ত্তাই আপোনার মস্তিষ্ক ঘাঁটি অনেক প্রকারর জ্ঞানর বা আমোদর পুথি লিখি আমার জ্ঞান বর্জিত করিছে, আরু আজরীয়া সময়ত আমাক আনন্দ দিছে; রজাই আরু তেওঁর বিষয়াবিলাকে দুষ্টর দমন, শিষ্টর পালন করি রাজ্য সুখিল কৈ রাখিছে। এই বিলাকর ভিতরত এজনে পরিশ্রম করিবলৈ হেলা করা হলেও পৃথিবীর এনে উন্নত অবস্থা হওক হারি, মানুহর মহা কষ্ট হলহেঁতেন। কিন্তু যি পরিশ্রমের দ্বারা জীবনর উপায় অন্ন-বস্ত্র উৎপন্ন হয়, সি সকলোকে শ্রেষ্ঠ আর আবশ্যকীয়; আরু যি লোকে সেই দুই বন্ধু উৎপন্ন করিবলৈ পরিশ্রম করে, তেওঁ সমাজর এর উপকারী আরু প্রয়োজনীয় । এতেকে নাঙ্গলর খুঁটিত ধরি যি খেতি করে, তেওঁ লাখ পতি বর লোককে অধিক আদরর যোগ্য, আরু সকলোৱে কৃতজ্ঞতার পাত্র। পরিশ্রমরপরা আমাক লগা বস্তুবিলাক উৎপন্ন হয়, অঞ্চল সেয়ে নহয়, তার দ্বারা শরীর সঞ্চালিত হৈ দৃঢ় আৰু বলিষ্ঠ হয়, মনো প্রফুল্ল থাকে। ঘরর ভিতরত বর গাঁরুত আউজি বহি থকা বর লোকা গাটোৱেই মহা ভার, আর তেনে লোকে দুটামান খোজ কাঢ়িলেই খামি, ফোঁপাই বিতত হয়, আরু সদায় গা বেয়া বুলি কয়, কিন্তু হাল-কোর বাই ফুরা চহার গা আর্টিল, লঘু আরু নিরোগী। এই কারণে অন্ন-বস্ত্রর উপার্জ্জন করিবর নিমিত্তে পরিশ্রম করা, আন কি? নাঙ্গলর খুঁটিত ধরাও একো লাভর বা নিন্দার কথা নহয়, বরং স্বাধীনতাক জলাঞ্জলি দি লোকর চাকর হৈ জীৱিকা করাতকৈ এশ গুণে উত্তম আরু প্রশংসনীয়।

৫ পাঠ

কৃষি, বাণিজ্য এবং অন্যান্য ব্যৱসায়।

মানুহর জীবন রাখিবর উপায় আহার। খেতির দ্বারা সেই আহার উৎপন্ন হয়। শরীর রক্ষার নিমিত্তে আহার যেনে, কাপোরো তেনে প্রয়োজনীয়। সেই কাপোর ঘাইকৈ কপাহর পরা হয়, কপাহো খেতির বস্তু। যি খেতির পরা মানুহর অন্ন-বস্ত্রের উৎপত্তি হয়, আরু যার অভাবত এই দুই ঘাই বস্তুর অভাৱ হৈ মানুহর প্রাণরক্ষা টান হয়, সি নো কিমান প্ৰধান কাৰ্য্য, তাক কৈ ওর পেলাব নোৱারি। আমি দেখিছোঁ, কোনো ঠাইত দৈবাৎ একে লালীয়ে দুবছর খেতি নহলে তাত আকাল হৈ হেজার-হেজার প্রাণী যমর ঘরলৈ যায়; এতেকে খেতিয়েই মানুহর জীবন রক্ষার খাই উপায়। পাতর সমান সোগ থাকিলেও অম্ল নহলে মানুহর প্রাণ নরয়। যদি পৃথিবীর সকলো মানুহে খেতি করিবলৈ এরে, তেন্তে অন্নর অভাৱত আজিয়েই পৃথিবী জনশূন্য হব। খেতিয়ে মানুহর প্রাণ রাখে, অকল সেয়ে নহয়, মানুহক সভাও করে। যেতিয়া মানুহে খেতি করিব নেজানিছিল, তেতিয়া কেঁচা মঙ্গহু আৰু আপুনি হোৱা ফল-মূল মাথোন খাই আরু পহুর ছালেরে গা ঢাকি বনরীয়া জন্তুর দরে ছাবিত বাস করিছিল। পাচত খেতি করি অন্ন উপার্জ্জন করিবলৈ শিকিবরপরা হে সভ্যতাই মানুহর লগ ললে। আরু খেতির উন্নতির লগে লগে সভ্যতাও বাঢ়ি আছিল; এতেকে খেতিয়েই মানুহর ঘাই কাৰ্য্য। সেই খেতিলৈ আওহেলা বা তাক হীন কাম বুলি খিল করা মূর্খতার চিন। আমার দেশর মানুহর কেনে দুষ্টুদ্ধি! যি লোকে চাকরি নকরাকে গাৱঁত খেতি করি খাই থাকে, অনেক মানুহে তেওঁক কাছারীত এটা ক্ষুদ্র কাম- করা মানুহর সমানো আদর নকরে। এতেকে সকলোৱেই খেতিক বিণ করি টকাচারেক রূপর কারণে আপোনার স্বাধীনতাকে বিকিবলৈ ওলায়, আরু তাকে করিব পারিলে আপোনাক কৃতকার্য্য মানে। যেতিয়ালৈকে আমার দেশর মানুহর এই ভ্রম নুগুচে, তেতিয়ালৈকে এই দেশর কুশল নহয় ।

ওপরত দেখোৱা গৈছে যে, কৃষির দ্বারা মানুহর জীবন রাখিবর উপায় অম্ল আর বস্তুর উৎপত্তি হয়, কিন্তু বাণিজ্য নহলে এজনে উৎপন্ন করা অল্প বা বস্তু আন এজনে নেপায়। আর এই কথা সহজেই বুজিব পারি যে, পৃথিবীর প্রত্যেক মানুহ খেতিত নিযুক্ত হব নোৱারে; আরু সকলো মানুহ খেতিত আৱদ্ধ হৈ থাকিলে সমাজর হিতর নিমিত্তে আন আন যিবিলাক কার্য্যর আৱশ্যক, সেইবিলাক করোঁতা নথকার গুণে মানুহবিলাকর সুখ-শান্তি নহর। রাজ্যর শাসন, বিদ্যान আরু শিল্প-কৰ্ম্ম-আদিত নিযুক্ত থকা মানুহবিলাকর খেতি করিবলৈ আজরি নাই; এতেকে বাণিজ্যর অভাৱ হোৱা হলে তেওঁবিলাক ডাত কাপোরর দুখত পরি নিজ নিজ কার্য্য চলাব নোত্ররার কারণে সমাজর বর অনিষ্ট হলহেঁতেন। আরু এঠাইত উৎপন্ন খেতির বস্তুবিলাক উৎপন্ন হোৱা ঠাইতে দৌলায়মান হৈ থাকি আন ঠাইর মানুহর অপ্রাপ্ত হোৱাত য'ত মাটি-পানী-আদির অবস্থার প্রভের কারণে যি শসার উৎপত্তি নহয়, সেই ঠাইর মানুহে তার ভোগরপরা বঞ্চিত, আর সেই শসা অর্জ্জা মানুহবিলাকে তার অতিরিক্ত ভাগ বেচি ধন উপার্জ্জন করিব নোত্ররা হলহেঁতেন। আর যদিও খেতি অতি উত্তম কার্যা, তথাপি তারপরা উৎপন্ন বস্তুর দ্বারায়ে আমার সকলো অডার পূর নহয়, আমার সুখ বৃদ্ধির কারণে আন অনেক বস্তু লাগে। বাণিজ্য নথকা হলে যি লোকে সেইবিলাক আপুনি যুগুত করিব নোৱারে, তেওঁ অৱশ্যে কষ্ট পালেহেঁতেন।

বেহার দ্বারা বিদেশত হোৱা অনেক বস্তু আমি পাওঁহঁক; তারাও আমার সুখ বাঢ়ে। বাণিজ্যর অভাৱ হোৱা হলে সেইবিলাক বস্তু পাব নোত্ররাত আমি সেই পরিমাণে সুখরপরা বঞ্চিত হলোইকহেঁতেন। বিশেষ এজনে অর্ডা বস্তু আন এজনে পাবর ঘাই উপায় ধন; এতেকে ধন নহলে মানুহ বর দুখত পরে। বাণিজার দ্বারা সেই ধনরো বৃদ্ধি হৈ মানুহ সুখীয়া হয়। আমার নীতি-শাস্ত্রে কয় যে, (বাণিজ্য বসতে লক্ষ্মীঃ) বেপারতে লক্ষ্মীর নিবাস। এতেকে জন-সমাজর উন্নতি আরু সুখ বৃদ্ধিয়ে ঘাইকৈ বাণিজ্যত আশ্রয় করে। যি দেশত যি পরিমাণে বেপার চলে, সেই দেশর মানুহ সেই পরিমাণে সুখীয়া হয়। আসামর মানুহে আন সভ্য দেশর মানুহর দরে বেপারর মোল নেজানে, এই কারণে ইয়ার মানুহবিলাক নিৰ্ধনী। যেতিয়ালৈকে তেওঁবিলাক বেপারত নিযুক্ত নহয়, তেতিয়ালৈকে দেশর উন্নতি হবর উপায় নাই ।

৬ পাঠ

কৃষি, বাণিজ্য এবং অন্যান্য ব্যৱসায় (সমাপ্ত)

খেতি আরু বেহাত বাজে আইনর ব্যবস্থা দিয়া, চিকিৎসা করা, কাপোর বোঝা, পাচি-খরাহি সন্ধা, সুতার, কমার, ফঁহার, সোনারি, বাঢ়ৈ বা আন শিল্পীর কার্য্য করা আদি অনেক স্বাধীন ব্যৱসায় আছে, আরু সেইবিলাকর দ্বারা সুসভ্য দেশবিলাকত বহু লোকে জীৱিকা করে আরু সুখে-স্বাচ্ছন্দে থাকে। প্রত্যেক মানুহে এই সকলোবিলাক ব্যৱসায় জানিব বা করিব লাগে এনে নহয়; কিন্তু আপোলার সূচল, বুদ্ধি আর ইচ্ছা অনুসারে এই বিলাকর ভিতরর কোনো এটা বা অধিক ব্যৱসায় জনা সকলোৱে উচিত, আর তারা মানুহর সুখ আর দেশরে শ্রীবৃদ্ধি হয়।

সাধারণ কথাত কোৱা যায় যে “হারির বিদ্যা শিকিলেও কালে উপকার হয়।” কিন্তু আমার দেশর চাকরির দ্বারা জীৱিকা উলিওরা বরলোকসকলে এই হিত বাক্যলৈ মন নকরি পাচি-খরাহি-সভা আদি বাঁহর কামবিলাকক নীচ কাৰ্যা বুলি বিদায়; ই যে তেওঁবিলাকর ভ্রম, তাক তলত লিখা সত্য ইতিহাসটির পরা বুজিব পারি। জার্মানী দেশর কোনো এজন ধনী আর ডাঙ্গর লোকে ধন আর বিষয় অনিতা, এতেকে দুর্গত পরিলে উপজীব্য করিবর নিমিত্তে কোনো এটা হাওর বিদ্যা জানা উচিত, ইয়াকে বুদ্ধি তেনে বিদ্যা শিকাত উৎসাহ দিছিল। তেওঁর এটি সুন্দরী আর বিদ্যারতী কন্যা আছিল। পাচে পদ আর সম্পত্তিরে তেওঁর সমান আন এজন বর লোকরা পুডেক এটিয়ে সেই কন্যার রূপ-গুপর দ্বারা মোহিত হৈ তেওঁর পিতাকর আগত বিয়ার প্রস্তাব করাত সেই বুঢ়া ভদ্রলোকে ডেকাক সুধিলে বোলে “মোর জী সুখেরে রাখিবর কারণ তোমার কি উপায় আছে? এই কথাত ডেকা আচরিত হৈ ফলে, “তেওঁ বর লোকর লরা, তেওঁর ধন-সম্পত্তি অলেখ, একোরে অভাৱ নাই; এতেকে তেওঁর ভার্বাক সুখেরে রখা একো টান কথা নহয়”। তাতে ভদ্রলোকজনাই উত্তর করিলে যে, সেই কথা সঁচা; কিন্তু ধন-সম্পত্তি অনিতা, দেশর বিভ্ৰাট হৈ কেতিয়া নাশ পায়, তার একো নিশ্চয় নাই; এতেকে দুখত প্রবর্ত্তিবর কারণে এটা হাতর বিদ্যা নিশিকিলে সেই ছোৱালী পাবলৈ তেওঁ আশা করিব নোৱারে। কিন্তু যুৱা তেওঁর জীয়েকক বিয়া করিবলৈ ইমান ব্যস্ত হৈছিল যে, তেনে কোনো এক বিদ্যা শিকিবর কারণে তেওঁ ছমাহ কাল খুজি কলে, বোলে সেই কালর ভিতরত তেওঁ অৱশ্যে কৃতকাৰ্য্য হব। তাতে বুঢ়া ভদ্রলোকে সন্তোষ পাই মাস্তি হল। ডেকাই বিদায় লৈ ঘরলৈ গল।

ছমাহর মূরত ডেকা উলটি আহি পরীক্ষার দ্বারা দেখালে যে, তেওঁ পাচি-সজ্জা বিদ্যাত বর পাগত হৈছে, তাতে সেই ভদ্রলোক বর রঙ্গেরে জীয়েকক তেওঁলৈ বিয়া দিলে। তার কিছু কালর পাচত রাজ্যর বিভ্রাট হৈ সেই যুবার আরু তেওঁর শহুরেকর সকলো ধন-সম্পত্তি হেরাল, আন কি? উপজীব্যর উপায়েই নাইকিয়া হল। তেতিয়া সেই যুৱাই পাচি-খরাহি সাজি বেচিবলৈ ধরিলে, আরু তেওঁর পাচি আনকৈ ভাল হোৱা হেতু সেই কার্যরপরা বর লাভ হৈছিল, আরু তেওঁ তার দ্বারায়ে নিজর আরু শহুরেকর, দুইরো পরিয়ালর উপজীব্য চলাইছিল। এইরূপে তেওঁ বুঢ়া হৈ কালর হাতত প্ৰাণ নোশোধোৱালৈকে, দুইও ঘর মানুহক প্রতিপাল করি আছিল। পাচি-সব্জা বিদ্যা নজনা হলে তেওঁর যি গতি হলহেঁতেন, তাক অনায়াসে বুজিব পারি। এতেকে হাতর বিদ্যা যে মানুহর বর প্রয়োজনীয়, তাত সংশয় নাই ।

৭ পাঠ

অঙ্গ পরিচালনা

যার গা নিৰ্ব্বল আরু রুগীয়া তার কোনো সুখ নাই আরু জীৱনেই অসার্থক, ইয়াক সকলোৱে জানে; এতেকে শরীর যেন সবল আরু নিরোগী হয়, এইটো সকলোরে বাঞ্ছা; কিন্তু কি প্রকারে সেয়ে হব পারে, আমার দেশর সরহ ভাগ মানুহে তাক গমি নেচায়, আরু নেজানেও, শরীর বলিষ্ঠ করিবর ঘাই উপায় শারীরিক পরিশ্রম। সেই পরিশ্রম নকরা মানুহর গা আর্টিল নহয়, কেঁচা কুমার মাটির দরে কোমল। যি বস্তু আছিল নহয় সি কেতিয়াও বলবান হ নোৱারে। কোমল বস্তু যে বলৱান নহয়, তার দৃষ্টান্ত দেখাওঁতে লরা আরু বয়সীয়া মানুহর তুলনা দিলেই হয়। বয়সীয়া মানুহতকৈ লরার গা কোমল, এতেকে ডেকাতকৈ লরা নিৰ্ব্বল।

বলৱান মানুহ উৎসাহী আরু সাহিয়াল হয়, আরু বর পরিশ্রমর কামো অনায়াসে করিব পারে। নির্ব্বল মানুহ এলেহুৱা, ভয়াতুর আরু অলপ পরিশ্রম হোৱা এটা কাম করিলেই শ্রান্ত হয় বা করিব নোৱারে। দুর্ব্বল মানুহক রোগেও অতি শীঘ্ৰে পীড়ে। আটিল গারে, বলবন্ত মানুহক নরিয়াই সিমান কষ্ট দিব নোৱারে৷ এই কারণেই আপোনার শরীর দৃঢ় আরু বলিষ্ঠ করা উচিত; তাকে করিব লাগিলে নিতৌ উত্তমরূপে অঙ্গবিলাকক পরিচালনা করিব লাগে। হাত-ভরি আরু গা এইবিলাকক চলাই থাকিলে সিহঁতে আট মারে, লঘু আরু কার্য্য করিবর যোগ্য হয়, আহারেও শীঘ্ৰে পাক পায়; আরু তেজ মাংস হৈ গোটেই গালৈ চলি যায়; তাতে গা পুষ্ট আরু সবল হয়। কিন্তু যি অঙ্গকে চলোৱা নেযায়, সিয়েই দুর্ব্বল আর অকৰ্ম্মা হয়। অনেকেই উর্দ্ধবাহু সন্ন্যাসী দেখিছে। তেনে মানুহে হাত এটা ওপরলৈ দাঙ্গি লর-চর নকরাকৈ থকাত সেইটো হাত একেবারেই অকামিলা হৈ পরে। ইয়ার দ্বারা বুজা যাব পারে, যে যি মানুহে যি পরিমাণে অঙ্গবিলাক চলায়, সেই পরিমাণে তার গা দৃঢ় আরু সবল হয়। অঙ্গ চালনার অনেক উপায় আছে; প্রথম ব্যায়াম, যাক হিন্দী-ভাষাত “কুন্তী” বোলা যায়; কিন্তু নিশিকিলে তাক করিব নোৱারি; এতেকে সি সকলোরে সাধ্য নহয়। ভাত বাজে নাও বোৱা, কোর মরা, খোজ কাঢ়ি ফুরা, ডটা-গুটি, ঢোপ, বা বল খেলোৱা আদি শারীরিক পরিশ্রমের কান অনেক আছে। সেইবিলাকর ভিতরর যি যিটো পারে, তাকে নিতৌ এই পরিমাণে করা উচিত, যেন গায় সকলো অঙ্গ পরিচালিত হয়, অথচ নিজে সহিব পরাতকৈ অধিক শ্রম নহয় ।

যিবিলাক মানুহ কামত নিযুক্ত হৈ সদায় ফুরি থাকে, সেইবিলাকতকৈ যি সকলে লিখি, পঢ়ি বা এনেই খরত বহি থাকি কাল নিয়ায়, সিবিলাক ওপরত কোরার দরে শারীরিক পরিশ্রম করিবর অধিক আবশ্যকতা পরে। গার অঙ্গ নচলাই সদায় মনটো চলাই থাকিলে শরীর আরু মন দুইও অতি শীঘ্ৰে নিস্তেজ আরু জীর্ণ হয়। এতেকে মনেরে শ্রম করা লোকবিলাকে গারেও শ্রম করিব লাগে। কোনো এজন জ্ঞানী বৈদ্যে কৈছে, যে “নিৰ্ম্মল বতাহ, বিশুদ্ধ পানী আর শারীরিক পরিশ্রম, এই তিনিয়েই মানুহর ঘাই চিকিৎসক।”

৮ পাঠ

সঙ্গ লোকর কর্তব্য ক

সকলো জন্তুতকৈ মানুহবিলাক অধিক সঙ্গ-প্রিয়, এতেকে তেওঁবিলাকে অকলশরীয়া অৱস্থাক ভাল নেপায়, আরু অনেক গোট খাই সমাজ পাতি থাকে। সিবিলাকর অভাৱো অনেক, সেইবোর পুরাবলৈ যত্ন করিব লাগে। কিন্তু, একে জনর যত্নর দ্বারা সেই সকলোবিলাক পূর নহয়, আরু অন্যান্য নানাপ্রকারর দুখ-কষ্ট গুচোৱাও টান; এতেকে আনর সাহায্যর আৱশ্যক। এই কারণ সঙ্গ লোকে আপোনার শক্তি অনুসরি সঙ্গীবিলাকর সহায়তা করে। বলীরপরা নির্ব্বলী রক্ষা, আরু পরর অন্যায় আচরণর দ্বারা দুখ-পোৱা লোকর প্রতি যেন ন্যায় হয়, তার নিমিত্তে যত্ন করাও স লোকর কর্তব্য কৰ্ম্ম। টানত পৰা মানুহক হিত পরামর্শ দি বা অন্য কোনো প্রকারে সহায়তা করি তারপরা উদ্ধার, আরু সমাজের অহিতকারী মানুহবিলাকে যেন রজার পরা উচিত দণ্ড পায়, তালৈ চেষ্টা করিবর নিমিত্তে সঙ্গ লোক সদায় সষ্টম হৈ থাকে। তেওঁলোকর ধন, ধান, গরু, মহ, মাটি-বারী, বা অন্য কোনো বস্তুলৈ লোড করি বা আন কোনো প্রকারে লোকর অহিত নকরে, কিন্তু পারে মানে হিতকেহে চিন্তে; আরু কৃÓট-কপটক বিলায়। সঙ্গীবিলাকর দুজন বা অধিক লোকর মাজত বিবাদ বা বিরোধ হলে তেওঁবিলাকর পুনর মিল করিবলৈ যত্ন করাকো তেনে লোকে আপোনার কর্তব্য বুলি জানে; আরু দুখীয়াকো পুতৌ, আরু নরিয়ার চিকিৎসার উপায় করাত বা মরা-ঘরীয়াক প্রবোধ দিয়াত কেতিয়াও পরাংমুখ নহয় । তাত বাজে হিত উপদেশ দি আরু আপোনার সঙ্গ আচরণর আর্হি দেখাই সকলোকে সাধু করিবলৈ যত্ন করা আমি পরোপকারর কামত তেওঁ অতিশয় আনন্দ পায়। যি এইবিলাক কার্য্যর বিরুদ্ধ আচরণ করে, সি সন্ধ লোক নহয়। ৩ আধ্যা

১ পাঠ

জুবিলাকর স্বভাৱ, বোধ ইত্যাদি।

জন্তুবিলাক মানুহর দরে সজীব, আরু সিহঁতর সুখ-দুখ বুজা শক্তি মানুহর সেই শক্তিকৈ কম নহয়। সিহঁতর এক প্রকার ভাষাও আছে, অর্থাৎ সিহঁতর মনর নানা ভাব ব্যক্ত করিবর নিমিত্তে বেলেগ বেলেগ শব্দ আছে। এই কারণ কোনো জন্তুৱে মাত মাতিলে তার জাতির অন্য জন্তুবে তার মনর ভাব বুজে। কিন্তু সিহঁতর মনর ভাব অতি অলপ; এতেকে মাতর সংখ্যাও কম; আরু সেইবিলাক মাত মানুহর মাতর বা বাক্যর দরে স্পষ্ট নহয়, তথাপি ডাঁটো- মইনা-শালিকা আদি কোনো কোনো চরাইয়ে মানুহর ভাষাও ভালকৈ ফুটাই কব পারে ।

জন্তুবিলাকর মানুহর দরে, অভ্যাসর দ্বারা বহলাব পরা বুদ্ধি নাই। সিহঁতর নিজর রক্ষা আরু বংশ বৃদ্ধির নিমিত্তে যিমানর আৱশ্যক, সেই পরিমিত বোধ মাথোন আছে। তার নাম “প্রাকৃত ব্যুৎপত্তি”+। সেই বোধ অলর, নেবাঢ়ে, নুটুটেও। এই কারণ এজাতির জন্তুরে আন এজাতির অবস্থা দেখি মানুহর দরে আপোনার উন্নতিসাধন করিব নোৱারে। এই নিমিত্তেই সৃষ্টির আদিরে পরাজন্তুবিলাকর অবস্থা একে দরেই আছে। ই বর আচরিত কথা, যে প্রতেক জাতির সকলো চরাইয়ে ঠিক এক দরেই বাহ সাজে, আরু সেই কার্য্য করিবলৈ শিকিব নেলাগে, স্বভারতে তার জ্ঞান পায়। যদি কাউরীর কণী এটা হাঁহর উমনিত জগাই পোৱালিটোক কেতিয়াও আন কোৱা দেখিবলৈ বা তার মাত শুনিবলৈ নিদি ঘরর ভিতরত রখা যায়, তেও সি আন কাউরীর দরে মাতিব, আরু বাহো সাজিব। এই বিষয়ত জন্তুবিলাক মানুহতকৈও শ্রেষ্ঠ; কিয়নো শিক্ষা নেপালে মানুহে কথা কবও নোৱারে। কিন্তু কাউরীয়ে টোকোরা চরাইর দরে সুন্দর বাহু সাজিবর শক্তি পোৱা নাই। এই কথাত হলে জন্তুবিলাক মানুহকৈ নিকৃষ্ট।

জন্তুবিলাকর অপত্য স্নেহ, যেতিয়ালৈকে পোৱালিবিলাকর রক্ষার নিমিত্তে অনিবার্য্যরূপে সি প্রয়োজনীয় হয়, তেতিয়ালৈকে মাথোন থাকে। আমি জানোইক যে, যি পর্যন্ত পোৱালিবিলাকে আপুনি চরি ফুরিব, আরু আপোনাক সক্ষা করিব পরা নহয়, তেতিয়ালৈকে মাকে সিহঁতর নিজর লগত রাখি প্রতিপাল করে, কিন্তু যেতিয়াই সেই প্রতিপালয় আৱশ্যক গুচে, তেতিয়াই সিহঁতর লগ এরাএরি হৈ এটাক আনটোরে নিচিনা হয়। আর অঙ্কবিলাক যি সময়ত অপত্য স্নেহ থাকে, তেতিয়া সি বর প্রবল; জ্ঞান-বুদ্ধি থকা মানুহরো সিমান নহয়। কোনো এজন ইংরাজী বৈদ্যে ব্যবচ্ছেদ-বিদ্যার অভ্যাস করোতে এজনী জীয়া কুকুরর পেট ফালিছিল, তাতে তাই যাতনাত মূৰ্চ্ছিত হৈ পরি থাকোঁতে তাইর পোৱালি এটা তাইর ওচালৈ অনা হল, তেতিয়া তাই পোৱালির গম পোৱা মাত্রেই তাইর যেন একো দুখ হোৱা নাই, এনেভাৱে পোৱালিটোক চেলেকিবলৈ ধরিলে, আরু তাক আঁতরাই লৈ গলতো তার ফাললৈ চাই শোকর ধ্বনি করি বেজার প্রকাশ করিছিল ।

জন্তুর চেনেহ পিতা-মাতারপরা সন্তানলৈ নামে; কারণ সেই চেনেহর অভাৱত পোৱালির রক্ষা হব নোৱারে, তাতে জন্তুর বংশ-রক্ষাত বিধিনি জন্মে। কিন্তু বংশ রক্ষার নিমিত্তে পোৱালিয়ে বাপেক-মাকক স্নেহ করার সকাম নাই; এই কারণ তার মরম ওপরলৈ নুঠে।

কোনো কোনো জন্তরে এনে চতুরতা দেখুৱায় যে, মানুহরো তেনে আচরিত চতুরতা নাই; কিন্তু সিওর রক্ষা আরু পরচ বঢ়োত্রা কার্যার অঙ্গ মাথোন; এই দুই কথার বাহিরে সিহঁতর একো বোধ নাই বুলিলেও মিছা কোৱা নহয়। উটর খাই ঠাই আরব দেশ, সেই দেশর সরহ ভাগ বালিময়, তাত মুঠেই পানী নাই, এই কারণে সেই ঠাইত ফুরোতে উটে কেতিয়াবা কেইবা দিনো পানী নেপায়; এতেকে সি যি ফাললৈ যায় সেই ফালর কোনো পৰ্ব্বতর নিজরাত পানী থাকিলে সি বহুত দূরতে তার গন্ধ পাই তার ফাললৈ বেগ দিয়ে, আরু পানী পালে ভরিরে খোদালি বোকা করি খায়, তারে কিছুমান তার পেটত থকা জোলোঙ্গাত সুমাই থয়। উটে জানে, যে তার পাচত কেই দিনর মূরত সি আফও পানী পাব, তার নিশ্চয় নাই; এতেকে বোকা করি নেখালে শুদা পানী অতি শীঘ্ৰে ঘাম আদি হৈ ওলাই যাব, আরু পিয়াহত তার কষ্ট হব। এই দরে পানীর গন্ধ পোৱা শক্তি নথকা হলে আরবর বালিত উটর প্রাণ রাখাই টান হলহেঁতেন । ইওরোপর হাবিত পহু মরীয়া কুকুর অহার গম পালে, মাইকী শহাই তাইর যত পোৱালি থাকে, তার অলপ আঁতরত দেখা দিয়েগৈ; তাতে কুকুরে তাইলে খেদি গলে তাই এর টেঙ্গরাজিরে ঘুরি ঘুরি লগ্ন দিয়ে, কুকুরে কোনো প্রকারে তাইর লগ ধরিব নোৱারে, পাচত চল পালেই তাই এডোখর হাবিরপরা আন এডোখলৈ এনে বেগেরে জাঁপ মারে, যে কুকুরে তত ধৰিবই নোৱারে, আরু গন্ধো হেরায়। তার দ্বারা শহার আপোনার আরু পোৱালিরো রক্ষা পরে।

কোনো-কোনো জন্তুৱে উপকার আরু হিংসা মনত রাখিব পরারো প্রমাণ পোৱা যায়। কুকুরে তার উপকারী আরু গরাকীর প্রতি যে প্রগাঢ় ভক্তি দেখায়, সেয়ে সি উপকার মনত রাখিব পরার চিন। আরু কোনো এক সময়ত দিল্লী নগরত বাটে দি এটা হাতী লৈ যাওঁতে সি এখান দর্জীর দোকানত তার শুঁড় সুযোৱাত দর্জীয়ে বেজীরে তার শুঁড়ত খোঁচ মারি দিলে, পাচত সেই হাতী উলটি সেই বাটে যাওঁতে কিছুমান বোকা পানী সেই দজীর গালৈ এনেকৈ মারি দিলে, যে তার গোটেই গা আরু নিকা কাপোর একেবারেই বোকারে লিপ্ত হল। হিংসা মনত থকার ই প্রমাণ নহয় নে ?

২ পাঠ

অনুবিলাকর স্বভাৱ, বোধ ইত্যাদি (সমাপ্ত)।

প্রত্যেক জাতির জন্তুবিলাকর গার গঠন সেই জাতির স্বভাবর সম্পূর্ণ উপযোগী। হাতী ঘাঁহ খোৱা জন্তু; কিন্তু সি বর ওখ আরু তার ডিঙ্গি নিচেই চুটি হোৱাত অন্য জন্তুর দরে সি ধাহত মুখ দিব নোৱারি আহার করাত বর কষ্ট পালেহেঁতেন, এই কারণে সি অনায়াসে মুখলৈ আহার নিবর কারণে মানুহর হাতর নিচিনা শুঁড় পাইছে। উতনুৱা নামেরে এদুরর নিচিনা যে এবিধ জন্তু আছে, সি সদায় মাটির তলত থাকে। সেই ঠাই আন্ধার, তাত চকুর একো সকাম নাই, এই কারণে তার চকু ইমান ক্ষুদ্র আর অনুজ্জ্বল, যে আগেয়ে অনেকে তাৰু গোটেই কণা বুলি ভাবিছিল। আর সি চকুরে নেদেখে, এতেকে তার শুনা শক্তি বর প্রবল, সি ভালেমান আঁতরত শত্রু অহার শব্দ শুনি আপোনার রক্ষার উপায় করে। সি মাটির তলত গাঁত খানিব লাগে; এই দেখি তার আগলের নখবোর চোকা, আরু পতা বহুল। মাটির তলত দীঘল নেজর কোনো প্রয়োজন নাই, এই কারণ তার সেই অটো নিচেই চুটি। উতনুৱার যেনে স্বভাব, ভালে চালে তার গার গঢ় আন প্রকারর হোৱা যে নিচেই অনুচিত, তাক অনায়াসে বুজিব পারি।

প্রত্যেক জাতির জন্তুবিলাকর গার গঢ় সেই জাতির যেনে উপযুক্ত, সিহঁতর শরীরর ঢাকনীও তেনে। কোনো জাতির জন্তুর নোম, কোনো জাতির পাখি, কোনো জাতির কাঁইট, গার আচ্ছাদন; কিন্তু সেই ঢাকনী প্রত্যেক জাতি স্বভাৱর ইমান উপযোগী, যে যদি এবিধ জন্তুর আচ্ছাদন আন এবিধক দিয়া যায়, তেন্তে আত্মরক্ষা আর শীত নিবারণর সম্বন্ধে তার অবস্থা গোটেই বেয়া হব। চরাইবিলাকর আকাশত উরি ফুরা স্বভাব; এতেকে সিহঁতর সেই কার্য্যর সম্পূর্ণরূপে উপযোগী পাখি আছে। সেই পাখিবিলাক লঘু, আরু পাচ ফাললৈ মুখ করি জাঁপি দিয়া হৈছে। পাখির দ্বারা চরাইবিলাকর অকল শোভা মাথোন হয়, এনে নহয়, তার দ্বারা সিহঁত পানী, বতাহ আরু জারে বিন্ধিব নোৱরাও হয়। . বামর চরাইতকৈ পানীত সাঁতুরি ফুরা চরাইর বুকুর পাখি অধিক ডাঠ। এই কারণ তাক পানীয়ে ভেদিব নোৱারে। গীত-প্রবল ঠাইর অনেক জন্তুর গা মিহি, কোমল আর চুটি নোমেরে আবৃত, আরু জারকালি পরিলে সেই নোম ঘন হয়; তার দ্বারা সেইবিলাক জন্তু জাররপরা রক্ষা পরে। পাচে ঘাম কালি হলে সিমান ডাঠ নোম অকামিলা আরু কষ্টকর হয়; এতেকে সি আপোনা-আপুনি সরি পাতল পরে। মাংসাহারী জন্তুবোরতকৈ ঘাঁহ বা শস্য-খোৱা জন্তুবিলাকর স্বভাৱ অধিক নম্র, আরু পাচত কোৱা বিধ জন্তুর প্রথম বিধর দরে চোকা দাঁত, নখ বা ঠোঁট নাই; এই কারণ সেই বিধর জন্তু অধিক ভয়াতুর; তার প্রমাণ, বাঘর দরে ছাগ, চোকা দাঁত নখযুক্ত নহয়; কপৌ চরাইরো শেনর দরে জোঙ্গা ঠোঁট আৰু নখ নাই; এতেকে বাঘ আরু শেনতকৈ ছাগ আরু কপৌ অধিক নির্ভু আর ভয়াতুর।

চতুষ্পদী জন্মবিলাকর কিছুমান মাংসাহারী আরু কিছুমান তৃণ-ভোজী। পাচর শ্রেণীর জন্তুবিলাকর দুবিধ আছে, - এজাতি রোমন্থকারী অর্থাৎ সেই জাতিয়ে প্রথমতে খাঁহ পেটত ভরাই আকও উলিয়াই পাগুলি গিলে; গরু-ছাগ আদি এই জাতির জন্ম; আন জাতিয়ে ঘাঁহ একবারেই গিলে; হাতী, ধোঁয়া, গড় ইত্যাদি এই জাতিত পরে।

চতুষ্পদী অঙ্কু

৩ পাঠ

হাতী

হাতী পৃথিবীর সকলো চারি-ঠেঙ্গীয়া জন্মাতকৈ ডাগর। তার বৃহৎ আকার, বল আরু চতুরতা দেখি সকলো কালর মানুহ আচরিত হৈছে। যদিও সি সকলো চতুষ্পদী জন্তুতকৈ অধিক বলৱন্ত, তথাপি তার খং নুতুলিলে সি কারো অনিষ্ট নিচিত্তে। আচিয়া আরু আফ্রিকার হাবিত অনেক হাতী অতি নম্র আরু শান্তভাৱে থকা দেখা গৈছে। হাতীবিলাকর অনেকে লগ লাগি জাক পাতি থাকে, আরু গছর ডাল-পাত আহার করে। হাতী ঈষৎ ধোঁয়া-বরণেরে মিহলি মুগা বা কলা চানেকীয়া; কিন্তু কোনো-কোনো ঠাইত বগা হাতীও পোৱা যায়। হাতীবিলাকে বর জার আর বর ঘাম, দুইকো সহিব নোৱারে; এতেকে ছাঁয়াযুক্ত কাঠনি হাবিত থাকে, পানীত ধেমালি করিবলৈ ভাল পায়, আরু অনায়াসে সাঁতরিব পারে। হাতীর শুঁড় স্বভাবের এক আচরিত শিল্প কৰ্ম্ম। তার দ্বারা হাতীয়ে উশাহ লয়, আর আহার পানী মুখলৈ তোলে। এই আচরিত অঙ্গ অসংখ্যাত কোমল আর লেটেকা আজঠিরে নির্মাণ করা হৈছে। তার দুটা চুঙ্গা আছে, আরু আগর ভাগ চেপেটা, ঘূরণীয়া; সেই ভাগর মুখ ডোখর আঙ্গুলির দরে জোগা, তার দ্বারা হাতীয়ে অতি ক্ষুদ্র বস্তুকো ধরিব পারে। শুঁড়র পাচ ফাল অলপ চেপেটা, আগ ফাল গোল, আরু তাক সকলো ফাললৈ দোঁৱাব পারি; এই হেতুকে সি মানুহর হাত আরু বাহুর কার্যা করে। হাতীয়ে দাঁতর দ্বারা গছ, আরু শুঁড়র দ্বারা ডাল ভাঙ্গে। সি অনায়াসে শিকনি লয়, আরু এই কথাত সি আন অনেক চতুষ্পদী জন্তুতকৈ অধিক বুদ্ধিমান। লঙ্কা-উপদ্বীপত মানুহে হাতীক শিকাই শিল্প বা ইটার ঘর আদি সজা কার্যত নিযুক্ত করে। সি মানুহর দরে ইটা আরু শিল পারে, আরু সেই শিল আদি ভালকৈ খাইছে নে নাই জানিবর নিমিত্তে পাচলৈ হুহকি গৈ স্থির ভাবে চাই থাকে, আরু কোনো দোষ দেখিলে আগবাঢ়ি আহি শুঁড়েরে ঠেলি সেই শিল আদিক ভালকৈ খুৱাই দিয়ে।

৪ পাঠ

গড় এবিধ বলৱান জন্তু, কেৱল হাতীতকৈ মাথোন নীহ। সি প্রায় হাতীর সমান ডাঙ্গর, কিন্তু তার ঠেং চুটি; আরু কপালত এটা শিং থাকে, তার নাম খড়গ। তার ওপর ওঠ দীঘল, জোলা আর লন্দন; তার দ্বারায় সি আহার মুখলৈ সুমায়। তার ছাল ডাঠ, টকলা আরু কোঁচ খাই ভাঁপ যোৱা; টিকা আরু চেউরার ওপর-ভাগত সেই ছাল গার আন- আন ঠাইতকৈ অধিক জাপ খোত্রা। হালর বরণ মুগা, আরু তাক চোকা অস্ত্রেও সহজে ডেদিব নোৱারে। কোনো কোনো গঁড়র খড়গ, দুহাত দীঘল হয়। আর সি একেবারেই হাড়রপরা ওলায়। এই অস্ত্রর দ্বারা গঁড়ে হাতী আর বাঘকো খেদাব পারে, আরু তার ছাল ইমান টান যে, সিংহর নখো তাত নবহে; এতেকে কোনো জন্তুর পরা গঁড়র ভয় নাই ।

এই জন্তু আচিয়া আরু আফ্রিকার সিংহ, বাঘ আরু হাতী থকা ডাঙ্গর হাবিত থাকে। ঘাঁহ মাথোন তার আহার; এতেকে তার স্বভাৱ উগ্র নহয়। কিন্তু সি বর ভয়াতুরো নহয়, এই কারণ আন জন্তুরে তাক আক্রমণ করিলে সি লর নেমারে। যদিও গঁড়র খুঁজ করিবর শক্তি আছে, তথাপি সি নির্ব্বিধিনিরে থাকিব পারিলেই ভাল পায়, নোজোকালে কারো অপকার নিচিন্তে। অন্য জন্তুর অভক্ষা কাঁইটীয়া ঘাঁহ তার বর প্রিয়। পূর্ব্ব কালত কোনো-কোনো সময়ত, হাতীর দরে, গড়কো রণলৈ নিয়া হৈছিল; কিন্তু সি মাউতর বশ নহয়, এতেকে যুদ্ধর অনুপযুক্ত। এই জন্তুৰে অহা-যোৱা করা বাটত মানুহে খাল খানি তাক কেঁচা বন আর পাতেরে ঢাকি থয়, তাতে সি তালৈ যে ফান্দ পতা হৈছে, তাৰু বুজি নোৱারি সেই খালত পরাত ধরা যায়। আর কোনোৱে মাইকী আৰু পোৱালি একেলগে থাকোতে মাকক গুনীয়াই মারি পোৱালিটো ধরে। হাতীর দরে গঁড়রো একে বারতে এটা পোৱালি মাথোন জগে। আচিয়ার গড়র খড়গ একেটা মাথোন, কিন্তু আফ্ৰিকাত দুটা খড়গেরে এজাতি গঁড় আছে বুলিও শুনা যায় । ৫ পাঠ

ল-ঘোটক বা পানী ধোঁৱা ।

ই এবিধ চারি ঠেঙ্গীয়া বিচর জন্তু। তার গার পরিমাণ প্রায় হাতী বা গঁড়র সমান, গড়ো অপ্রাপ। কিন্তু তার ঠেং - নিচেই চুটি আরু মূর বর ডাঙ্গর। আফ্রিকা দেশর নদীবিলাকেই তার খাই নিবাসর ঠাই; কিন্তু আন কোনো ঠাঁইর নৈতো তাক পোৱা যায়। সি হাতী, গঁড়, গাছরি আরু ধোঁয়ার দরে চতুষ্পদী, স্তন পান করি ডাঙ্গর হয়, পেটর পরা ঘাঁহ উলিয়াই নেগাগুলে, আরু তার ঘুরা বা নখ আছে; এতেকে ইওরোপর অদ্ভুতত্ত্ব-বেত্তাসকলে তাক সেইবিলাক জন্তুর শ্রেণীত গণনা করিছে, আরু তার প্রকৃতি ধোঁৱাকৈ বেলেগ হোৱাতো ধোঁৱারে সৈতে একে শ্রেণীর জন্তু দেখি তাক “হিন্সপচ্” অর্থাৎ নৈর ঘোঁরা নাম দিছে। এই কারণ তাক আমি জল-ঘোটক বা পানী-ধোঁয়া বোলোঁহঁক ।

এই ভয়ানক জন্তুর গার জোখ দহ হাতকৈও অধিক। সি ওখয় কিছু অধিক চারি হাত; তার অকল মূরটোৱেই প্রায় আঢ়ৈ হাত, গার মের ছহাতকৈ অধিক । তার প্রতি- ভরিত চারিটা নখ থাকে, ছাল বর ডাঠ, আরু হিলের গুলীয়ে তাক ভেদিব পারে হয়; কিন্তু দার কোবে একো করিব নোৱারে। তার নোম নিচেই পাতল আরু ঈষৎ বগা। সি আন জন্মরে সৈতে যুঁজ করিবলৈ সম্পূর্ণ সমর্থ; তথাপি তার সমান কোনো শত্রুরে সৈতে বিরোধ করিবলৈ ইচ্ছুক নহয়। সি আফ্রিকার ডাঙ্গর নদীবিলাকত আলসার বশ হৈ কাল নিয়ায়, আর আহার বিচরাত বাজে তার আন কোনো কাম নাই। আহার বিচারিবর সময়ত তিনি বা চারিটা একেলগ হৈ পানীৰ তলত শারী পাতি খাপ দি থাকে, তাতে সোঁতর বেগত মাছ আহি সমুখত পরিলে তাক ধরি খাই থয়। পানী-ধোঁয়া সাঁতোরাত বর পাগত আরু কোনো সময়ত মাছ-আদি খেদিও ধরে। সি উশাহ লবর নিমিত্তে ওপরলৈ নুঠাকৈ আধা ঘণ্টাকৈও অধিক কাল পানীর তলত থাকিব পারে। তার আহারর নিমিত্তে বিমান লাগে, সিমান মাছ নেপালে সি ৰামলৈ গৈ ঘাঁহ আরু মানুহর শস্য খায়, কিন্তু ৰামত বেগাই ফুরিবলৈ সমর্থ নহয়। তার ছাল শিল যেন টান হোৱাত শসার গরাকীয়ে তার একো অপকার করিব নোৱারে। কিন্তু বামত সি বর ভীত, এই কথা জানি খেতিয়কে বর জুই ধরি ঢোল কোবায়, তাতে পানী ঘোঁরা ভয়ত বিচূৰ্ত্তি হৈ পলাই যায়। এই উপায়র সলনি তার গাত যা লগালে বা আন কোনো প্রকারে তাক দুখ দিলে তার সুপ্ত হৈ থকা সমুদায় শক্তি জাগি উঠে, আরু সি অতি উগ্র খঙ্গেরে তার আগত যিহকে পায়, তাকেই কাতি করি পেলাই পীড়া দিয়ে। তার খং নুতুলিলে সি বামর দরে পানীত নম্র ভাব দেখায়, আরু কেতিয়াও নৈত যাতায়াত করা নাএক আক্রমণ নকরে; কিন্তু কোনো প্রকারে তার খং উঠিলে নাও আরু নাবরীয়া দুইও সঙ্কটত পরে। বামত থাকোতে পানী-ঘোঁরাক কোনো শত্ৰুৱে খেদি আহিলে সি যদি তার কোনো প্রতিকার করিবর উপায় নেদেখে, তেন্তে লর মারি পানীত পরে গৈ৷ তার মাইকীয়ে বামত পোৱালি জগায়; আর একেবারতে এটাকৈ সরহ পোৱালি নহয়। এনে সময়ত তাই বর ভয়াতুর হয়, আরু অলপ হাই শুনিলেই লর দি পানীত পরে। তাইর পোৱালিয়েও তাইর পাচতে লরি গৈ পানীর আশ্রয় নয়। ৬ পাঠ

কেঁটেলা পছ।

এই জাতির জন্তুক আসাম দেশর সকলো লোকে দেখিছে। তার গোটেইটো গা বার আঙ্গুলমান দীঘল বহুত শলারে আবৃত। শলাবিলাকর মাজভাগ দুই মূরতকৈ শকত আরু কলা। সেইবিলাক চরাইর পাখির দরে পাচ ফাললৈ মুখ করি তার গাত গঞ্জে, আর তার খং উঠিলে থিয় হয়। কেঁটেলার সেই প্রবল অস্ত্র আনক আক্রমণ করাতকৈ তার গা রাখিবর নিমিত্তে অধিক উপযোগী; এতেকে সি কেতিয়াও আনলৈ খেদি নেযায়; কিন্তু আনে তাক আক্রমিলে সি কেৱল তার শলাবিলাক থিয়, আরু শত্রু ফাললৈ পোন করি রৈ থাকে, তারায়ে তার রক্ষা হয়। সি তার শলাবিলাক থিয় করিলে সিংহেও তালৈ সাহ করিব নোৱারে।

কেঁটেলা আর সাপর মাজত বর বৈর ভাব দেখা যায়। সিহঁতর দেখা দেখি হলেই যুঁজ নহৈ নেথাকে। সাপে আক্রমণ করিলে কেঁটেলার শলাবিলাক থিয় করি তার ওপরত বাগর দিয়ে, তাতে মহাবিষ সাপ অকল পরাস্ত হয়, এনে নহয়, সি প্রাণকো হেরুৱায়। এইবিধ জন্তুরে ঘাঁহ খায়, আরু শস্যর বর হানি করে। সিহঁত ভয়াতুর, মানুহর নিচিনা প্রবল শত্ৰুৱে আক্ৰমিলে বেগাই লর মারি গছত উঠে। কিন্তু পহুমরীয়াবিলাকর হাতর পরা রক্ষা পোৱা অসম্ভব। সিহঁতে তার মঙ্গহ খায়, আরু কাঁইটবিলাক শিল্প - কৰ্ম্মত লগায় ।

৭ পাঠ

নাহরফুটুকী- -बा।

এক ভয়ানক জন্তু। তাক আসামর প্রায় সকলো মানুহে দেখিছে, আর তারপরা ভয়ো পাইছে। এটা সামানा নাহরফুটুকীর গার পরিমাণ নাকরপরা নেজর গুরিলে আঢ়ৈ হাতকৈ অধিক; তার নেজ দুহাতর কিছু কম। এই জন্ম যদিও হিংসুক, তথাপি তার শরীরটো এনে সুন্দর যে, তাক দেখিলে এটা নিরীহ জন্তু যেন বোধ হয়। তার গার ওপর ভাগ অলপ হালধীয়া আরু প্রায় নাহর ফুলর আকৃতির বহুত ফুটেরে শোভিত, এই কারণেই তার নাম নাহরকুটুকী হৈছে। তার পেটর আরু বুকুর গার নোম আন-আন ডাগর নোমকৈ কিছু দীঘল আরু বগা। সি মাংসাহারী, এতেকে তার স্বভাব উগ্র; আরু সি মানুহ, গরু দুইকো নষ্ট করে। নাহরফুটুকী বাঘ আফ্রিকা আর ভারতবর্ষত থাকে, আরু আন ঠাইতো তাক পোৱা যায়। আফ্রিকার নাহরফুটুকীবিলাক বর ভয়ানক; সিহঁতে বনরীয়া জন্তু ধরিবলৈ নেপালে জাক পাতি হাবির পরা গাওঁর ওচরলৈ আহে, আরু মেরহাগ-গরু আদির সর্ব্বনাশ করে। কাক্সিবিলাকে খাল খানি নাহরকুটু- বাঘ ধরে, আর তার মঙ্গহ খায়। এই দেশর মানুহে হলে আপোনার মঙ্গহ নাহরফুটুকীক শোধাইয়েই সন্তোষ পায়। পক্ষী-জাতি

৮ পাঠ

উহ

উকহ কুরুরা জাতির চরাই, কিন্তু কুরুৱাতকৈ ডাঙ্গর আরু হিংসুক। এই চরাইর গার ভার প্রায় ছ সের। সি দীঘলে দুহাত; তার এখান ডেউকার মূররপরা সিখান ডেউকার মূরলৈ কিছু অধিক চারি হাত; ঠোঁট তিনি আঙ্গুল মান দীঘল, বেঁকা আরু বর চোকা। ইওরোপত গল্ডেন ইগিল (সোণর উকহ) নামেরে যি এবিধ উকহ আছে, সি আন সকলো বিধর উকহতকৈ ডাঙ্গর, আরু ভয়ানক। কিন্তু আমার দেশর উকহ সিমান ডাঙ্গর আরু হিংসুক নহয়। এতেকে আমি ইয়াত ঘাইকৈ ইওরোপর উকহর কথাকেহে লিখিম ।

উকহ প্রায়ে পৰ্ব্বত বা নির্জন হাবিত থাকে, আরু বর ওখ গছ বা পৰ্ব্বতর টিজত বাহ লয়। সি নির্জন ঠাইত থাকি বনরীয়া জন্তু ধরি খাবলৈ ভাল পায় হয়, কিন্তু অনেক সময়ত গাৱলৈ আহে, আরু অকলৈ থকা কেঁচুৱা লরা পালে থাপ মারি লৈ যায়। চারি ঠেঙ্গীয়া জন্তুর ভিতরত সিংহ যেনে, চরাইর ভিতরত উকহ তেনে। এতেকে তাক পক্ষীর রজা বুলিব পরা যায়। উকহে আপুনি যি জন্ম ধরে, তাকে হে মাথোন খায়; তার যিমান কি ভোক লাগোক, আনে মরা জন্তু বা শৱ সি কেতিয়াও নোহোৱে। তার আহারর যি অৱশেষ থাকে, সি তাক নেখায় ।

সকলো চরাইকৈ উকহ অধিক ওখলৈ উরে। তার দৃষ্টিও বর চোকা; কিন্তু ঘ্রাণ শক্তি যদিও তীক্ষ্ণ, তথাপি শগুণ সমান নহয়। সি বর চোকা নখেরে অনায়াসে রাজ হাঁহ আরু বগলী চরাই ধরি লৈ যাব পারে, আরু প্রায়ে মের-ছাগলীর পোৱালি আরু শহাপহু ধরি লৈ উরি যায়, আরু কেতিয়াবা কেতিয়াবা পহু পোৱালি আরু দামুরি কা মারি তেজ পিয়ে। উকহর যেতিয়া পোৱালি জগে, তেতিয়া সি অতি ভয়ঙ্কর হয়। সেই সময়ত তার মতা আর মাইকী, দুয়ো পারে মানে যত্ন করি পোৱালিক আহার যোগায়, আরু অকলৈ থকা কেঁচুৱা লরা পালে পোৱালিক খুৱাবলৈ থাপ মারি লৈ যায়। উকহক জাতি করা বর টান, নিচেই সরুতে আনি ঘরত পরিশ্রমেরে পুহিলেও সি বল নহৈ সঙ্কটজনক ভৃত্য হে হয়; কিয়নো সি চল পালেই তার শক্তি তার গরাকী বা তেওঁর লরাহোৱালীর অস্থিতে ব্যবহার করে। সি স্বভারতে অহঙ্কারী, আরু মুকলিমূরে থাকিবলৈ ভাল পায়; এতেকে তাক বাহিরলৈ নি চরাই ধরিবলৈ এরি দিলে সেই সূচলতে সি যে তার নিজর নির্জন হাবিলৈ উলটি নেযাব, তাত বিশ্বাস করিব নোৱারি। কিন্তু কেতিয়াবা সি তাক পোহোঁতার বর বশ হয়। এই কথা শুনা আছে, যে উকহ কেইবা সপ্তাহলৈকে অনাহারে থাকিব পারে, আর এশ বছরকৈও অধিক কাল জীয়াই থাকে।

২৯ পাঠ

মরা চরাই।

পরাক্রমর দ্বারা নহৈ শরীরর শোভার দ্বারা রাজত্ব পাব পরা হলে ময়ূর নির্বিবাদে চরাইবিলাকর রাজা হলহেঁতেন, কিয়নো গার শুৱনি গঢ়, আরু পাখির বরণত পক্ষীজাতির ভিতরত তাকে শ্রেষ্ঠ কেও নাই। সকলো জন্মর মাইকীকৈ মতা শুৱনি, এতেকে এই জাতির চরাইরো মতাবিলাক হে ধুনীয়া, মাইকীবিলাক দেখিবলৈ বর ভাল নহয়। তার ডাগর গা, মনোরম আচরণ, স্থির খোজ, শুৱনি গঢ়, সুন্দর বরণীয়া জ্বরে ভূষিত দূর আর চক্কর আনন্দ-জন্মোত্রা নিরুপম পাখি, এইবিলাকে মরা-চরাইক আমার আদরর অতি ওখ ভাগলৈ তোলে। কিন্তু তার সেই সুন্দর পাখিবিলাক চিরস্থায়ী নহয়, বছরি সরে। সেই সময়ত পুনরায় নতুন পাখি নগজে মানে হাবির পরা নোলায় ।

মরার পাচ-ফালর বিচিত্র পাখিবিলাক তার নেজ নহয়; কারণ সেইবিলাক তার টিকাত নগঞ্জে, পিঠিরপরা হে ওলায়; তার টিকাত থকা চুটি, মুগা আরু ঠরঙ্গা পাখিবিলাক তার স্বরূপ নেজ, আরু সেই দীঘল পাখিবিলাকর আধার। কিন্তু সিহঁতক তার নেজ বুলি গণনা করা নেযায়; পিঠিত গঙ্গা সেই দীঘল পাৰিবিলাকে হে নেজ নাম পায়। যেতিয়া মরাই তার সুন্দর নেজ থিয় করি চার্লি ধরে, তেডিয়া আগফালরপরা তার মূর আরু ডিজিত বাজে গার আন কোনো ভাগ দেখা নেযায় ৷ মরা-চরাই আচিয়া আরু আফ্রিকার হাবিত পোৱা যায়; কিন্তু ভারতবর্ষর চাপরিবিলাকত বিবোর মরা আছে, সেইবিলাক আনা সকলো ঠাইর সেই জাতির চরাইকে ডাগর আর শুৱনি পোৱালি হবর সময়ত মাইকী মরাই প্রত্যেক তৃতীয় বা চতুর্থ দিনত দুটামান কণী পারে। কণীবিলাক ফুটুকা-ফুটুকী। সমুদায় কণী পরা হলে তাই সাতাইশ বা ত্রিশ দিন উমনি লৈ পোৱালি জগায়। মরা চরাইয়ে বরকৈ উরিব নোবারে; কিন্তু গাছর ইডালরপরা সি- ডাললৈ বগাই বহুত ওখলৈ উঠে, আর তারপরা তার সেই ভেঁরীর নিচিনা উচ্চ আরু চোকা শব্দ করে। সিজার কালি কদাচিত হে মাতে; কিন্তু বারিষা মেঘর গাজনি শুনিলে মনে-মনে থাকিব নোৱারে।

১০ পাঠ

বরটোকোলা।

এই নামেরে এবিধ চরাই আমার দেশর সকলো মানুহে দেখিছে। সি বর ডাঙ্গর, চারি হাত-মান ওখ, আরু তার মূরটো টকলা; এই কারণেই তার সেই নাম হৈছে । তার ডিঙ্গির আগফালে এটা ছালর ডাঙ্গর মোনা থাকে, তার নাম টোটোলা। তাতে সি তার আহার সুমাই থয়। এই চরাই শুৱনি নহয় আরু মলিন, কিন্তু মানুহর বর উপকারী; কারণ সি সাপ আদি অপকারীজন্তুবিলাক খাই নষ্ট করে। সি শরো খায়, আরু হাড়বিলাক ডোখরে-ডোখরে গিলে। সরু চারি- ঠেঙ্গীয়াজন্তু আরু চরাইআদিও তার ভক্ষ্য, আরু চারি জন মানুহক যিমান মাছে জোরে, এটা বরটোকোলাই সিমানকৈও অধিক খাব পারে।

কোনো এক সময়ত এটা বরটোকোলা মাবি কার্টোতে তার টোটোলাত দহ আঙ্গুল মান দীঘল এটা দুরাকাহ আর এটা ডাঙ্গর মেকুরী পোৱা গৈছিল। এইবিধ চরায়ে মানুহলৈ বর ভয় নকরে; এতেকে পুহিলে সোনকালে জাতি হয়, আরু মাছ আদি দিলে ততালিকে তুলি লৈ গিলি পেলায়; আফ্রিকা- দেশর মানুহে তাক পবিত্র বুলি সৎকার করে। সেই দেশত এবার আইচ নামেরে এজন ইংরাজে বরটোকোলা মারিবর ইচ্ছা করি তাঁলৈ অনেক বার গুলীয়াইও বাঞ্ছা পূর্ণ করিব নোৱারিলে, তাতে সেই কার্য্য দেখা মানুহবিলাকে বর সন্তোষ পাই গণ্ডপ মারি কবলৈ ধরিলে যে, তেওঁ যিমান পারে, সিমান গুলী মারিও চরাইক বধ করিব নোৱারে।

স্মিথমেন নামেরে এজন ইংরাজে লিখিছে, যে কোনো এজন ভদ্রলোকে এই জাতির এটা চরাই পুহিছিল; সি মান পোহ লৈছিল, যে নিতৌ তার গরাকীর ভোজনর সময়ত তেওঁ খাবলৈ নৌ বহোঁতেই সি তেওঁর আসনর পাচফালে থিয় হয় ৩ আধ্যা

১ পাঠ

জুবিলাকর স্বভাৱ, বোধ ইত্যাদি।

জন্তুবিলাক মানুহর দরে সজীব, আরু সিহঁতর সুখ-দুখ বুজা শক্তি মানুহর সেই শক্তিকৈ কম নহয়। সিহঁতর এক প্রকার ভাষাও আছে, অর্থাৎ সিহঁতর মনর নানা ভাব ব্যক্ত করিবর নিমিত্তে বেলেগ বেলেগ শব্দ আছে। এই কারণ কোনো জন্তুৱে মাত মাতিলে তার জাতির অন্য জন্তুবে তার মনর ভাব বুজে। কিন্তু সিহঁতর মনর ভাব অতি অলপ; এতেকে মাতর সংখ্যাও কম; আরু সেইবিলাক মাত মানুহর মাতর বা বাক্যর দরে স্পষ্ট নহয়, তথাপি ডাঁটো- মইনা-শালিকা আদি কোনো কোনো চরাইয়ে মানুহর ভাষাও ভালকৈ ফুটাই কব পারে ।

জন্তুবিলাকর মানুহর দরে, অভ্যাসর দ্বারা বহলাব পরা বুদ্ধি নাই। সিহঁতর নিজর রক্ষা আরু বংশ বৃদ্ধির নিমিত্তে যিমানর আৱশ্যক, সেই পরিমিত বোধ মাথোন আছে। তার নাম “প্রাকৃত ব্যুৎপত্তি”+। সেই বোধ অলর, নেবাঢ়ে, নুটুটেও। এই কারণ এজাতির জন্তুরে আন এজাতির অবস্থা দেখি মানুহর দরে আপোনার উন্নতিসাধন করিব নোৱারে। এই নিমিত্তেই সৃষ্টির আদিরে পরাজন্তুবিলাকর অবস্থা একে দরেই আছে। ই বর আচরিত কথা, যে প্রতেক জাতির সকলো চরাইয়ে ঠিক এক দরেই বাহ সাজে, আরু সেই কার্য্য করিবলৈ শিকিব নেলাগে, স্বভারতে তার জ্ঞান পায়। যদি কাউরীর কণী এটা হাঁহর উমনিত জগাই পোৱালিটোক কেতিয়াও আন কোৱা দেখিবলৈ বা তার মাত শুনিবলৈ নিদি ঘরর ভিতরত রখা যায়, তেও সি আন কাউরীর দরে মাতিব, আরু বাহো সাজিব। এই বিষয়ত জন্তুবিলাক মানুহতকৈও শ্রেষ্ঠ; কিয়নো শিক্ষা নেপালে মানুহে কথা কবও নোৱারে। কিন্তু কাউরীয়ে টোকোরা চরাইর দরে সুন্দর বাহু সাজিবর শক্তি পোৱা নাই। এই কথাত হলে জন্তুবিলাক মানুহকৈ নিকৃষ্ট।

জন্তুবিলাকর অপত্য স্নেহ, যেতিয়ালৈকে পোৱালিবিলাকর রক্ষার নিমিত্তে অনিবার্য্যরূপে সি প্রয়োজনীয় হয়, তেতিয়ালৈকে মাথোন থাকে। আমি জানোইক যে, যি পর্যন্ত পোৱালিবিলাকে আপুনি চরি ফুরিব, আরু আপোনাক সক্ষা করিব পরা নহয়, তেতিয়ালৈকে মাকে সিহঁতর নিজর লগত রাখি প্রতিপাল করে, কিন্তু যেতিয়াই সেই প্রতিপালয় আৱশ্যক গুচে, তেতিয়াই সিহঁতর লগ এরাএরি হৈ এটাক আনটোরে নিচিনা হয়। আর অঙ্কবিলাক যি সময়ত অপত্য স্নেহ থাকে, তেতিয়া সি বর প্রবল; জ্ঞান-বুদ্ধি থকা মানুহরো সিমান নহয়। কোনো এজন ইংরাজী বৈদ্যে ব্যবচ্ছেদ-বিদ্যার অভ্যাস করোতে এজনী জীয়া কুকুরর পেট ফালিছিল, তাতে তাই যাতনাত মূৰ্চ্ছিত হৈ পরি থাকোঁতে তাইর পোৱালি এটা তাইর ওচালৈ অনা হল, তেতিয়া তাই পোৱালির গম পোৱা মাত্রেই তাইর যেন একো দুখ হোৱা নাই, এনেভাৱে পোৱালিটোক চেলেকিবলৈ ধরিলে, আরু তাক আঁতরাই লৈ গলতো তার ফাললৈ চাই শোকর ধ্বনি করি বেজার প্রকাশ করিছিল ।

জন্তুর চেনেহ পিতা-মাতারপরা সন্তানলৈ নামে; কারণ সেই চেনেহর অভাৱত পোৱালির রক্ষা হব নোৱারে, তাতে জন্তুর বংশ-রক্ষাত বিধিনি জন্মে। কিন্তু বংশ রক্ষার নিমিত্তে পোৱালিয়ে বাপেক-মাকক স্নেহ করার সকাম নাই; এই কারণ তার মরম ওপরলৈ নুঠে। 

কোনো কোনো জন্তরে এনে চতুরতা দেখুৱায় যে, মানুহরো তেনে আচরিত চতুরতা নাই; কিন্তু সিওর রক্ষা আরু পরচ বঢ়োত্রা কার্যার অঙ্গ মাথোন; এই দুই কথার বাহিরে সিহঁতর একো বোধ নাই বুলিলেও মিছা কোৱা নহয়। উটর খাই ঠাই আরব দেশ, সেই দেশর সরহ ভাগ বালিময়, তাত মুঠেই পানী নাই, এই কারণে সেই ঠাইত ফুরোতে উটে কেতিয়াবা কেইবা দিনো পানী নেপায়; এতেকে সি যি ফাললৈ যায় সেই ফালর কোনো পৰ্ব্বতর নিজরাত পানী থাকিলে সি বহুত দূরতে তার গন্ধ পাই তার ফাললৈ বেগ দিয়ে, আরু পানী পালে ভরিরে খোদালি বোকা করি খায়, তারে কিছুমান তার পেটত থকা জোলোঙ্গাত সুমাই থয়। উটে জানে, যে তার পাচত কেই দিনর মূরত সি আফও পানী পাব, তার নিশ্চয় নাই; এতেকে বোকা করি নেখালে শুদা পানী অতি শীঘ্ৰে ঘাম আদি হৈ ওলাই যাব, আরু পিয়াহত তার কষ্ট হব। এই দরে পানীর গন্ধ পোৱা শক্তি নথকা হলে আরবর বালিত উটর প্রাণ রাখাই টান হলহেঁতেন । ইওরোপর হাবিত পহু মরীয়া কুকুর অহার গম পালে, মাইকী শহাই তাইর যত পোৱালি থাকে, তার অলপ আঁতরত দেখা দিয়েগৈ; তাতে কুকুরে তাইলে খেদি গলে তাই এর টেঙ্গরাজিরে ঘুরি ঘুরি লগ্ন দিয়ে, কুকুরে কোনো প্রকারে তাইর লগ ধরিব নোৱারে, পাচত চল পালেই তাই এডোখর হাবিরপরা আন এডোখলৈ এনে বেগেরে জাঁপ মারে, যে কুকুরে তত ধৰিবই নোৱারে, আরু গন্ধো হেরায়। তার দ্বারা শহার আপোনার আরু পোৱালিরো রক্ষা পরে।

কোনো-কোনো জন্তুৱে উপকার আরু হিংসা মনত রাখিব পরারো প্রমাণ পোৱা যায়। কুকুরে তার উপকারী আরু গরাকীর প্রতি যে প্রগাঢ় ভক্তি দেখায়, সেয়ে সি উপকার মনত রাখিব পরার চিন। আরু কোনো এক সময়ত দিল্লী নগরত বাটে দি এটা হাতী লৈ যাওঁতে সি এখান দর্জীর দোকানত তার শুঁড় সুযোৱাত দর্জীয়ে বেজীরে তার শুঁড়ত খোঁচ মারি দিলে, পাচত সেই হাতী উলটি সেই বাটে যাওঁতে কিছুমান বোকা পানী সেই দজীর গালৈ এনেকৈ মারি দিলে, যে তার গোটেই গা আরু নিকা কাপোর একেবারেই বোকারে লিপ্ত হল। হিংসা মনত থকার ই প্রমাণ নহয় নে ?

২ পাঠ

অনুবিলাকর স্বভাৱ, বোধ ইত্যাদি (সমাপ্ত)।

প্রত্যেক জাতির জন্তুবিলাকর গার গঠন সেই জাতির স্বভাবর সম্পূর্ণ উপযোগী। হাতী ঘাঁহ খোৱা জন্তু; কিন্তু সি বর ওখ আরু তার ডিঙ্গি নিচেই চুটি হোৱাত অন্য জন্তুর দরে সি ধাহত মুখ দিব নোৱারি আহার করাত বর কষ্ট পালেহেঁতেন, এই কারণে সি অনায়াসে মুখলৈ আহার নিবর কারণে মানুহর হাতর নিচিনা শুঁড় পাইছে। উতনুৱা নামেরে এদুরর নিচিনা যে এবিধ জন্তু আছে, সি সদায় মাটির তলত থাকে। সেই ঠাই আন্ধার, তাত চকুর একো সকাম নাই, এই কারণে তার চকু ইমান ক্ষুদ্র আর অনুজ্জ্বল, যে আগেয়ে অনেকে তাৰু গোটেই কণা বুলি ভাবিছিল। আর সি চকুরে নেদেখে, এতেকে তার শুনা শক্তি বর প্রবল, সি ভালেমান আঁতরত শত্রু অহার শব্দ শুনি আপোনার রক্ষার উপায় করে। সি মাটির তলত গাঁত খানিব লাগে; এই দেখি তার আগলের নখবোর চোকা, আরু পতা বহুল। মাটির তলত দীঘল নেজর কোনো প্রয়োজন নাই, এই কারণ তার সেই অটো নিচেই চুটি। উতনুৱার যেনে স্বভাব, ভালে চালে তার গার গঢ় আন প্রকারর হোৱা যে নিচেই অনুচিত, তাক অনায়াসে বুজিব পারি।

প্রত্যেক জাতির জন্তুবিলাকর গার গঢ় সেই জাতির যেনে উপযুক্ত, সিহঁতর শরীরর ঢাকনীও তেনে। কোনো জাতির জন্তুর নোম, কোনো জাতির পাখি, কোনো জাতির কাঁইট, গার আচ্ছাদন; কিন্তু সেই ঢাকনী প্রত্যেক জাতি স্বভাৱর ইমান উপযোগী, যে যদি এবিধ জন্তুর আচ্ছাদন আন এবিধক দিয়া যায়, তেন্তে আত্মরক্ষা আর শীত নিবারণর সম্বন্ধে তার অবস্থা গোটেই বেয়া হব। চরাইবিলাকর আকাশত উরি ফুরা স্বভাব; এতেকে সিহঁতর সেই কার্য্যর সম্পূর্ণরূপে উপযোগী পাখি আছে। সেই পাখিবিলাক লঘু, আরু পাচ ফাললৈ মুখ করি জাঁপি দিয়া হৈছে। পাখির দ্বারা চরাইবিলাকর অকল শোভা মাথোন হয়, এনে নহয়, তার দ্বারা সিহঁত পানী, বতাহ আরু জারে বিন্ধিব নোৱরাও হয়। . বামর চরাইতকৈ পানীত সাঁতুরি ফুরা চরাইর বুকুর পাখি অধিক ডাঠ। এই কারণ তাক পানীয়ে ভেদিব নোৱারে। গীত-প্রবল ঠাইর অনেক জন্তুর গা মিহি, কোমল আর চুটি নোমেরে আবৃত, আরু জারকালি পরিলে সেই নোম ঘন হয়; তার দ্বারা সেইবিলাক জন্তু জাররপরা রক্ষা পরে। পাচে ঘাম কালি হলে সিমান ডাঠ নোম অকামিলা আরু কষ্টকর হয়; এতেকে সি আপোনা-আপুনি সরি পাতল পরে। মাংসাহারী জন্তুবোরতকৈ ঘাঁহ বা শস্য-খোৱা জন্তুবিলাকর স্বভাৱ অধিক নম্র, আরু পাচত কোৱা বিধ জন্তুর প্রথম বিধর দরে চোকা দাঁত, নখ বা ঠোঁট নাই; এই কারণ সেই বিধর জন্তু অধিক ভয়াতুর; তার প্রমাণ, বাঘর দরে ছাগ, চোকা দাঁত নখযুক্ত নহয়; কপৌ চরাইরো শেনর দরে জোঙ্গা ঠোঁট আৰু নখ নাই; এতেকে বাঘ আরু শেনতকৈ ছাগ আরু কপৌ অধিক নির্ভু আর ভয়াতুর।

চতুষ্পদী জন্মবিলাকর কিছুমান মাংসাহারী আরু কিছুমান তৃণ-ভোজী। পাচর শ্রেণীর জন্তুবিলাকর দুবিধ আছে, - এজাতি রোমন্থকারী অর্থাৎ সেই জাতিয়ে প্রথমতে খাঁহ পেটত ভরাই আকও উলিয়াই পাগুলি গিলে; গরু-ছাগ আদি এই জাতির জন্ম; আন জাতিয়ে ঘাঁহ একবারেই গিলে; হাতী, ধোঁয়া, গড় ইত্যাদি এই জাতিত পরে।

চতুষ্পদী অঙ্কু

৩ পাঠ

হাতী

হাতী পৃথিবীর সকলো চারি-ঠেঙ্গীয়া জন্মাতকৈ ডাগর। তার বৃহৎ আকার, বল আরু চতুরতা দেখি সকলো কালর মানুহ আচরিত হৈছে। যদিও সি সকলো চতুষ্পদী জন্তুতকৈ অধিক বলৱন্ত, তথাপি তার খং নুতুলিলে সি কারো অনিষ্ট নিচিত্তে। আচিয়া আরু আফ্রিকার হাবিত অনেক হাতী অতি নম্র আরু শান্তভাৱে থকা দেখা গৈছে। হাতীবিলাকর অনেকে লগ লাগি জাক পাতি থাকে, আরু গছর ডাল-পাত আহার করে। হাতী ঈষৎ ধোঁয়া-বরণেরে মিহলি মুগা বা কলা চানেকীয়া; কিন্তু কোনো-কোনো ঠাইত বগা হাতীও পোৱা যায়। হাতীবিলাকে বর জার আর বর ঘাম, দুইকো সহিব নোৱারে; এতেকে ছাঁয়াযুক্ত কাঠনি হাবিত থাকে, পানীত ধেমালি করিবলৈ ভাল পায়, আরু অনায়াসে সাঁতরিব পারে। হাতীর শুঁড় স্বভাবের এক আচরিত শিল্প কৰ্ম্ম। তার দ্বারা হাতীয়ে উশাহ লয়, আর আহার পানী মুখলৈ তোলে। এই আচরিত অঙ্গ অসংখ্যাত কোমল আর লেটেকা আজঠিরে নির্মাণ করা হৈছে। তার দুটা চুঙ্গা আছে, আরু আগর ভাগ চেপেটা, ঘূরণীয়া; সেই ভাগর মুখ ডোখর আঙ্গুলির দরে জোগা, তার দ্বারা হাতীয়ে অতি ক্ষুদ্র বস্তুকো ধরিব পারে। শুঁড়র পাচ ফাল অলপ চেপেটা, আগ ফাল গোল, আরু তাক সকলো ফাললৈ দোঁৱাব পারি; এই হেতুকে সি মানুহর হাত আরু বাহুর কার্যা করে। হাতীয়ে দাঁতর দ্বারা গছ, আরু শুঁড়র দ্বারা ডাল ভাঙ্গে। সি অনায়াসে শিকনি লয়, আরু এই কথাত সি আন অনেক চতুষ্পদী জন্তুতকৈ অধিক বুদ্ধিমান। লঙ্কা-উপদ্বীপত মানুহে হাতীক শিকাই শিল্প বা ইটার ঘর আদি সজা কার্যত নিযুক্ত করে। সি মানুহর দরে ইটা আরু শিল পারে, আরু সেই শিল আদি ভালকৈ খাইছে নে নাই জানিবর নিমিত্তে পাচলৈ হুহকি গৈ স্থির ভাবে চাই থাকে, আরু কোনো দোষ দেখিলে আগবাঢ়ি আহি শুঁড়েরে ঠেলি সেই শিল আদিক ভালকৈ খুৱাই দিয়ে।

৪ পাঠ

গড় এবিধ বলৱান জন্তু, কেৱল হাতীতকৈ মাথোন নীহ। সি প্রায় হাতীর সমান ডাঙ্গর, কিন্তু তার ঠেং চুটি; আরু কপালত এটা শিং থাকে, তার নাম খড়গ। তার ওপর ওঠ দীঘল, জোলা আর লন্দন; তার দ্বারায় সি আহার মুখলৈ সুমায়। তার ছাল ডাঠ, টকলা আরু কোঁচ খাই ভাঁপ যোৱা; টিকা আরু চেউরার ওপর-ভাগত সেই ছাল গার আন- আন ঠাইতকৈ অধিক জাপ খোত্রা। হালর বরণ মুগা, আরু তাক চোকা অস্ত্রেও সহজে ডেদিব নোৱারে। কোনো কোনো গঁড়র খড়গ, দুহাত দীঘল হয়। আর সি একেবারেই হাড়রপরা ওলায়। এই অস্ত্রর দ্বারা গঁড়ে হাতী আর বাঘকো খেদাব পারে, আরু তার ছাল ইমান টান যে, সিংহর নখো তাত নবহে; এতেকে কোনো জন্তুর পরা গঁড়র ভয় নাই ।

এই জন্তু আচিয়া আরু আফ্রিকার সিংহ, বাঘ আরু হাতী থকা ডাঙ্গর হাবিত থাকে। ঘাঁহ মাথোন তার আহার; এতেকে তার স্বভাৱ উগ্র নহয়। কিন্তু সি বর ভয়াতুরো নহয়, এই কারণ আন জন্তুরে তাক আক্রমণ করিলে সি লর নেমারে। যদিও গঁড়র খুঁজ করিবর শক্তি আছে, তথাপি সি নির্ব্বিধিনিরে থাকিব পারিলেই ভাল পায়, নোজোকালে কারো অপকার নিচিন্তে। অন্য জন্তুর অভক্ষা কাঁইটীয়া ঘাঁহ তার বর প্রিয়। পূর্ব্ব কালত কোনো-কোনো সময়ত, হাতীর দরে, গড়কো রণলৈ নিয়া হৈছিল; কিন্তু সি মাউতর বশ নহয়, এতেকে যুদ্ধর অনুপযুক্ত। এই জন্তুৰে অহা-যোৱা করা বাটত মানুহে খাল খানি তাক কেঁচা বন আর পাতেরে ঢাকি থয়, তাতে সি তালৈ যে ফান্দ পতা হৈছে, তাৰু বুজি নোৱারি সেই খালত পরাত ধরা যায়। আর কোনোৱে মাইকী আৰু পোৱালি একেলগে থাকোতে মাকক গুনীয়াই মারি পোৱালিটো ধরে। হাতীর দরে গঁড়রো একে বারতে এটা পোৱালি মাথোন জগে। আচিয়ার গড়র খড়গ একেটা মাথোন, কিন্তু আফ্ৰিকাত দুটা খড়গেরে এজাতি গঁড় আছে বুলিও শুনা যায় । ৫ পাঠ

ল-ঘোটক বা পানী ধোঁৱা ।

ই এবিধ চারি ঠেঙ্গীয়া বিচর জন্তু। তার গার পরিমাণ প্রায় হাতী বা গঁড়র সমান, গড়ো অপ্রাপ। কিন্তু তার ঠেং - নিচেই চুটি আরু মূর বর ডাঙ্গর। আফ্রিকা দেশর নদীবিলাকেই তার খাই নিবাসর ঠাই; কিন্তু আন কোনো ঠাঁইর নৈতো তাক পোৱা যায়। সি হাতী, গঁড়, গাছরি আরু ধোঁয়ার দরে চতুষ্পদী, স্তন পান করি ডাঙ্গর হয়, পেটর পরা ঘাঁহ উলিয়াই নেগাগুলে, আরু তার ঘুরা বা নখ আছে; এতেকে ইওরোপর অদ্ভুতত্ত্ব-বেত্তাসকলে তাক সেইবিলাক জন্তুর শ্রেণীত গণনা করিছে, আরু তার প্রকৃতি ধোঁৱাকৈ বেলেগ হোৱাতো ধোঁৱারে সৈতে একে শ্রেণীর জন্তু দেখি তাক “হিন্সপচ্” অর্থাৎ নৈর ঘোঁরা নাম দিছে। এই কারণ তাক আমি জল-ঘোটক বা পানী-ধোঁয়া বোলোঁহঁক ।

এই ভয়ানক জন্তুর গার জোখ দহ হাতকৈও অধিক। সি ওখয় কিছু অধিক চারি হাত; তার অকল মূরটোৱেই প্রায় আঢ়ৈ হাত, গার মের ছহাতকৈ অধিক । তার প্রতি- ভরিত চারিটা নখ থাকে, ছাল বর ডাঠ, আরু হিলের গুলীয়ে তাক ভেদিব পারে হয়; কিন্তু দার কোবে একো করিব নোৱারে। তার নোম নিচেই পাতল আরু ঈষৎ বগা। সি আন জন্মরে সৈতে যুঁজ করিবলৈ সম্পূর্ণ সমর্থ; তথাপি তার সমান কোনো শত্রুরে সৈতে বিরোধ করিবলৈ ইচ্ছুক নহয়। সি আফ্রিকার ডাঙ্গর নদীবিলাকত আলসার বশ হৈ কাল নিয়ায়, আর আহার বিচরাত বাজে তার আন কোনো কাম নাই। আহার বিচারিবর সময়ত তিনি বা চারিটা একেলগ হৈ পানীৰ তলত শারী পাতি খাপ দি থাকে, তাতে সোঁতর বেগত মাছ আহি সমুখত পরিলে তাক ধরি খাই থয়। পানী-ধোঁয়া সাঁতোরাত বর পাগত আরু কোনো সময়ত মাছ-আদি খেদিও ধরে। সি উশাহ লবর নিমিত্তে ওপরলৈ নুঠাকৈ আধা ঘণ্টাকৈও অধিক কাল পানীর তলত থাকিব পারে। তার আহারর নিমিত্তে বিমান লাগে, সিমান মাছ নেপালে সি ৰামলৈ গৈ ঘাঁহ আরু মানুহর শস্য খায়, কিন্তু ৰামত বেগাই ফুরিবলৈ সমর্থ নহয়। তার ছাল শিল যেন টান হোৱাত শসার গরাকীয়ে তার একো অপকার করিব নোৱারে। কিন্তু বামত সি বর ভীত, এই কথা জানি খেতিয়কে বর জুই ধরি ঢোল কোবায়, তাতে পানী ঘোঁরা ভয়ত বিচূৰ্ত্তি হৈ পলাই যায়। এই উপায়র সলনি তার গাত যা লগালে বা আন কোনো প্রকারে তাক দুখ দিলে তার সুপ্ত হৈ থকা সমুদায় শক্তি জাগি উঠে, আরু সি অতি উগ্র খঙ্গেরে তার আগত যিহকে পায়, তাকেই কাতি করি পেলাই পীড়া দিয়ে। তার খং নুতুলিলে সি বামর দরে পানীত নম্র ভাব দেখায়, আরু কেতিয়াও নৈত যাতায়াত করা নাএক আক্রমণ নকরে; কিন্তু কোনো প্রকারে তার খং উঠিলে নাও আরু নাবরীয়া দুইও সঙ্কটত পরে। বামত থাকোতে পানী-ঘোঁরাক কোনো শত্ৰুৱে খেদি আহিলে সি যদি তার কোনো প্রতিকার করিবর উপায় নেদেখে, তেন্তে লর মারি পানীত পরে গৈ৷ তার মাইকীয়ে বামত পোৱালি জগায়; আর একেবারতে এটাকৈ সরহ পোৱালি নহয়। এনে সময়ত তাই বর ভয়াতুর হয়, আরু অলপ হাই শুনিলেই লর দি পানীত পরে। তাইর পোৱালিয়েও তাইর পাচতে লরি গৈ পানীর আশ্রয় নয়। ৬ পাঠ

কেঁটেলা পছ।

এই জাতির জন্তুক আসাম দেশর সকলো লোকে দেখিছে। তার গোটেইটো গা বার আঙ্গুলমান দীঘল বহুত শলারে আবৃত। শলাবিলাকর মাজভাগ দুই মূরতকৈ শকত আরু কলা। সেইবিলাক চরাইর পাখির দরে পাচ ফাললৈ মুখ করি তার গাত গঞ্জে, আর তার খং উঠিলে থিয় হয়। কেঁটেলার সেই প্রবল অস্ত্র আনক আক্রমণ করাতকৈ তার গা রাখিবর নিমিত্তে অধিক উপযোগী; এতেকে সি কেতিয়াও আনলৈ খেদি নেযায়; কিন্তু আনে তাক আক্রমিলে সি কেৱল তার শলাবিলাক থিয়, আরু শত্রু ফাললৈ পোন করি রৈ থাকে, তারায়ে তার রক্ষা হয়। সি তার শলাবিলাক থিয় করিলে সিংহেও তালৈ সাহ করিব নোৱারে।

কেঁটেলা আর সাপর মাজত বর বৈর ভাব দেখা যায়। সিহঁতর দেখা দেখি হলেই যুঁজ নহৈ নেথাকে। সাপে আক্রমণ করিলে কেঁটেলার শলাবিলাক থিয় করি তার ওপরত বাগর দিয়ে, তাতে মহাবিষ সাপ অকল পরাস্ত হয়, এনে নহয়, সি প্রাণকো হেরুৱায়। এইবিধ জন্তুরে ঘাঁহ খায়, আরু শস্যর বর হানি করে। সিহঁত ভয়াতুর, মানুহর নিচিনা প্রবল শত্ৰুৱে আক্ৰমিলে বেগাই লর মারি গছত উঠে। কিন্তু পহুমরীয়াবিলাকর হাতর পরা রক্ষা পোৱা অসম্ভব। সিহঁতে তার মঙ্গহ খায়, আরু কাঁইটবিলাক শিল্প - কৰ্ম্মত লগায় ।

৭ পাঠ

নাহরফুটুকী- -बा।

এক ভয়ানক জন্তু। তাক আসামর প্রায় সকলো মানুহে দেখিছে, আর তারপরা ভয়ো পাইছে। এটা সামানा নাহরফুটুকীর গার পরিমাণ নাকরপরা নেজর গুরিলে আঢ়ৈ হাতকৈ অধিক; তার নেজ দুহাতর কিছু কম। এই জন্ম যদিও হিংসুক, তথাপি তার শরীরটো এনে সুন্দর যে, তাক দেখিলে এটা নিরীহ জন্তু যেন বোধ হয়। তার গার ওপর ভাগ অলপ হালধীয়া আরু প্রায় নাহর ফুলর আকৃতির বহুত ফুটেরে শোভিত, এই কারণেই তার নাম নাহরকুটুকী হৈছে। তার পেটর আরু বুকুর গার নোম আন-আন ডাগর নোমকৈ কিছু দীঘল আরু বগা। সি মাংসাহারী, এতেকে তার স্বভাব উগ্র; আরু সি মানুহ, গরু দুইকো নষ্ট করে। নাহরফুটুকী বাঘ আফ্রিকা আর ভারতবর্ষত থাকে, আরু আন ঠাইতো তাক পোৱা যায়। আফ্রিকার নাহরফুটুকীবিলাক বর ভয়ানক; সিহঁতে বনরীয়া জন্তু ধরিবলৈ নেপালে জাক পাতি হাবির পরা গাওঁর ওচরলৈ আহে, আরু মেরহাগ-গরু আদির সর্ব্বনাশ করে। কাক্সিবিলাকে খাল খানি নাহরকুটু- বাঘ ধরে, আর তার মঙ্গহ খায়। এই দেশর মানুহে হলে আপোনার মঙ্গহ নাহরফুটুকীক শোধাইয়েই সন্তোষ পায়। পক্ষী-জাতি

৮ পাঠ

উহ

উকহ কুরুরা জাতির চরাই, কিন্তু কুরুৱাতকৈ ডাঙ্গর আরু হিংসুক। এই চরাইর গার ভার প্রায় ছ সের। সি দীঘলে দুহাত; তার এখান ডেউকার মূররপরা সিখান ডেউকার মূরলৈ কিছু অধিক চারি হাত; ঠোঁট তিনি আঙ্গুল মান দীঘল, বেঁকা আরু বর চোকা। ইওরোপত গল্ডেন ইগিল (সোণর উকহ) নামেরে যি এবিধ উকহ আছে, সি আন সকলো বিধর উকহতকৈ ডাঙ্গর, আরু ভয়ানক। কিন্তু আমার দেশর উকহ সিমান ডাঙ্গর আরু হিংসুক নহয়। এতেকে আমি ইয়াত ঘাইকৈ ইওরোপর উকহর কথাকেহে লিখিম ।

উকহ প্রায়ে পৰ্ব্বত বা নির্জন হাবিত থাকে, আরু বর ওখ গছ বা পৰ্ব্বতর টিজত বাহ লয়। সি নির্জন ঠাইত থাকি বনরীয়া জন্তু ধরি খাবলৈ ভাল পায় হয়, কিন্তু অনেক সময়ত গাৱলৈ আহে, আরু অকলৈ থকা কেঁচুৱা লরা পালে থাপ মারি লৈ যায়। চারি ঠেঙ্গীয়া জন্তুর ভিতরত সিংহ যেনে, চরাইর ভিতরত উকহ তেনে। এতেকে তাক পক্ষীর রজা বুলিব পরা যায়। উকহে আপুনি যি জন্ম ধরে, তাকে হে মাথোন খায়; তার যিমান কি ভোক লাগোক, আনে মরা জন্তু বা শৱ সি কেতিয়াও নোহোৱে। তার আহারর যি অৱশেষ থাকে, সি তাক নেখায় ।

সকলো চরাইকৈ উকহ অধিক ওখলৈ উরে। তার দৃষ্টিও বর চোকা; কিন্তু ঘ্রাণ শক্তি যদিও তীক্ষ্ণ, তথাপি শগুণ সমান নহয়। সি বর চোকা নখেরে অনায়াসে রাজ হাঁহ আরু বগলী চরাই ধরি লৈ যাব পারে, আরু প্রায়ে মের-ছাগলীর পোৱালি আরু শহাপহু ধরি লৈ উরি যায়, আরু কেতিয়াবা কেতিয়াবা পহু পোৱালি আরু দামুরি কা মারি তেজ পিয়ে। উকহর যেতিয়া পোৱালি জগে, তেতিয়া সি অতি ভয়ঙ্কর হয়। সেই সময়ত তার মতা আর মাইকী, দুয়ো পারে মানে যত্ন করি পোৱালিক আহার যোগায়, আরু অকলৈ থকা কেঁচুৱা লরা পালে পোৱালিক খুৱাবলৈ থাপ মারি লৈ যায়। উকহক জাতি করা বর টান, নিচেই সরুতে আনি ঘরত পরিশ্রমেরে পুহিলেও সি বল নহৈ সঙ্কটজনক ভৃত্য হে হয়; কিয়নো সি চল পালেই তার শক্তি তার গরাকী বা তেওঁর লরাহোৱালীর অস্থিতে ব্যবহার করে। সি স্বভারতে অহঙ্কারী, আরু মুকলিমূরে থাকিবলৈ ভাল পায়; এতেকে তাক বাহিরলৈ নি চরাই ধরিবলৈ এরি দিলে সেই সূচলতে সি যে তার নিজর নির্জন হাবিলৈ উলটি নেযাব, তাত বিশ্বাস করিব নোৱারি। কিন্তু কেতিয়াবা সি তাক পোহোঁতার বর বশ হয়। এই কথা শুনা আছে, যে উকহ কেইবা সপ্তাহলৈকে অনাহারে থাকিব পারে, আর এশ বছরকৈও অধিক কাল জীয়াই থাকে।

২৯ পাঠ

মরা চরাই।

পরাক্রমর দ্বারা নহৈ শরীরর শোভার দ্বারা রাজত্ব পাব পরা হলে ময়ূর নির্বিবাদে চরাইবিলাকর রাজা হলহেঁতেন, কিয়নো গার শুৱনি গঢ়, আরু পাখির বরণত পক্ষীজাতির ভিতরত তাকে শ্রেষ্ঠ কেও নাই। সকলো জন্মর মাইকীকৈ মতা শুৱনি, এতেকে এই জাতির চরাইরো মতাবিলাক হে ধুনীয়া, মাইকীবিলাক দেখিবলৈ বর ভাল নহয়। তার ডাগর গা, মনোরম আচরণ, স্থির খোজ, শুৱনি গঢ়, সুন্দর বরণীয়া জ্বরে ভূষিত দূর আর চক্কর আনন্দ-জন্মোত্রা নিরুপম পাখি, এইবিলাকে মরা-চরাইক আমার আদরর অতি ওখ ভাগলৈ তোলে। কিন্তু তার সেই সুন্দর পাখিবিলাক চিরস্থায়ী নহয়, বছরি সরে। সেই সময়ত পুনরায় নতুন পাখি নগজে মানে হাবির পরা নোলায় ।

মরার পাচ-ফালর বিচিত্র পাখিবিলাক তার নেজ নহয়; কারণ সেইবিলাক তার টিকাত নগঞ্জে, পিঠিরপরা হে ওলায়; তার টিকাত থকা চুটি, মুগা আরু ঠরঙ্গা পাখিবিলাক তার স্বরূপ নেজ, আরু সেই দীঘল পাখিবিলাকর আধার। কিন্তু সিহঁতক তার নেজ বুলি গণনা করা নেযায়; পিঠিত গঙ্গা সেই দীঘল পাৰিবিলাকে হে নেজ নাম পায়। যেতিয়া মরাই তার সুন্দর নেজ থিয় করি চার্লি ধরে, তেডিয়া আগফালরপরা তার মূর আরু ডিজিত বাজে গার আন কোনো ভাগ দেখা নেযায় ৷ মরা-চরাই আচিয়া আরু আফ্রিকার হাবিত পোৱা যায়; কিন্তু ভারতবর্ষর চাপরিবিলাকত বিবোর মরা আছে, সেইবিলাক আনা সকলো ঠাইর সেই জাতির চরাইকে ডাগর আর শুৱনি পোৱালি হবর সময়ত মাইকী মরাই প্রত্যেক তৃতীয় বা চতুর্থ দিনত দুটামান কণী পারে। কণীবিলাক ফুটুকা-ফুটুকী। সমুদায় কণী পরা হলে তাই সাতাইশ বা ত্রিশ দিন উমনি লৈ পোৱালি জগায়। মরা চরাইয়ে বরকৈ উরিব নোবারে; কিন্তু গাছর ইডালরপরা সি- ডাললৈ বগাই বহুত ওখলৈ উঠে, আর তারপরা তার সেই ভেঁরীর নিচিনা উচ্চ আরু চোকা শব্দ করে। সিজার কালি কদাচিত হে মাতে; কিন্তু বারিষা মেঘর গাজনি শুনিলে মনে-মনে থাকিব নোৱারে।

১০ পাঠ

বরটোকোলা।

এই নামেরে এবিধ চরাই আমার দেশর সকলো মানুহে দেখিছে। সি বর ডাঙ্গর, চারি হাত-মান ওখ, আরু তার মূরটো টকলা; এই কারণেই তার সেই নাম হৈছে । তার ডিঙ্গির আগফালে এটা ছালর ডাঙ্গর মোনা থাকে, তার নাম টোটোলা। তাতে সি তার আহার সুমাই থয়। এই চরাই শুৱনি নহয় আরু মলিন, কিন্তু মানুহর বর উপকারী; কারণ সি সাপ আদি অপকারীজন্তুবিলাক খাই নষ্ট করে। সি শরো খায়, আরু হাড়বিলাক ডোখরে-ডোখরে গিলে। সরু চারি- ঠেঙ্গীয়াজন্তু আরু চরাইআদিও তার ভক্ষ্য, আরু চারি জন মানুহক যিমান মাছে জোরে, এটা বরটোকোলাই সিমানকৈও অধিক খাব পারে।

কোনো এক সময়ত এটা বরটোকোলা মাবি কার্টোতে তার টোটোলাত দহ আঙ্গুল মান দীঘল এটা দুরাকাহ আর এটা ডাঙ্গর মেকুরী পোৱা গৈছিল। এইবিধ চরায়ে মানুহলৈ বর ভয় নকরে; এতেকে পুহিলে সোনকালে জাতি হয়, আরু মাছ আদি দিলে ততালিকে তুলি লৈ গিলি পেলায়; আফ্রিকা- দেশর মানুহে তাক পবিত্র বুলি সৎকার করে। সেই দেশত এবার আইচ নামেরে এজন ইংরাজে বরটোকোলা মারিবর ইচ্ছা করি তাঁলৈ অনেক বার গুলীয়াইও বাঞ্ছা পূর্ণ করিব নোৱারিলে, তাতে সেই কার্য্য দেখা মানুহবিলাকে বর সন্তোষ পাই গণ্ডপ মারি কবলৈ ধরিলে যে, তেওঁ যিমান পারে, সিমান গুলী মারিও চরাইক বধ করিব নোৱারে।

স্মিথমেন নামেরে এজন ইংরাজে লিখিছে, যে কোনো এজন ভদ্রলোকে এই জাতির এটা চরাই পুহিছিল; সি মান পোহ লৈছিল, যে নিতৌ তার গরাকীর ভোজনর সময়ত তেওঁ খাবলৈ নৌ বহোঁতেই সি তেওঁর আসনর পাচফালে থিয় হয় গৈ, পাচে চল পালেই মেজর পরা মঙ্গহ আদি খোঁট মারি নি গিলি থয়, আরু এদিন সিজোৱা কুকুরা এটা নি গোটে গোটে গিলিলে।

সেই জন ইংরাজে আরু লিখিছে, যে সেই চরাইটো নিতৌ রাতি পুৱা দুই বা তিনি মাইলর আঁতরলৈকে উরি গৈ আহার বিচারি ফুরে; ফুরার পাচত এজোপা শিমলু গছর ওখ টিজত পরি চাই থাকে, আরু তার গরাকীর ভোজনর বস্তু খোৱা ঠাইলৈ অনা দেখিলেই ততালিকে আহি সেই বস্তু আনোতাবিলাকেরে সৈতে একে লগে ধরলে সোমাই আপোনার ভাগ লয়।

জল-জন্তু

১১ পাঠ

তিমি ।

ই এবিধ সাগরর জন্তু। স্থলচরবিলাকর ভিতরত যেনেকৈ হাতী, তেনেকৈ জলচরবিলাকর ভিতরত তিমি ডাঙ্গর জন্তু। কিন্তু হাতীও তার সমান নহয়। এটা সম্পূর্ণ বয়স পোৱা তিমি দীঘলে ৪০ বা ৪৫ হাত, আরু তার গার মের প্রায় ৩০ হাত হয়। তার শরীরর পরিমাণ যেনে বৃহৎ, বলো তেনে অপরিমিত। সি নেজেরে ছাটি মারিয়েই এখন নাও বুরাব পারে আরু তার বেগো শক্তির অনুরূপ। সাধারণ গতিত সি এক ঘণ্টাত দুই ক্রোশ যায়; কিন্তু ভয় পালে চারি ক্রোশ, আঠ ক্রোশ যাব পারে। কেতিয়াবা সি মূরটো পানীর তলত থৈ তার ঠরঙ্গা আরু বলৱান নেজ পোনেই ওপরলৈ তুলি এনে প্রবলরূপে পানীত আঘাত করে যে, তার শব্দ বহুত দূরলৈকে শুনা যায়। তেতিয়া সাগর ফেনেরে আরু আকাশ বাষ্পেরে পূর হয়। কিন্তু এই তিমি যদিও ইমান ডাঙ্গর আরু বলৱান, তথাপি তার গা-রক্ষা, বা শত্রুক আক্রমণ করিবর নিমিত্তে কোনো অস্ত্র নাই; এই হেতু সি এর ভয়াতুর; কোনো নাও অহা দেখিলেই তৎক্ষণাৎ বুর মারি পানীর তললৈ যায়; তথাপি সি পীড়া পালে ভয়ানক সাহ নেদেখাই নেথাকে, তেতিয়া যিয়েই তার সমুখত পরে, তাকে সি ভাঙ্গি চূর্ণ করে।

তিমিয়ে মুখেরে মাতিব নোৱারে, কিন্তু তার মূরত থকা নিশ্বাসর রন্ধ্রর দ্বারা বর উচ্চ শব্দ করে, আরু সেই রদ্ধরপরা বায়ু উলিয়াই বহুত ওপরলৈকে পানী মারি পঠিয়ায়। সেই পানী দূররপরা ধোঁৱা যেন দেখা যায়। তিমিক কেৱে নোজোকালে সি দুই মিনিট মান পানীর ওপরত দরক লৈ থাকে, আরুসেই সময়ত ন বার মান উশাহ লয়, পাচে পানীর তললৈ গৈ এনেই হলে দহ মিনিট-মান, আরু আহার বিচারিব লাগিলে প্রায় কুরি মিনিট থাকি আকৌ ওপরলৈ উঠে। সাধারণরূপে হলে তিমি পানীর বহুত তললৈ নেয়ায়; কিন্তু মাছ মরীয়াই ওভোতা কোলেরে খোঁচ লগালে প্রায় আধা ক্রোশ-মান তললৈ নামে। সি পানীর ওপররপরা তললৈ যাওঁতে প্রথমতে মূরটো দাঙ্গে, পাচে বুর মারি পিঠিখন ওখ করে, আরু নেজডাল ওপরলৈ তুলি একেবারে নেদেখা হয়। তিমিয়ে আহার বিচারোঁতে পানীর তলত মুখ মেলি বর বেগেরে সাঁতুরি যায়, তাতে তার সেই বহুল মুখত সোঁতর পানী সোমায়, আর তার লগত অনেক মাছ আর সাগরর আন ক্ষুদ্র জন্মও ভিতরলৈ যায়। পাচে পানীবিলাক দুই কোয়ারিয়েদি ওলাই পরে; কিন্তু জন্তুবিলাকক সি চেপি ধরি পেটলৈ সুমায়। মতা-মাইকীর প্রীতি তিমির যিমান প্রবল, আন কোনোজন্তুর সিমান দেখা নেয়ায়। কোনো এক সময়ত কিছুমান মাছমরীয়াই মতা মাইকী এছাল তিমির এটাক আঘাত করাত সেই পীড়া পোৱা ভিমিটোৱে তার নেজর একেটা কোষেরেই তিনটা মানুহ থকা এখান নাও নাবরীয়াবিলাকেরে সৈতে সাগরর গডলৈ পঠালে । পাচে আন এখান নাৱে খেদি আহি তাক আঘাত করাত সি প্রাণ এরি পানীর ওপরত ঢেলওপজা দিলে। এই কামত তার সঙ্গীটোৱে তার লগ নেরি পারেমানে তার সহায়তা করিছিল; কিন্তু তার প্রাণ হোৱা দেখি অভিনয় লোকেরে জীবনর আশা এরি সেই মরা তিমিটোর ওচরত দীঘল হৈ পরিল, আর তার দরেই আপোনারো প্রাণ হেরুৱালে।

গ্রীণলেণ্ড আৰু অন্যান্য ঠাইরো মানুহে বছরি ওভোতা কোলেরে খুঁটি বিস্তর তিমি মারে, আরু সেইবিলাকর তেল বেচি বহুত ধন পায়।

১২ পাঠ

উন্নগীয়া মাছ।

এই মাছ সাগরত থাকে। তার কাণ পাখি দুখান চরাইর ডেউকার সদৃশ, আর তার দরে কার্য্যো করে। প্রত্যেক খান পাখি নিচেই পাতল ছালেরে জোঁটা, সাতোটা কি আঠোটা খরিকার নিচিনা সরু আরু কোমল হাড়ের নির্ম্মিত, আরু তার কলর কাষত থাকে। এই পাখি দুখান সি আগ-পাচলৈ বরকৈ সঞ্চালিত করিব পারে; তারা সি আকাশলৈ উঠে আৰু পানীতো বেগাই গতি করে।

মাহেই মাছর ঘাই আহার। ডাঙ্গর মাছে ডাঙ্গর, আরু সরুবিলাকে নিচেই ক্ষুদ্র বা পোনা মাছ খাই জীৱন রাখে। ভরেডো নামেরে এবিধ মাছ আছে, সি উরণীয়া মাছর পরম শত্রু। ডরেডো প্রায় চারি হাত দীঘল; কিন্তু তার গা বর কত নহয়, আরু সি পানীত আচরিত বেগেরে চলিব পারে। উরণীয়া মাছরো গাকৈ দীঘল আরু বর দৃঢ় দুখান পাখি থকাত সি বেগত তার শত্রুকৈ হীন নহয়। এই কারণ যেতিয়া ডরেডোৱে ইয়াক খেদে, আরু ই তার হাতরপরা সারিবলৈ আচরিত চতুরতা আর তীব্র বেগেরে ইফালরপরা সিফাললৈ গতি করে, তেতিয়া সাগরত এটা মনোরম দৃষ্টি হয়। ডরেডোৱে ইয়াক খেদোতে ই যেতিয়ালৈকে পানীত বেগাই ফুরিব পারে, তেতিয়ালৈ আকাশলৈ নুঠে; কিন্তু প্রান্ত হৈ পানীত সাঁতরিব নোৱরা হলে হেঙ্গাল কুকুরে খেদা শহার দরে প্রাণ রক্ষার আন উপায় করে, অর্থাৎ আকাশলৈ উরা মারে। তার সেই দীঘল পাখি, যি পানীত সাঁতরোতে অকামিলা হৈছিল, এতিয়া তাক আন প্রকারে চলোৱাত, বিশেষ উপকারী হয়। এইরূপে সেই ভয়াতুর জন্তু ওপরলৈ উঠি দুশ কি তিনি শ গঞ্জর দূরলৈ উরি যায়। পাচে উরি ফুরোতে তার পাবি দুখান দুৰ্ব্বল হলে সি আরু উরিব নোৱরা হয়; কিন্তু তেতিয়া সি সাগরত চলিবলৈ নতুন শক্তি পায়, আরু পানীত পর বেগাই সাঁতরিবলৈ নতুন শক্তি পায়, আরু পানীত পরি বেগাই সাঁতরিবলৈ ধরে। তেতিয়াও তার শত্রুরে তার পাচ নেরে, তাতে সি পুনরায় উরে; কিন্তু এইবার সিমান উরিব নোৱায়ে, অলপ দূরলৈ গৈয়ে আকও পানীত পরে, পুনরায় উরে, শেষত প্রাপ্ত আরু নিরুপায় হৈ শত্রুর মুখতা পরে । 

অকল ডরেডো হে এই ক্ষুদ্র জীবর শত্রু, এনে নহয়; সকলো প্রাণীয়েই তার অহিতে মুঠ বন্ধা যেন দেখা যায়, কিয়নো সি সাগরত থকা শত্রুর হাতর পরা সারিবলৈ উরা মারিও রক্ষার উপায় নেপায়; কারণ তেতিয়া সি মাছর হাতরপরা এরাই চরাইর মুখত পরে। এইরূপে পানী আরু আকাশ দুয়ো ঠাইত পরিত্রাণ নেপাই, সি কেতিয়াবা আন শত্রুর হাতত আপোনাক সমর্পণ করে, অর্থাৎ জাকে জাকে জাহাজত পরি মানুহর আনন্দ বঢ়ায়, আরু ভোক গুচায় ।

পতঙ্গ

১৩ পাঠ

গাগিনী।

এই নামেরে এবিধ ফরিঙ্গর নিচিনা জন্তু আমার দেশর অনেকে দেখিছে; কিন্তু স্বভাৱর কথা নেজানি তাক কেৱল গছর পাত খোৱা ফরিং বুলি হে ভাবে। সি গছর পাত মাথোন খায়, এনে নহয়; সরু সরু পোক আরু মাখিও তার আহার। সি পোক ধরিবর কারণে প্রায়ে তার পাচ-ঠেঙ্গত ভর দি আগ-হাঁতোরা দুখান ওপরলৈ দাঙ্গি ঈশ্বরলৈ প্রার্থনা করার দরে থিয় হৈ থাকে; এই কারণ ইংরাজী ভাষাত তাক মেন্টিচ্ (Mantis) অর্থাৎ ভবিষ্যৎ বক্তা বোলে; আরু সেই কারণেই কোনো কোনো দেশর অস্ত্র মানুহবিলাকে তাক বর পবিত্র বুলি সম্মান করে, আরু নেমারে। আমার কোনো কোনো চহা মানুহে বারিষার আদিতে গাগিনী ধরিব পারিলে তাক সোধে “গাগিনী! পানী কিমান ?” তাতে তার হাঁতোরা দুখন বহলাই মেলিলে সেই বার পানী ডাঙ্গর আরু চপাই ধরিলে অলপ হব বুলি ভাবে । এইরূপে সিহঁতেও তার ওপরত ভৱিষ্যৎ বক্তার শক্তি আরোপিত করে।

গাগিনীয়ে কোনো পোক ধরিবর কারণে তালৈ লক্ষ্য করিলে যদি দুই তিনি ঘণ্টা অপেক্ষা করিব লাগে, তেও সি তারপরা চকু নুগুচোৱাকৈ খাপ লৈ থাকে, আরু সেই পোক আঁতরি গলে সিও উরি বা এন্দুর ধরিবলৈ যোৱা মেকুরীর দরে লাহে লাহে চুঁচরি যায়; পাচে পোকটো গলেই সি আগর দরে থিয় হয়। শুনা যায় যে, গাগিনীবিলাকে ইটোরে সিটোরে সৈতে যুঁজ করে, আরু যুঁজত জিকাটোরে হরাটোক খণ্ড খণ্ড করি ছিঙ্গি খাই পোলায়।

১৪ পাঠ

মৌ-মাখি

ই এটা স্বভাৱর আচরিত সৃষ্টি। মৌ-মাখির জিভা তার অতি লাগতিয়াল অঙ্গ। তার দ্বারা সি ফুলরপরা মৌ উলিয়ায়। সেই জিভা আন মাখির জিভার দরে ফোঁপোলা বা চুজার নিচিনা নহয়, সি গোটা; এতেকে মৌ-গুটিয়ে মৌ চুহি নুলিয়ায়, কিন্তু চেলেকি বা চুঁচি নিয়ে, তার দাঁতো আছে, তার দ্বারা সি ফুলরপরা মম গোটাই তার পাচ-ঠেঙ্গর তপিনাত থকা খোরোঙ্গত সুমাই থয়। পাচে তার শক্তির জোখায় মৌ আরু মম গোট খালে সি বাইলৈ উলটি যায়। মৌ- গুটির পেটটো ছটা আঙ্গঠি বা চক্রেরে নির্ম্মিত; সি সেই আদনিবিলাকর এটার তলত আনটো সুমাই গাটো চুটি করিব পারে। তার পেটর ভিতরত নাড়ী-ভুঁরুত বাজে মৌর জোলোজা, বিষর জোলোঙ্গা আরু শুংথাকে। মৌর জোলোঙ্গাটো ফটিকর দরে ফটফটীয়া; তাতে মৌ গুটিয়ে ফুলরপরা অনা মৌ থয়। তার কিছুমান সি রহযরাত ঢালি দিয়ে, অৱশিষ্ট ডাগ তার আহার হয়। বিষর জোলোজাত বিষ থাকে। মৌ গুটির শুং দুডাল, সিহঁত এটা জোঙ্গামুখযুক্ত ফাঁকর ভিতরত থাকে। দুইওটা শুরুর মুখ বরশীর শুন্দর দরে চোকা আর ওভোতা। মৌ গুটিয়ে কোনো জন্তুর গাত কামোরোঁতে প্রথমতে ফাঁকর আগটোরে দুটা ফুটা করে, সেই ফুটাত শুং দুটা সুমাই দিয়ে, তার পাচত বিষয় জোল ঢালি দিয়ে। এই কারণেই তার পীড়া অসহ্য হয়। কেতিয়াবা শুং দুডাল সেই ফুটাতে লাগি রয়, তেতিয়া ঘার বেদনা বর প্রবল হয়, আর মৌ গুটিরো প্রাণ যায়। এই শুং নথকা হলে মৌ-মাখির নিজ পরিশ্রমের ফলর রক্ষণ আর উপভোগ দুষ্কর হলহেঁতেন৷

এই ক্ষুদ্রজন্তুবিলাক কিছুমান নিরূপিত নিয়মর অধীন মাথোন, এনে নহয়, সিহঁত উদ্যোগী, পরিশ্রমী, সাৱধান আরু স্বার্থপরতা শূন্য। সিহঁতর প্রত্যেকে যি বস্তু গোটায়, তাক সকলোরে আহারর নিমিত্তে সাঁচি থোৱা হয়; আরু সিহঁতর বাহত যি শিল্প-কৌশল দেখা যায়, তার দ্বারায় সিহঁতে সিহঁতর সন্তানবিলাকর উপকারর চেষ্টা মাথোন করে। মৌ গুটিবিলাকে ফুলরপরা যি মৌ আনে, তাক গিলি জীর্ণ করে; পাচে পেটর পরা উলিয়াই তার দ্বারা বাহ সাজে। কাম করিবলৈ আরম্ভ করোতেই সিহঁত চারি জাক হয়। এজাকে বাহুর নিমিত্তে হজ-গড় বিচারি ফুরে, আন এজাকে বাহুর তলভাগ আরু খোঁটালীবিলাক সাজে, তৃতীয় জাকে সেইবোরর ভিতরফাল পরিষ্কৃত আরু মিহি করে; আর চতুর্থ জাকে কাম করে তাবিলাকলৈ আহার বিচারি আনে। এই সময়ত মৌ গুটিবিলাকে সিহঁতর কাম প্রায়ে সলায়, অর্থাৎ যিবিলাকে ঘরত কাম করে, সেইবিলাক বাহিরলৈ যায়, আর আহারাদি বিচারি ফুরোঁতাবিলাক ঘরর কামত নিযুক্ত হয়। ইঙ্গিতর দ্বারা এটা মৌ গুটির মনর ভাব আনটোৱে বুদ্ধে; কোনো এটার ভোক লাগিলে যারপরা সি আহার পাব পারে, তার ফাললৈ জিভা মেলে, তাতে সিটোৱে তার মৌ-জোলোঙ্গারপরা টোপাচারেক মৌ তার মুখত পেলাই দিয়ে, তারেই তার ভোক গুচে। সিহঁতে ইমান পরিশ্রম করে যে, এক দিনর ভিতরতে তিনি হেজারমান খোঁটালী থকা বাহু এটা সাজি এটায়। খোঁটালীবিলাক হু-চুকীয়া, গাত গা লগা, আরু আটাইবোর ঠিক একে সমান। মৌ গুটি বিলাকক, বাহুত কাম করি থাকোঁতে, পোনেই দেখিলে আটাইবোরে ওপরাউপরি হৈ হুলস্থুল করি থকা যেন হে ৰোধ হয়। কিন্তু ডালকৈ গমি চালে দেখা যায় যে, প্রত্যেক মাখি একোটা নির্দিষ্ট কামত নিযুক্ত আছে, আরু বর পরিশ্রমেরে সেই কাম কৰিব লাগিছে।

সিহঁতে পোৱালির কোঠালীবিলাক বর সাৱধানে সাজে। বাহুত যে এবিধ নিষ্কর্ম্মা বা ভদ্র মৌ গুটি থাকে, সিহঁতর কোঠালীবিলাক আনবিলাককৈ বহল, আরু মৌ-কুঁবরী অর্থাৎ সিহঁতর অধিপতি মৌ-গুটিটোর ঘরটো কলোকে ডাঙ্গর । 

৪ আধ্যা

১ পাঠ

বৃক্ষাদির স্বাভাৱিক গুণ।

বৃক্ষ, গুল্ম ইত্যাদিক স্থাবর বা অচল বোলা যায়। কিয়নো সিহঁতে এঠাইরপরা আন এঠাইলৈ যাব নোৱারে; কিন্তু গমি চালে গছ-প্রভৃতিরো কোনো-কোনো প্রকারর গতি দেখা যায়। গাছর শিপা মাটির তললৈ সোমাওঁতে যদি বাটত শিল, ইটা বা আন কোনো টান বস্তুর লগ, নাইবা আন কোনো প্রকারর বাধা পায়, তেন্তে সি পোনবাট এরি এফলীয়া হৈ যায়৷ এজোপা গছরপরা, বা গছ নথকা ঠাইত এডাল গোঁজ মারি তারপরা, অলপ আঁতরত এটা লতার পুলি রুলে সি আপোনা-আপুনি সেই গছ বা গোঁজর ফাললৈ ঢাল লৈ তাত বগাই উঠে গৈ, আরু কোনো গছ ঘরর ভিতরত বলে সি যি ফালে গবাক্ষ বা ঘরলৈ পোহর আরু বতাহ সোমোৱা বাট থাকে, সেই ফাললৈ ভাঁজ লয়, আরু গাছর পুলি এটা তললৈ দোৱাই থলে তার আগ ফাল ক্ৰমে পোন হৈ থিয় হয়। কোনো কোনো গছর পাতবিলাক সূর্য্যর গতি অনুসারে ঘুরে রাতিপুৱা সিহঁতর ওপরর পিঠি পূর্বকালর সমুখ হয়, দুপরীয়া দক্ষিণলৈ ঘুরে, আরু বেলি মার গলে পশ্চিম-ফাললৈ মুখ করে। কোনো কোনো গছর পাতবিলাকে অবিচ্ছেদে গতি করে, অর্থাৎ সিহঁতর কেতবিলাক তললৈ নামে; কেতবোরে আকও সিহঁতর ধারিবোর পকাই চারিওফাললৈ ঘুরি থাকে। কোনো-কোনো গছর ফুলবিলাকে গধূলি নিয়র পরিলে আপুনি জাঁপ যায়, আর রাতিপুৱা সূর্য্যর গোহর পালে মুকলি হয়; আরু কোনোবিলাকর স্বভাৱ ইয়ার সম্পূর্ণ বিপরীত।

গছে শিপার দ্বারা মাটির রস টানি আহার করে, তার দ্বারা তার প্রাণ রয়, আরু তাক নেপালে মরি যায়। অকল শিপারে নহয়, পাতেরেও গহবিলাকে আহার করে। *“অঙ্গারাম্নক” নামেরে যে এবিধ ভাপ ওলায়, তাক গহর পাতবিলাকে আকর্ষণ করে, আরু তার দ্বারা গছে বৃদ্ধি পায়। ই বর আচরিত কথা, যে সকলো গছে মাটিরপরা রস টানে, কিন্তু প্রত্যেক বিধে নিজর গুণর তুলা, আরু আপোনার নিমিত্তে উপযোগী রস মাথোন লয়। যদি একে ঠাইতে এজোপা কুঁহিয়ার আরু এজোপা নিম রোৱা যায়, তেন্তে দুইও সেই একে মাটিরেপরা রস আকর্ষণ করিব; কিন্তু তথাপি প্রথম বিষ মিঠা, আরু দ্বিতীয় বিধ তিতা হব। কোনো বিধ গছর গুটির পরা, কোনো বিধর ডালরপরা বংশ বৃদ্ধি হয়, কোনো বিধর আকৌ পাত আরু ফুলর পরাও পুলি গজে। “দুপরীয়া টেজা” নামেরে যে এবিধ টেঙ্গা পাতেরে ক্ষুদ্র গাছ আছে, তার পাত মাটিত পরি থাকিলে তার চারিও দাঁতির পরা পুলি ওলায়; আর ফুলরপরা যে গছ গজে, নাজী-ফুল তার প্রমাণ।

যেনেকৈ গৰ্ভত স্থিতি ললেই লরাক আহার লাগে, তেনেকৈ বৃক্ষাদির অঙ্কুরকো উৎপন্ন হোৱা মাত্রকেই আহার লাগে। গুটির ভিতরত যি কণ থাকে, তারপরা অঙ্কুর হয়; কিন্তু পোনেই উৎপন্ন হৈয়েই সি মাটির পরা রস টানি আহার করিব নোৱারে; এই কারণে সি সেই শক্তি নেপায় মানে, গুটির ভিতরর শাহটোর দ্বারা প্রতিপালিত হয়, সেইয়ে তার আহার; এতেকে গুটিরপরা গাজ ওলালেই শাহটোৱে চেনির গুণ পাই তার আহারর উপযুক্ত হয়; কিন্তু সি অধিক দিন সেই আহারত নির্ভর নকরে, অলপতে তার শিপা মাটিত সোমাই রস টানিবলৈ ধরে আর তার দ্বারা সি ৰাঢ়ি যায়।

২ পাঠ

এই সুন্দর গছ ভারত বর্ষর অনেক ঠাইত পোৱা যায়। তার সার নাই আরু কাঠো অকাঠী; কিন্তু তার ডাল বিলাক বর ওখ হয়; আরু বিস্তর দূর জোরে। অন্যান্য গছর দরে বুঢ়া হলেও এই গছর ক্ষম নাই; বরং সি ক্রমে বৃদ্ধি হে পায়; এতেকে বহু কাল জীয়াই থাকে। ইয়ার প্রত্যেক ঠালে শিপা মেলে। সেই শিপা প্রথমতে সূতার নিচিনা সরু; কিন্তু__ লাহে-লাহে ডাঙ্গর আরু দীঘল হৈ মাটিত লাগে ; পাচে কিছু কালর মূরত সিও জোপা গছ হৈ ডাল-পাত ধরে। সেই ডালরপরাও সেই দরে শিপা ওলাই সিও গছ হয়। এই রূপে যেতিয়ালৈকে ই মাটির রস পায়, তেতিয়ালৈকে ক্ৰমে বাঢ়ি গৈ থাকে। হিন্দু-শাস্ত্রর মতে ই এবিধ পবিত্র গছ। তার চিরস্থায়িতা, বহুব্যাপী শাখা-প্রশাখা আরু সূর্য্যর তাপে ভেদিব নোৱরা শীতল ছায়ার নিমিত্তে রোধ হয়, পূর্ব্ব কালর হিন্দুবিলাকে তাক সম্মান করিছিল, সেই সম্মান' আজিলৈকে গুচাই নাই ।

হিন্দু-স্থানত কবির বড় নামেরে এজোপা বর ডাঙ্গর বট্‌-গছ আছিল। তার যাই গা-গছবিলার চারিও ফালর জোখ বার শ বাসত্তর হাত আছিল। সেইবিলাকর শিপা নখরা ডালবোরে আর অনেক দূর ব্যাপিছিল। এই গাছর খাই গার সংখ্যা তিনিশ-পঞ্চাশ, আরু সরু, কিন্তু মাটিত শিপা ধরা গার লেখ তিনি হেজারতকৈও অধিক আছিল। আর সেইবিলাকর প্রত্যেক জোপার ডালরপরা আকৌ নকৈ শিপা ওলাইছিল । শুনা আছে, যে তার তলত সাত হেলার মানুহে বিশ্রাম করিবলৈ প্রচুর ঠাই পাইছিল। হাইঠা, পর্যুমা, ইআদি অসংখ্য চরাই আরু বাদুলিয়ে তাত অঞ্চল জিরাইছিল, এনে নহয়, তার গুটি খাই ডাঙ্গর লোকসকলর বহু-ধন-ভগা বড় রস, ভোজনর সমান তৃপ্তি লভিছিল। এতিয়া সেই গছ বর্তমান আছে নে নাই, কব নোৱারি।

৩ পাঠ

এই বিধ গছর খাই ঠাই আরব দেশ। তার গুটিবিলাকক ভাজি গুড়ি করি সেই গুড়ি তপত পানী আরু গাধীর চেনিরে মিহলাই চাহর দরে খোৱা যায়। তার গুণ তপত; এতেকে সি তেজর ভাপ অধিক করি জার গুচায়।

ককি গছ প্রায় পাঁচ হাতমান ওখ হয়; কিন্তু কেতিয়াবা তাৰু আঠ হাত ওখ হোৱাও দেখা যায়। তার গার বের হ কি পোার আঙ্গুলমান, ছাল টৎ বগা আরু নিষদ্ধ। গোটেই গারপরা ডাল গুলার; আর একালে যি ঠাইত এটা ডাল হয়, সিফালে ঠিক সেই ঠাইত আন এটা গল্পে। তার পাতবিলাকো যোর-যোর, পাতর গুরির পরা সুগন্ধি বগা ফুল গুলায়। ফুলবিলাক সরি গলে গুটিবোরে দেখা দিয়ে। সেইবিলাক প্রথমতে সেউজীয়া থাকে, পাচে পাকিলে রঙ্গা পরে। 1 একে জোঁটোতে দুই, তিনি বা ততোধিক গুটি হয়। প্রত্যেক গুটিত এটা ডাঠ বাকলির ভিতরত এখান পাতল হালেরে ঢকা দুটা শাহু থাকে, সেই দুটারে নাম কফি। প্রায়ে যে (বহাগ-জেঠ) মাহ তার গুটি সংগ্রহর কাল। সেই সময়ত তলত কাপোর পাত্তি গছবিলাক জোকারি দিয়া যায়; পাচে সেই কাপোরর ওপরত সরি পরি গুটিবিলাক ঢারিত মেলি শুকাই এডোখর গোটা কাঠ বা লোরে ডলিলে তার ডাঠ বাকলিবিলাক ভাগি যায়। তার গুটিবোর পাচত পুনরায় রদত্ত দি চালিলে সেইবিলাক ব্যবহারর উপযুক্ত হয়।

৪ পাঠ

कुँজিয়ার।

নল-খাগরিকে আদি করি অসার, গাত গাঁঠি থকা আরু দীঘল পাত-যুক্ত গছবিলাকেই তৃণ। এতেকে কুঁহিয়ারো তৃণর লগতে গণ্য। যি কুঁহিয়াররপরা আমি অতি সোৱাদ আরু মনোরম রস পাওঁ, আরু খাই পরম তৃপ্তি লড়োহঁক, সি চাপরি হাবিত বা নৈর দাঁতিত আপুনি গজা খাগরিরে সৈতে একে জাতির গাছ। কিন্তু খাগরির ছাল টান আরু নীরস আরু তার মজ্জাতো একো রস নাই; কুঁহিয়ারর ছাল কোমল আর ভিতরর ভাগ রসাল। তাক সারুরা মাটিত রুই ভালকৈ আপডাল করিলে আরু পূরঠ নৌ হওঁতেই নেকাটিলে সি ডাঙ্গর আরু অধিক রসাল হয়।

কুঁহিয়ার, তার পাত আরু ফুল-ধরা আগটোক এরি, প্রায়ে চারি হাত-মান দীঘল হয়; কেতিয়াবা তাক ইয়াকৈও দীঘল হোৱা দেখা যায়। তার গাত অনেক গাঁঠি বা জোরা থাকে। সেইবোরর পরাও পাত ওলায়; কিন্তু কুঁহিয়ার ডাগর “হৈ গলে এইবিলাক পাত সরি যায়। গাঁঠিবিলাকত পাত থকাই কুঁহিয়ার ডাল বা পূরঠ নোহোৱার চিন। কুঁহিয়ার পুরঠ হলে অলপ হালধীয়া হয়। তেতিয়া তাক কাটি কুঁহিয়ার শাললৈ নিয়া যায়। সেই শালত চেপিলে তার যি রস গুলায়, চেনি করোতাই তাক সীহর নলাই দি বোৱাই চেনি-শাললৈ নিয়ে, আরু তাত অঁকাত পাগি পরিষ্কার করিলে সি চেনি হয়। আমার দেশর মানুহে চেনি করিব নেজানে, মলিন গুড় পাগিয়েই সন্তোষ পায়।

৫ পাঠ

কাঠফুলা এবিধ সোপসুদীয়া উদ্ভিদ। সি প্রায়ে গছ বা পচা কাঠরপরা উৎপন্ন হয়; এতেকে সেই নাম পাইছে। তার অনেক উপজাতি আছে। সেইবিলাকর কোনো জাতি রসাল আরু সারুরা মাটি বা গোবর আদিতো জন্মে। কোনো জাতি কাঠ-ফুলার আকৃতি ঠিক ছাতির নিচিনা; কোনো জাতির মূরটো গোলাকার, আর তার ভিতরত কিছুমান ধূলি থাকে। কিছুমানর ওপরর ভাগ মঠর কলচীর দরে অলপ জোঙ্গা। কোনো বিধ ইমান পাতল আরু মৃদু যে, হাতেরে ধরিলেই দ্রব্য হৈ যায়। অনেক বরণর কাঠ-কুলা আছে, কিন্তু সরহ ভাগ বগা।

কাঠফুলা অনেক সভা আর অসভ্য দেশর মানুহর খাদ্য বস্তু, আরু তার কোনো কোনো জাতি খাবলৈ ভাল; কিন্তু অনেক বিধ বিহু, সেইবিলাক খালে মানুহ বলিয়া হয়। হিন্দুশাস্ত্রে যে কাঠফুলা খাবলৈ মানা করিছে, অনুমান হয়, তার বিষাক্ত গুণেই সেই নিষেধর কারণ। আগেয়ে আমার দেশর অন্যান্য নীচ জাতিত ৰাজে আনে তাক ব্যবহার নকরিছিল; কিন্তু এতিয়া ইংরাজবিলাকর আর্হি লৈ উচ্চ জাতির কোনো কোনো ভদ্রলোকেও তাক তেওঁলোকর খাদ্যদ্রব্যবিলাকর ভিতরত লেখিবলৈ ধরিছে। কাঠফুলা ব্যবহার করাত বর সাৱধান হব লাগে; কারণ বরণ যা গঢ়র দ্বারা তার কোন জাতি খাদ্য, আরু কোন জাতি অখাদ্য, তাক নিশ্চয় করা টান; কেবল গন্ধ আর আশ্বাদর দ্বারাহে তাক বুজিব পরা যায়। যি কাঠফুলার সোৱাদ মুখত ভাল লাগে, সি অপকারী নহয়, কিন্তু সি যদি বেয়া গোন্ধায় বা তার আস্বাদ তিতা, কেহা বা জিভাত কষ্টদায়ক হয়, তেন্তে সি বিহ, তাৰু খোৱা অনুচিত।

উদ্ভিদ তত্ত্বজ্ঞ ইংরাজী পণ্ডিতবিলাকে কয় যে, বগা বরণীয়া, আরু মুকলি ঠাইত গজা কাঠফুলাবিলাক প্রায়ে অপকারী নহয়; কিন্তু কাঠনির চেঁচুকত হোৱা বিবর্ণ, গন্ধক-বরণীয়া, ভেজী রঙ্গা বা সেউজীয়া কাঠফুলা বিছ। তাক খোৱা উচিত নহয়।

চাইবেরিয়া দেশত এজাতি কাঠফুলা আছে; আসাম আর চীনদেশর মানুহবিলাক যেনে কানির ভক্ত, সেই দেশর মানুহবিলাক তার তেনে ভক্ত; আরু মতা, তিরোতা, দুয়ো তাক ব্যবহার করে। তার রাগী ফটিকার নিচিনা, তাক খোৱার এক ঘণ্টামানর সূরত তার রাগীয়ে ধরে, আর প্রথমতে মনত বর রং লগায়। পাচে ক্রমে মুখ রঙ্গা পরে, মূর কঁপে, জিভাই প্রলাপ বকে, আরু শেষত চেতনা নষ্ট হয়। চাইবেরিয়ার মানুহে তাক মোহারি ধরি করি নোচোধোৱাকৈ গিলে, আরু কয় যে, চোবালে সি পেটত পীড়া করে। এটা ডাঙ্গর আরু দুটা সরু কাঠফুলা এইরূপে খালে অতি আনন্দদায়ক রাগী লাগে, আরু দিনটো থাকে; এই পরিমাণতকৈ অধিক খালে কষ্ট জন্মে। তাক খাই পানী খালে রাগী প্রবল আরু সিজাই খালে কম হয়।

ডাক্তর চেবচ চাহাবে, তেওঁ লিখা “ভৈষজ্যস্মৃতিতত্ত্ব” *নামেরে পুথিত লিখিছে, যে বঙ্গদেশত এজন ইংরাজে এদিন রাতিপুৱার ভোজনত কাঠ ফুলার আঞ্জা খাই উন্মত্ততার সম্পূর্ণ চিন দেখাইছিল, অনেক চিকিৎসা করাত হে ভাল হল। এতেকে কাঠফুলার ব্যবহারত বর সাৱধান হোৱা উচিত ।

৬ পাঠ

ধাতুর আর আনত জন্মা আন বছর ব্যবহার (সমাপ্ত)।

সোণ, রাং, রূপ, তাম, , সীহ, লো, কাঁহ, পিতল, তীৰা এই সকলোবিলাকক ধাতু বোলা যায়। এইবিলাকর প্রথম ছ বিধ মূল ধাতু আর আকরত হয়। শেষর তিনি বিধ মানুহে নানা কাৰ্য্যত লগাই আহিছে, আর তারা মানুহবিলাকর সুখ-বৃদ্ধিও হৈছে। সিহঁতর কোনো বিধ শরীরর শোডার নিমিত্তে অলঙ্কার গঢ়োৱাত, কোনো বিধ কাঁহী বাটি করাত আর কোনো বিধ দা-কটারী আদি অস্ত্র নির্মাণত ব্যৱহৃত হয়। সেইবিলাকর এবিধর অভাৱ হোৱা হলেও কিঞ্চিৎ পরিমাণে আমার সুখ কমিলহেঁতেন। সিহঁতর ভিতর থাক যিমান পাবলৈ টান, তার মূল্য ान অধিক। সকলোকৈ সোণ অধিক দুষ্প্রাপ্য, এতেকে সি অধিক মূল্যৱান। সোণ, রূপ আরু তাম, এই তিনি বিধ কেৱল অলঙ্কার গঢ়ি গা-সজোৱাত আৰু লোটা-বাটি গঢ়াত মাথোন ব্যবহৃত হয় এনে নহয়, রজার আব্বারে চাকরি করি মোহর মরা হলে সিহঁত ধন বা টকা হয়। সেই টকা পরিবর্তনর ঘাই উপায়; অর্থাৎ তাক দি আমার আবশ্যকীয় সকলো বন্ধ আমি পাওঁহঁক, এতেকে সিহঁত বর লাগতিয়াল ধাতু। কিন্তু ভালকৈ গমি চালে জনা যায়, যে সকলো ধাতুওঁকৈ লো মানুহর অধিক প্রয়োজনীয়, আরু মানুহর উন্নতি আৰু সভ্যতা বঢ়োৱাত পৃথিবীর সমুদায় বন্ধকৈ সি অধিকরূপে সহায় হৈছে। এই একেটা বন্ধুর দ্বারায়ে মানুহে অতি মহৎ আর কঠিন কার্যকো অনায়াসে করে। লো নোহোৱা হে বীরর বীরত্ব, শিল্পকারকর শিল্প-কৌশল, খেতিয়কর খেতির উদ্যোগ, এই সকলো নিষ্ফল হৈ মানুহ এতিয়াও অসভ্য অৱস্থাতে পরি থাকিব লাগিলহেঁতেন। লোর গুণ মানুহে অতি প্রাচীন ফালতে বুজার, আৰু তেতিয়াই তাক নানা কার্য্যত লগোৱার প্রমাণ পোৱা যায়। কিন্তু ইমান গুণ থাকোতেও সি সোণর পরে চক্‌চকীয়া আৰু দুষ্প্রাপ্য নহয় দেখি, তার মূল্য কম। খুর তরোয়াল-আদি চোকা অস্ত্ৰবিলাক গঢ়া তীখাও পরিষ্কার করা লো মাথোন।

৭ পাঠ

ধাতু, আর আকরত জন্মা জ্ঞান জ্ঞান বছর ব্যবহার (সমাপ্ত)

আকরত হোৱা আনবিলাক বস্তুর ভিতরত হীরা বর উজ্জ্বল আরু বহুমূল্য; কিন্তু শরীরর শোভা বঢ়োৱাত বাজে সি আমার অতি অলপ কামত হে লাগে; প্রয়োজনলৈ চাই বস্তুর মূল্য নিরূপণ করিলে হীরাতকৈ নাগ-মাটি অধিক মূল্যৱান হব; কারণ লোর দরে সিও এটা বর প্রয়োজনীয় বস্তু। আরু সভ্যতার বৃদ্ধির লগে লগে তার আৱশ্যক বাঢ়ি গৈছে। এতেকে এতিয়া সুসভ্য দেশবিলাকত নাগ মাটি বর লাগতিয়াল হৈছে। শিল্প-কর্ম সভ্যতা বঢ়োৱার এটা খাই উপায়; বাষ্পযন্ত্র সেই শিল্প-কার সহায়, নাগ মাটি নহলে বাষ্প-যন্ত্র চলোৱা টান; অতএব নাগ মাটিয়ে মানুহর সুখ আরু সভ্যতা বঢ়োৱাত বহুত সহায়তা করিছে। যি ডাগর গাড়ী আর ডাগর জাহাজের দ্বারা বর দূরণি ঠাইও নিচেই ওচর 'হৈছে, নাগ-মাটির অভাৱ হোৱা হলে সেই দুইকো সুচারুরূপে চলোৱা টান হলহেঁতেন, অধিক কি? বিলাতী কাপোর যে আমি ইমান সন্তাকৈ পাওঁইক, নাগ-মাটি তার যাই কারণ; কিয়নো বিলাতত কাপোরবোরা যন্ত্র ডাপর দ্বারা চলোৱা যায়; নাগ-মাটিয়ে সেই ভাপ উৎপন্ন করে; এতেকে নাগ-মাটি নোহোৱা হলে সেই যন্ত্ৰ চলোৱাত অসুচল হৈ বিলাতী কাপোর মরগ হলহেঁতেন । এইবিলাক কারণর নিমিত্তে নাগ-মাটি যে বর লাগতিয়াল বস্তু, তাক অনায়াসে বুজিব পারি।

নাগ মাটির পাচতে চুম্বক এটা বর প্রয়োজনীয় বস্তু; কারণ চুম্বকে কেৱল লোক আকর্ষণ করে মাথোন, এনে নহয়; তার আরু এটা বর ডাল আরু মানুহর উপকারী গুণ আছে। চুম্বকর এডাল সরু শলা করি নরচর করিব পরাকে পথালি ভাৱে থলে সদায় তার এটা মূর উত্তর আরু আনটো মূর দক্ষিণলৈ সমুখ হৈ থাকে; তার এই গুণর দ্বারা সাগরত জাহাজ চলোৱা সুকর' হৈছে। জাহাজত ফুরোতে সাগরর দাঁতি দেখা নেযায়; এই কারণ কোন ফালে কোন দিশ তাক নিশ্চয় করা টান। চুম্বকর এই গুণ জনার আগেয়ে জাহাজত ফুরোঁতাবিলাকে দিনত সূর্য্য আরু রাতি কোনো- কোনো তরালৈ চাই দিশ নিরাপণ করিছিল, কিন্তু ডাবরীয়া যতরত সূর্য্য আরু ভরাবিলাক মেঘর দ্বারা ঢকা হোৱাত অনেক সময়ত দিগ্‌ভ্ৰম হৈ জাহাজবিলাকে বাট হেরুৱাইছিল। পাচত মানুহে চুম্বকর শিনিরূপণ করিব পরা গুণ জানি দিগদর্শন-যন্ত্র নির্ম্মাণ করিব পরা হৈ নির্ভয় মনেরে দিনে- রাতিয়ে সমানে জাহাজ চলাব পরা হৈছে। এতেকে নাগ- মাটির দরে ইও দূরতাক নাশ করি মানুহর উপকার সাধন করিছে। 

৮ পাঠ

রাজা রামমোহন রায়র নাম আমার দেশর অনেক মানুহে শুনিছে। তেওঁ বর বুদ্ধিমন্ত আরু জ্ঞানী লোক আছিল, আর ব্রাহ্মণর ঘরত উপজিও নিজের গুণর বলেরে দেশাধিকারর পরা “রাজা” উপাধি পাইছিল।

ইংরাজী ১৭৭৬ শকত বঙ্গদেশর বর্তমান খণ্ডত রামমোহন রায়র জন্ম হয়। তেওঁর বাপেক বর নৈষ্ঠিক আছিল, আর লরাকালত তেওঁক সংস্কৃত ভাষা আরু হিন্দুধৰ্ম্মর শিকনি দি সুনিপুণ করিছিল; কিন্তু প্রচলিত হিন্দু-ধর্ম্মর অনেক মত দেখি সেইবিলাকর ভিতরত কোনটো সত্য, এই বিষয়ত তেওঁর মনত বয় আশঙ্কা হল। এই কারণে সত্য বিচারিবর নিমিত্তে তেওঁ বিদেশলৈ যাবর ইচ্ছা করিলে; পাচে বৌদ্ধধৰ্ম্মত প্ৰবৰ্ত্তা তিব্বত দেশলৈ গৈ ভাত কিছু কাল থাকি নিজ দেশলৈ উলটি আহিল। ইয়ার পাচত মহলমানী ধৰ্ম্মত কি সত্য আছে, তাক জানিবর নিমিত্তে বাক্স হৈ সেই ধৰ্ম্মর যাই শাস্ত্র কোরাণ পঢ়িবলৈ সমর্থ হবর বাঞ্ছারে তেওঁ আরবী আর ফাঁচী ভাষা শিকাড নিযুক্ত হল, আরু অভি শীঘ্ৰে সেই দুইও ভাষাত তেওঁর পটুতা জন্মিল। এই সময়ত তেওঁ বর্ত্তমান প্রদেশর রাজহর কার্যার খাই দেশী বিষয়া হল। যদিও অকল এজনা সৃষ্টিকর্তা পরমেশ্বরত যাচ্ছে আন কোনো দেৱ-দেৱী নাই, আরু সেইবিলাকর উপাসনা করা অনুচিত, এই কথাত তেওঁর দৃঢ় বিশ্বাস আছিল, তথাপি বাপেকর মনত অসন্তোষ জন্মাবর ভয়ত তেওঁ জীয়াই থাকোতে রামমোহন রায়ে সেই মত চলাবলৈ একো যত্ন নকরিছিল । পাচে ইংরাজী ১৮০৩ শত বাপেকর মৃত্যু হলত স্বাধীন হৈ তেওঁ হিন্দুধর্ম সংশোধন করিবলৈ ইচ্ছা করিলে। ইয়ার পাচতে রাজ কার্যত তেওঁর মুর্শিদাবাদলৈ যোৱা হল। তাত থাকোতে তেওঁ প্রচলিত হিন্দুধর্ম্মর অসভ্যতা দেখাই ফাঁচী ভাষারে “একেশ্বরবাদী সকললৈ দিয়া ভেঁটা” এই নামেরে এখান পুথি লিখি প্রচারিত করিলে। এই কার্য্যর দ্বারা যদিও তেওঁ অনেকর অপ্রিয় হৈছিল, তথাপি কালৈও দৃপাত নকরি তেওঁর নিজ মত প্রচার করাত আগকৈও অধিক উদ্যোগী হল ।

ইং ১৮১৪ শকত তেওঁ কলিকতালৈ আহি খ্ৰীষ্টিয়ানবিলাকর বাইবল শাস্ত্ৰত নো কি সত্য আছে, তাক জানিবর ইচ্ছারে ইংরাজী শিকিবলৈ আরম্ভ করিলে, আরু অলপ কালতে তাত সুনিপুণ হল। ইয়ার পাচত এজনা ঈশ্বর উপাসনা যে বেদর সম্মত, তাক সকলোরে আগত ব্যক্ত করিবর মনেরে তেওঁ “বেদান্ত” নামেরে এখন বাই হিন্দুশান্ত বাঙ্গালী আরু হিন্দুস্থানী ভাষারে প্রচারিত করিলে। এই সময়ত তেওঁ উপনিষদ-আদি হিন্দু-ধর্ম্মর আন আন অনেক পুথিকো ইংরাজী ভাষারে ডাগিছিল, আরু ধৰ্ম্মর বিষয়ে সম্বাদ-পত্রতো অনেক রচনা লিখিছিল। তেতিয়া রামমোহন রান্নর মতত প্রবর্তা লোকর সংখ্যা অধিক নাছিল; তথাপি তেওঁ সেই অলপ মানুহর সহায়তারেই এজনা পরমেশ্বরর উপাসনার বাট বহলাবর মনেরে কলিকতাত প্রথমে “ব্রাহ্ম সমাজ” স্থাপিত করিলে। সেই সভা এতিয়া "আব্রিাহ্ম- সমাজ” নামেরে প্রখ্যাত। তেওঁ বঙ্গালী ভাষার উন্নতির নিমিত্তে বর যত্নবান আছিল, আরু সেই ভাষার এখন ব্যাকাপো প্রচারিত করিছিল।

ভারত বর্ষত স্বামীর শবর লগত জিরোত্তাই চিতাত উঠি প্রাণ এরার যি রীতি আছিল, সি যে অতি নিকরুণ আর নির্ধারণ তেওঁ তাক বুজি সেই আচার গুচাবর নিমিত্তে বহু পরিশ্রম করিছিল। পাচত সেই সময়য় ভারত বর্ষর শাসন- কর্তা লর্ড বেন্টিঙ্ক মহোদার আব্বারে “সহমরণ- নিবারক” আইন প্রচলিত হোৱাত তেওঁর যত্ন সফল হল। এই আইনত প্রায় গোটেই ভারতবর্ষর হিন্দুবিলাক অসন্তুষ্ট হৈ তাক অন্যথা করিবর প্রার্থনারে বিলাতত থকা ভারতবর্ষা শাসন-কাসকলর সভালৈ এখন আবেদন পঠাইছিল। তাত সেই উদ্যোগর বিরুদ্ধে যত্ন, আরু ভারত বর্ষর অন্যান্য ছিতর চেষ্টা করিবর ইচ্ছারে তেওঁ বিলাতলৈ যাত্রা করি ইং ১৮৩১ শফর এপ্রিল মাহত সেই ঠাই পালে গৈ । তাত তেওঁ বিদ্যারম্ভ, ধার্ম্মিক আর রাজনীতিজ্ঞ লোকসকলরপরা সমানে আদর পাইছিল; আন কি, ভারত বর্ষর সুশাসনর কথাত রাজমন্ত্রীবিলাকেও তেওঁরে সৈতে আলচ করিছিল। বিলাতলৈ গৈ সতী-যোৱা নিবারণর বিষয়ত তেওঁ কৃতকাৰ্য্য হল হয়; কিন্তু দুর্ভগীয়া ভারত বর্ষর কু-দশার গুণে তেওঁ তার অবস্থার উন্নতির নিমিত্তে আন যিবিলাক যত্ন করিছিল, সেই সকলোবিলাক সফল করিবর সময় নেপালে; কিয়নো বৃষ্টল নগর চাবলৈ গৈ ইং ১৮৩৩ শকর অক্টোবর মাহুত তেওঁ মৃত্যুর মুখত পরিল, আরু যরপরা কোনো লোক কেতিয়াও উলটি নাহে, তালৈ গমন করিলে।

৯ পাঠ

আনন্দরাম ঢেঁকিয়াল ফুকন ।

১৭৫১ শকর ৭ আহিত আনন্দরাম ফুকনর জন্ম হয়। তেওঁর পিতৃর নাম হুলিরাম ঢেঁকিয়াল ফুকন; তেওঁ লক্ষ্মীনারায়ণ ব্রহ্মচারীর তোলনীয়া পুতেক পরশুরাম বরুরার সন্তান আছিল, আরু নিজর বিদ্যা-বুদ্ধির গুণে আসাম রাজার পরা আদর আরু ডাঙ্গর বিষয় পাইছিল। তেওঁ আনন্দরাম ফুকনর ৩ বছর বয়সতে মৃত্যুর মুখত পরে। তেওঁর পুতেকে কিছু সংস্কৃত শিকি ১৭৫৯ শকত গুৱাহাটীর ইংরাজী বিদ্যালয়ত প্রবেশ করে।

আনন্দরাম ফুকনর দদায়েক যজ্ঞরাম খারঘরীয়া ফুকনো এজন বিদ্যাস্ত আর গুণী লোক আছিল। তেওঁর জ্যেষ্ঠ হলিরাম ফুকনর পাচতে তেওঁরো পরলোক প্রাপ্তি হল। আনন্দরাম ফুকনর পিতাকে আরু খুরাকে সৈতে আসামর ওপরশ্রেণীর ইংরাজী বিষয়াবিলাকর, ঘাইকৈ কাপ্তান জেনকিন্‌চ কমিশ্যনর, আরু তেওঁর সহায়ক কাপ্তান মেথি, ডেপুটি কমিশ্যনর চাহাবর বর প্রীতি থকাত তেওঁর পিতাক আরু দদায়ের মৃত্যুর পাচত সেই চাহাববিলাকে ফুকনক বর মরম করিছিল।

ফুকনে কিছুকাল গুৱাহাটীত ইংরাজী পঢ়ি, শিক্ষা সাঙ্গ করিবর কারণে কলিকতালৈ যাবর ইচ্ছা করিলে। সেই কথাত তেওঁর মাতৃ প্রথমতে অমান্তি হৈছিল । কিন্তু জেনকিন্‌চ আরু মেথি চাহাবর সহায়তারে সকলো বাধাবিধিনি এরাই ফুকনে ইং ১৮৪১ শকত কলিকতালৈ যাত্রা করিলে আরু সেই ঠাই পাই তাত থকা “হিন্দু কলেজ” নামেরে সেই সময়র খাই বিদ্যালয়ত পঢ়িবলৈ ধরিলে। তেওঁ তাত তিনি বছর মাধোন পঢ়িয়েই নিজর চোকা বুদ্ধির আর কঠিন পরিশ্রমর ভাল প্রমাণ দেখালে; কিয়নো সেই অলপ কালর ভিতরতে তেওঁ ইংরাজী আরু বঙ্গালী ভাষাত উত্তম ব্যুৎপত্তি লভিলে। কিন্তু সেই পরিমাণর বিদ্যার দ্বারা তেওঁর সন্তোষ নজন্মাত তেওঁ আরু কিছু কাল কলিকতাত পঢ়ি হিন্দু কলেজর নিচেই ওপর শ্রেণীর মহলা দিবর ইচ্ছা করিছিল; এনে সময়তে নানা কারণত নিজ দেশলৈ উলটি আহিব লগা হোৱাত সেই বাঞ্ছা সিদ্ধ নহল।

উলটি আহি গুৱাহাটী পোয়ার পাচত ফুকনে ইংরাজী বিদ্যাত সুনিপুণ পাত্রী রেণ্ড-চাহাবর সাহায্যেরে পুনরায় বিদ্যার অভ্যাস করিবলৈ ধরিলে, আরু ক্রমে বিদ্যাত পরিপক্ক হৈ এজন অসাধারণ লোক বুলি প্রখ্যাত হল । এই সময়তে ফুকনর বিবাহ হয়। বিয়ার পাচত গৃহী হলত বিষয়র চিক্কাই তেওঁর মনত ঠাই ললে; সেই কারণে রাজকার্য্যর উপযুক্ত হবর ইচ্ছারে তেওঁ আইন অভ্যাস করিছিল আরু মেথি এবং জেচি চাহাবর অনুমতিরে কাছারীত প্রধান সদর-আমীনর ওচরত বহি কার্য-প্রণালী শিকিবলৈ ধরিলে, আরু আপোনার বুদ্ধি আর পরিশ্রমর বলত অলপ কালতে তেওঁ আইন আর কার্য্যর নিরমত পার্গত হল।

এতিয়ালৈকে ফুকন ইংরাজী আর বঙ্গালী ভাষা শিকাত আবদ্ধ আছিল, মাতৃ ভাষাত তেওঁর সিমান মন নপারছিল এই দেশ ইংরাজী শাসনর অধীন হোৱার কিছু কালর পাচতেই দেশাধিকারসকলর প্রমত রাজসভার পরা অসমীয়া গুচাই সকলো কার্যা বঙ্গালী ভাষারে চলাবর, আরু পঢ়াশালিবিলাকতো সেই ভাষা শিকাবর নিয়ম হয়। তাতে বহু-ভাষা অর্থোপার্জনের উপায় হোৱাত আমার দেশর সকলো লোকে অসমীয়া ভাষালৈ পিঠি দি সেই ভাষাক আদর করিবলৈ ধরিলে । কিন্তু আনন্দরাম ফুকনে দেশী ভাষার উন্নতিয়ে সৈতে দেশর মানুহর উন্নতির যে বর সম্পর্ক, তাক বুজি এই সময়র পরা অসমীয়া ভাষার শ্রী বৃদ্ধি করিবলৈ যত্নবান হল। ইংরাজী ১৮৪৬ শকত শিবসাগররপরা “অরুণোদয় নামেরে এখান অসমীয়া সম্বাদ-পত্ৰ ওলোৱাত তেওঁ সেই কাকতত অসমীয়া ভাষারে অনেক সদুপদেশ-পূর্ণ রচনা লিখি দেশী লোকবিলাকর জ্ঞানর আরু অসমীয়া ভাষারো উন্নতির চেষ্টা করিবলৈ ধরিলে; আরু অনেক সুশিক্ষা, আরু জানিব লগীয়া কথারে পরিপূর্ণ “অসমীয়া লরার মিত্র” নামেরে দুখান পুথি লেখি প্রচারিত করিলে। এই পর্যন্ত অসমীয়ালৈ সকলোরে আওহেলা আছিল; কিন্তু এতিয়া তেওঁর আৰ্হি লৈ অনেক অসমীয়াই নিজ দেশর ভাষাক আদর করিবলৈ ধরিলে । অসমীয়া ভাষার উন্নতির নিমিত্তে ফুকন বর যত্নবান আছিল, আরু তার হিত আরু অহিত, দুইও পক্ষে সৈতে সেই ভাষার বিষয়ে অনেক বাদানুবাদ করিছিল। তেওঁ অসমীয়া ভাষার কেবল উন্নতির নিমিত্তে চেষ্টা করিয়েই ক্ষান্ত নাছিল; বঙ্গালী ভাষা এই দেশর ভাষা নহয়, এতেকে তার সলনি কাছারীর কামত আর পঢ়াশালিবিলাকত অসমীয়া ভাষা ব্যৱহৃত হোৱা উচিত; এই কথা দেশাধিকারসকলক বুজাবলৈও যত্নবান হৈছিল, আৰু সেই বিষয়ে ইংরাজী ভাষারে এখন পুথি লিখিও প্রচারিত করিছিল। তেওঁর বরত অসমীয়া ভাষার বহুত উন্নতি হল, আৰু এতিয়া যে সি আদর পাইছে, আরু রাজকার্য্যত চলিছে সিও পাকলাগি, তেওঁর পরিশ্রমের ফল মাথোন।

১০ পাঠ

আনন্দরাম ফুকন (সমাপ্ত)

আনন্দরাম ফুকন প্রথমতে খাতা পরগণার চৌধারী নিযুক্ত হয়, আর সেই কালর অন্যান্য চৌধারীবিলাকর পরে প্রজার ওপরত উপদ্রর নকরাকৈয়ে সুন্দররূপে কার্য্য করে। তার পাচত তেওঁ নলবারীর মুনচুকর একটিং নিযুক্ত হৈ সেই কাৰ্য্যতো বিচক্ষণ যশস্যা আর্জিনে, আরু ভবিষ্যৎ উন্নতির বাট মুকলি করিলে। ইয়ার কিছুদিনর পিচত তেওঁ বিজ্ঞানীর রজার দেবান হয়। তেতিয়া বিজ্ঞনী রাজার অবস্থা বর বেয়া হৈছিল, আর বহুত ধার লাগি রজাও কন্ঠত পরিছিল। কিন্তু ফুকন দেৱান হৈ সুনিয়মেরে কার্য্য করাত রজার অবস্থা আগতকৈ বহুত ভাল হল। ইং ১৮৫০ পঞ্চত আনন্দরাম ফুকন একটিং চqএচিষ্টেণ্ট কমিশানর নিযুক্ত হৈ নগাৱলৈ যায়, আৰু ইং ১৮৫২ শফত নিগাজী রূপে সেই পদ পায়। এই পদত থকা কালর সরহ ভাগ, তেওঁ নগাওঁতে গত করে, আর তাতে ১৭৮১ একর ও আবারও তেওঁর মৃত্যু হয়। তেতিয়া তেওঁর বয়স ৩০ বছরর অধিক নাছিল ।

আনন্দরাম কুকার ইংরাজী আর বনানী ভাষাত প্রগাঢ় ব্যুৎপত্তি আছিল, আৰু তেওঁ সংস্কৃতো কিছু জানিছিল । তেওঁর উদ্ভারিকা শক্তিও কম নাছিল। সদর দেৱানী আমানতার ইংরাজীতে লিখা নিম্পতিবিলাক, দেশী কোনো রে তা নোহোৱাত ইংরাজী ননা উকীল- মুক্তিরবিলাক এর অচল হৈছিল, ইরাকে বুদ্ধি তেওঁ সেই নিম্পত্তিি বাঙ্গালী ভাষারে ভাঙ্গি কলিকতাত হুলাই প্রকাশিত করিবলৈ আরম্ভ করিছিল। তেওঁর আৰ্হি লৈ হে বঙ্গালীবিলাকে পাচত সেই কামত হাত দিয়ে। ইয়াত ৰাজে তেওঁ বঙ্গালী ভাষারে এখন আইনর পুথি লিখি তার প্রথম ভাগ হুপাইছিল, কিন্তু তাকে সম্পূর্ণ করিবলৈ সময় নেপালে। তেওঁ নিজর বৃদ্ধি, বিদ্যা আরু সঙ্গ স্বভাৱর গুণে সকলোরে আদর পাইছিল, আরু যিবিলাক পদত নিযুক্ত হৈছিল, সেইবিলাকর কাম অতি উত্তমরূপে করাত উচ্চ পদর চাহাযবিলাকর প্ৰিয় হৈছিল, আর প্রশংসা লভিছিল। নগাৱঁত থাকোতে তেওঁ অনেক বার সেই জিলার সম্পূর্ণ ভার পাইছিল, আরু তেওঁর তলে কোনো ইংরাজী বিষয়া নথকাকৈ অকলৈ কাম চলাইছিল । গবর্ণমেন্টরো তেওঁর ওপরত বর বিশ্বাস আছিল। ইং ১৮৫৭ শকর রাজবিদ্রোহর সময়ত গোটেই আসাম দেশত তোলপার লগাতো ভালেমান মাইলৈকে সেই জিলার সম্পূর্ণ ভার তেওঁর ওপরত আছিল। তেওঁর শোত্রা-খোৱা আদি সকলো কাম নিয়মিত আছিল, আর নিরূপিত সময়ত করা হৈছিল। তেওঁ অসত কাৰ্যবিলাকলৈ ঘিণ করি সেইবোররপরা আঁতরি থাকিবলৈ চেষ্টা করিছিল, আরু তাত কৃতকাৰ্য্যো হৈছিল । সংক্ষেপকৈ কব লাগিলে তেওঁ এজনা অসাধারণ মানুহ আছিল। আসামর আগর কমিশানর কর্ণেল হপকিনসান চাহাবে তেওঁর কথা এই দরে লিখিছে, যে “বঙ্গদেশত রামমোহন রায় যেনে, আসামত আনন্দরাম ফুকনো তেনে আছিল; কিন্তু সেই দুই দেশর অবস্থার প্রভেদলৈ, আর আনন্দরাম ফুকনর নিজর উন্নতির নিমিত্তে বিমান সুচল আছিল, তাঁলৈ চাই তেওঁক রামমোহন রায়কৈও অসাধারণ লোক ৰোলা উচিত।”

আনন্দরাম ফুকনে এই দেশর উন্নতির কারণ বর যত্ন করিছিল, আর তার কোনো প্রকারে মঙ্গল হলে আনন্দ পাইছিল। ডেকা অসমীয়াবিলাকক কোনো হিত উপদেশ দিবর সূচল পালে তেওঁর মন আনন্দিত হৈছিল। তেওঁ এই পুথি-করোভালৈ এবার এই দরে লিখিছিল, - “বঙ্গ-দেশত 'যুবা বঙ্গালী' নামেরে যে এক শ্রেণী মানুহ ওলাইছে, আসামত সিবিলাকর দোষ এরি গুণ লোয়া কিছুমান লোকর এটি অঙ্কুর হোৱা দেখি মোর মন আনন্দেরে পূর হৈছে, আরু এনে আশা হৈছে যে, সেই গজালিটি সোনকালে এজুপি উত্তম গছ হব, আরু সুগন্ধি ফুল আরু মধুর ফলেরে আসামর শোভা আরু সুখ বঢ়াব।”

ইং ১৮৫৩ শকত গবর্ণমেন্টর আব্বারে সদর আদালতর জর্জ মিল্‌চ চাহাব আসামর অবস্থা আরু রাজ কার্য্যর বুজ লবলৈ অহাত ফুকনে তেওঁক এই দেশর উন্নতির উপায় দেখাই ইংরাজী ভাষারে লিখা এখন বাহুল্য আবেদন দিছিল, আরু মিল্‌চ চাহাবে সেই আবেদন আদরেরে লৈ আপোনার রিপোর্টর লগত ছপাই গবর্ণমেণ্টলৈ পঠাইছিল। কিন্তু সেই রিপোর্টলৈ গবর্ণমেণ্টে আওকাণ করাত ফুকনর আবেদনর একো ফল নহল।

১১ পাঠ

স্বভাবের আচরিত দর্শন ।

পশীয়া-তরা। রাতি আকাশর এঠাইর পরা উরি আন এঠাইত মার যোৱা যেন যি এটা দীপ্তি দেখা যায়, তার নাম পপীয়া-তরা। আমার দেশর অনেক লোকে ভাবে যে, পুণ্যৱন্ত লোকর নিজ পুণ্য অনুসারে কিছু কাল সুখভোগ ফরিবলৈ স্বৰ্গলৈ যোৱা আত্মার পুণ্য শেষ হলে পাপ ভোগ করিবর নিমিত্তে সি পুনরায় তললৈ আহে, সেয়ে পপীরা- তন্না। কিন্তু ই নিচেই মিছা আর লরার নিচিনা কথা। আত্মাক কেরে দেখা নাই; আরু যি আত্মাক স্বৰ্গলৈ উঠোঁতে দেখা নেযায়, সি পুনর নামি আহোঁতে নিতৌ গধূলি স্পষ্টরূপে মানুহর চকুত পরে, এই কথা অলপমান যার জ্ঞান আছে সিও পতিয়াব নোৱারে। ইংরাজী পণ্ডিতবিলাকে ভাবে যে, সি এবিধ ক্ষুদ্র গোলাকার বস্তু, আরু নিজ গতিরে সূর্য্যর চারিওফালে ভ্রমে; সেই ভ্রমণত পৃথিবীরে ভেঁটাভেঁটি হব লগীয়া হলে সি অতি বেগেরে আকাশত গতি করে, তাতে কান্তি অধিককৈ ওলোৱাত তার তিরবিরণি মানুহর চকুত পরে। কিন্তু স্বপ্ন পার্থত সি নো কি বস্তু বিজ্ঞান জনা পণ্ডিতবিলাকে এতিয়ালৈকে নিশ্চেষরূপে নিশ্চয় করিব পরা নাই। আগষ্ট মাহর ১০ আরু নবেম্বর মাহর ১৩ দিন রাতি বহু পণীয়া - তরা দেখা যায়। ইং ১৮৩৮ শকর ১৩ নবেম্বর রাতি জার্মানী দেশত এহেজার দুটা পপীয়া-ভরা দেখা গৈছিল। ইংরাজী ১৮৩৯ শকর ৮ চেপ্টেম্বরর রাতি লণ্ডন নগরর উত্তর ফালে আকাশর পরা ইমান পদীয়া-তরা পরিছিল, যে সেইবিলাকর দীপ্তির দ্বারা গোটেই খন নগর দিনর দরে পোহর হৈছিল, আৰু জুই লাগিছে বুলি হাজার হাজার মানুহে সেই ফাললৈ লর দিছিল, আরু জুই নুমোৱা যন্ত্ৰকো তালৈ নিয়া হৈছিল। এই আচরিত দৃষ্টি দুই ঘণ্টা মান থাকি অদৃষ্ট হল। কিন্তু তার দ্বারা কারো অনিষ্ট নহল। এনে ঘটনাক ইংরাজীত “উল্কা-বৃষ্টি” বোলা যায়।

নেজাল -তরা। নেজাল-তরা আমার দেশর সকলো লোকে দেখিছে; কিন্তু তার স্বভাব নজনার নিমিত্তে তাক উৎপতীয়া বুলি ভাবে। স্বরূপার্থত নেজাল - তরা পৃথিবীর পরা বহু দূর; এতেকে সি কেতিয়াও চন্দ্র সূর্য্যর দরে পৃথিবীর ওপরত প্রভাব বিস্তার করিব নোৱারে। তার নে পাতল, ভাপময় বস্তু আর সূর্যার দীপ্তিরে প্রকাশিত হয়। সি হাঁহ- কণীর আকৃতির বাটেদি সূর্যার চারিও ফালে ঘুরে। তার মূর সূর্য্যর ফালে, আরু নেজ তার বিপরীত ফালে থাকে । এইরূপে ঘূরোতে সি কেতিয়াবা সূর্যার ওচর চাপে আরু কেতিয়াবা বহুত দূরলৈ যায়। নেজাল -তরা অনেক আছে, আরু সিহঁতর বেগো বর প্রখর। কিন্তু সিহঁত পৃথিবীরপরা বর দূর হোৱাত কোনোটোক, যি ঠাইত সি ওলায়, পুনরায় সেই ঠাই পাবলৈ, ৭৬ বছর মান লাগে; আরু সেই কারণেই সিহঁত, বর ডাঙ্গর হোৱাতো, নিচেই সরু দেখা যায়। কোনো কোনো নেজাল - তরার নেজ বর দীঘল। ইং ১৮৪৩ শকত যি এটা নেজাল তরা ওলাইছিল, তার নেজে এহেজার তিনি শ লাখ মাইলর দূর ব্যাপিছিল। ইংরাজী জ্যোতিষীয়া পণ্ডিতবিলাকে কোনো কোনো নেজাল - তরাক একোটা নাম দিছে, আরু গণনার দ্বারা সিহঁতর ভ্রমণর কাল এনেরূপে স্থির করিছে, যে সিহঁতক আৰুও কেতিয়া দেখা যাব, তাক নিশ্চয়কৈ কব পারে।

১২ পাঠ

স্বভাবর আচরিত দর্শন (সমাপ্ত)।

ইন্দ্রধনু। এই নামেরে ধেনুর নিচিনা যি এটা বিচিত্র আর আচরিত বস্তু আকাশত দেখা যায়, সি কোনো ধেনু নহয়; আমার দেশর আগর কালর মানুহবিলাকে সি নো কি বস্তু, কেনেকৈ উৎপন্ন হয়, তাক নেজানিছিল; অথচ ি আকাশত ওলায় আরু ধেনুর দরে বেঁকা, এই কারণ তাক ইন্দ্র-দেবতার ধেনু বেন ভাবি সেই নাম দিছিল। পানীর প্র কণিকাবিলাক আকাশত মেঘ হৈ থাকোঁতে সেইবিলাকর ওপরত সূর্য্যর রশ্মি পরি সূর্য্যর বিপরীত কালে উৎপত্তি হয়। সূর্য্য-মণ্ডল ঘূরণীয়া; কিন্তু তার ছায়ার দ্বারা উৎপন্ন হোৱা বস্তুটো ধেনুর দরে বেঁকা দেখা যায়; তার কারণ এই যে, 1 ि আকাশত সি ওলায়, তার গোটেই ভাগ আমি নেদেখো; কিছুমান দূরলৈ মাথোন আমার দৃষ্টি যায়, তাতে আকাশক মাটিত লগা যেন দেখোঁহঁক; এতেকে পানীর কণার ওপরত প্রতিবিম্বিত হোৱা সূর্যমণ্ডলর সমুদায় ভাগকো আমি দূররপরা মনিব নোৱারোঁ, এভাগত মাথোন দৃষ্টি পরে, আর সেই ডাগর দুই দূর আকাশেৱে সৈতে ঘাটিত লগা যেন বোধ হৈ তাক ধেনুর নিচিনা দেখা যায়; কিন্তু সূৰ্য্য আকাশর ওপরলৈ উঠি মাজত থাকোতে সমুদায় সূর্য্য-মণ্ডল আমার চকুত পরা হেতু, তেতিয়া তার রশ্মি বরষুণর বিন্দুর ওপরত পরিলে আমি সেই দীপ্তিক সূর্য্যর চারিও ফালে বেরি থকা এটা গোলাকার বস্তু যেন দেখোঁহঁক, আরু তেতিয়া তাক “মড়ল” বোলা যায়। সূর্য আকাশর এফালে থাকোতে আন ফাললৈ মুখ করি কুঁচি এটারেরে বা তদ্রূপ আন কোনো বস্তুরে ওপরলৈ পানী ছটিয়ালে পানীর কণিকাবিলাকত রশ্মি পরি ইন্দ্রধনুর সদৃশ এটা বস্তু দেখায়। সূর্য্যর দরে চন্দ্রর রশ্মির দ্বারাও ধেনুর আরু মড়লর উৎপত্তি হয়; কিন্তু চন্দ্রর কান্তি মৃদু; এতেকে তারপরা হোৱা ধেনু আরু মড়ল সিমান উজ্জ্বল নহয়। ইন্দ্ৰধনুত সাতোটা বরণ থাকে ।

পানী- গছা। বা মারলীর দ্বারা সাগর বা ডাঙ্গর নৈরপরা বর গছর আকৃতিরে আকাশলৈ যি পানী উঠে, তার নাম পানী-গছা। সাগরত ই এক আশ্চর্য দৃষ্টি, আরু সঙ্কটজনক বস্তু। সাগররপরা এইরূপে হাজার হাজার মোন পানী ওপরলৈ উঠে, আরু মেঘে সৈতে মিলি একেলগ হয়; তেতিয়া তার পরা প্রচণ্ড শব্দেরে বিদুলী আরু ধুমুহার উৎপত্তি হৈ তাক ঠেলি লৈ যায়; তাতে সি ভাগি পরে। সেই সময়ত কোনো বস্তু তার ওচরত থাকিলে সি তার দ্বারা চূর্ণীকৃত হয়। আরু সি জাহাজত পরিলে জাহাজ সমূলি নষ্ট হৈ তললৈ যায়। কিন্তু মানুহে বুদ্ধির বলেরে সকলো সঙ্কটের পরা উদ্ধার পাবর উপায় করিছে; সাগরত ফুরা মানুহে পানী গছা দেখিলে আঁতরর পরা বর ডাঙ্গর তোপ তার ফাললৈ মারে, তার দ্বারা বায়ু সঞ্চালিত হৈ পানী-গছাত খুন্দা লাগে, তাতে সি ভাগি পরে। সেইয়ে হলেই নির্ব্বিধিনিয়ে জাহাজ চলি যায়।

মেঘ আরু বরষুণ। পানী বর তপত হলে নিচেই পাতন হয়, আরু ধোঁৱার দরে ওপরলৈ উরি যায়। পানী তপতাওঁতে আরু পাক করোতে যে ধোঁৱার নিচিনা এবিধ পাতল বস্তু পাত্ররপরা ওপরলৈ উঠে, সি তাপর দ্বারা পাতল হোৱা পানী মাথোন । তার নাম বাষ্প বা ভাপ। সি চেঁচা পরিলে আকও পানী হয়। সূর্য্যর বা পৃথিবীর ভিতরত তাপর দ্বারা সাগর, নৈ আরু পানীর অন্যান্য আধারর পানীবিলাক তপত হৈ কিছুমান বাষ্প হয়, আরু বায়ুর দ্বারা আকাশলৈ উঠে। অধিক বাষ্প একেলগ হলে ঘন হৈ বহুত ঠাই ব্যাগে; তেতিয়া তাক মেঘ বা ডাবর বোলা যায়। সেই মেঘে, কেতিয়াবা খণ্ড খণ্ড হৈ, একোটা হাতী বা পৰ্ব্বতর আকার ধরে, আরু কেতিয়াবা একো বখলা হৈ আকাশর, আমি চকুরে দেখা সমুদায় ভাগকে ঢাকি আন্ধার করে। মেঘবিলাক কোনো চেঁচা ঠাইত ওপরলৈ গলে বা চেঁচা বতাহ পালে শীতল পরি পানী হয়; তেতিয়া বায়ুরে তাক ধরি রাখিব নোৱরাত টোপাটোপে তললৈ পরে; তারে নাম বরণ। এই বরষুণ জগতর বর উপকারী; তার দ্বারা তৃণ-তরু-আদির পাত, ফল আর ফুল উৎপন্ন হৈ প্রাণীবিলাকক আহার যোগায়। সি সূর্যার প্রচণ্ড তাপকো শীতল করাত সকলোরে গা শাত হয়; আর তার দ্বারা পানী নথকা, খরা, ঠাইকো সকলোৱে জীৱন-স্বরূপ পানীর অভাৱ গুচে। 

৫ আধ্যা

ইতিহাস আর উপাখ্যান

১ পাঠ

পাণ্ডৱ-পুত্রবিলাকর বর্ষ।

কৌরব আরু পাণ্ডৱবিলাকর ভিতরত যি ভয়ঙ্কর যুদ্ধ হৈছিল, মহাভারতত তার বর্ণনা আছে, আর ভারতর প্রায় সকলো মানুহে তার কিছু কথা জানে। কৌরব আরু পাণ্ডর পরস্পরে নিচেই ওচর-সম্বন্ধীয়া হোৱাতো এই বিবাদত এক পক্ষে আন পক্ষর প্রতি অজাতশত্রুর দরে ব্যবহার করিছিল। তেওঁলোকর মিত্র রাজাবিলাকো সেই যুদ্ধত ইমান মত্ত হৈছিল, যে এফালর সহায়বিলাকে সিফালর রগুয়াবিলাকক অতি নিষ্ঠুরভাবে বধ করিবলৈ অলপো কোঁচ নেখাইছিল। নানা দেশর বুরঞ্জী পঢ়িলে ধন আরু রাজ্যর লোভে মানুহক পিশাচ আরু রাক্ষসর নিচিনা করার যে বিস্তর প্রমাণ পোৱা যায়, মহাভারতর যুদ্ধ সেইবিলাকর ভিতরর এটি ভাল প্রমাণ। এই লোডে সকলো দেশর মানুহকে বলিয়া করে। যুধিষ্ঠির বর জ্ঞানী বুলি বিখ্যাত; কিন্তু তেৱোঁ লোভর হাত সারিব নোৱারি স্বজাতি, ডাই, পো, গুরু আর মিডিরর তেজেরে কুরুক্ষেত্রত সোঁত বোৱালে। ভারতবর্ষত যেনেকৈ নিচেই ওচর-সম্বন্ধীয়া কৌরব আরু পাণ্ডৱবিলাকর মাজত বিবাদ হৈছিল, ইংলণ্ড দেশতো তেনেকৈ ইয়র্ক আরু লেক্টের নামেরে ওচর-সম্বন্ধীয়া দুই পক্ষর ভিতরত অনেক বছরলৈকে ঘোর রণ চলিছিল ।

সকলোৱে জনা আছে, যে দ্রৌপদী যুধিষ্ঠির আদি পাঁচ পাণ্ডবর বেইতা ভাৰ্য্যা আছিল, আরু সেই পাঁচজনা স্বামীরপরা তেওঁর পাঁচটি পুতেকো হৈছিল। কৌরব আরু পাণ্ডৱবিলাকর মাজত বিবাদ হৈ তেওঁবিলাকে যুদ্ধর দ্বারা সেই বিবাদ নিষ্পত্তি করিবর কারণ কুরুক্ষেত্রলৈ যোৱা সময়ত, সেই বালক কেইটি অধিক বয়সীয়া নাছিল। কৌরবর ফালর এজনা বীরর নাম অশ্বত্থামা; তেওঁ জাতিত ব্রাহ্মণ, আরু কৌরব পাণ্ডৱবিলাকর গুরু দ্রোণাচার্য্যর পুতেক । সেই যুদ্ধত কৌরব্বর ফালর ভীষ্ম দ্রোণ আদি সকলোবিলাক বীরর মৃত্যু হোৱাত রণত জয়লাভ করিবর আশা নথকা হৈ পিতৃ-বৈরীবোরক প্রতিহিংসা করিবর মনেরে এদিন রাতি পাণ্ডৱবিলাক শিবিরত নথকা সময়ত তেওঁ গুপ্তভাৱে তাত সোমাই, শুই থকা অৱস্থাত সেই পাঁচুটি লরাক বধ করে। তাতে রাতিপুৱা দ্রৌপদীয়ে পুতেকহঁতর মৃত্যুর সম্বাদ পাই শোকেরে আর্দ্র হৈ বিলাপ করি কান্দিবলৈ ধরিলে; তেতিয়া অৰ্জ্জুনে, দ্রৌপদীর গুরিলৈ গৈ পুত্রবিলাকর মৃত্যুরপরা হোৱা নিজর আরু দ্রৌপদীরো শোক আরু খং শান্ত করিবর ইচ্ছারে প্রতিজ্ঞা করি কলে, “হে প্রিয়া, মই আজিয়েই সেই চাণ্ডাল, নরাধম, অব্রাহ্মণ অশ্বত্থামার মূরটো কাটি আনি তোমার চরণত অর্পণ করিম।” এই কথা কৈ অৰ্জ্জুনে রখত উঠি অশ্বত্থামাক খেদি গল । অশ্বত্থামাই, অৰ্জ্জুনে তেওঁক খেদি অহার বুদ্ধ পাই, পলায়নর আশ্রয় ললে, আরু পলালতে অৰ্জ্জুন ক্ষান্ত নহৈ পাচত খেদা দিয়াত নিরুপায় হৈ ব্ৰহ্মাস্ত্র + প্রহার করিলে। কিন্তু তেওঁ সেই অস্ত্রর ব্যবহারত বর পাগত নথকার গুণে বা আন কোনো কারণেই তার দ্বারা অশ্বত্থামার একো হানি নহল, অথচ তেওঁ শত্রুর হাতত পরিল।

তেতিয়া অৰ্জ্জুনে অশ্বত্থামাক ধরি লেজুরে বান্ধিলে; তাতে অৰ্জ্জুনের সারথি কৃষ্ণ‍ই অশ্বত্থামার মূরটো কাটিবলৈ তেওঁক পরামর্শ দি কবলৈ ধরিলে, “হে অৰ্জ্জুন! এই অধমে নিদোষী আৰু শুই থকা শিশুবিলাকক বধিলে, এতেকে ই প্রাণদণ্ডর যোগ্য। প্রমত্ত, বলিয়া, জড়, আঁকরা, বালক, তিরোতা আরু শুই থকা মানুহর প্রাণ মরা বীর পুরুষর অনুচিত। ই টোপনিত, অজ্ঞান হৈ থকা শিশুবিলাকক বধ করি ধর্ম্মর বিরোধে আচরণ করিছে; এই কারণে ইয়াক বখিলে তার হিংসা নয়, বরং উপকার হে হব; কিয়নো তার দ্বারা সি পরকালত শিশুহত্যা পাপর দণ্ডরপরা পরিত্রাণ পাব। বিশেষতঃ তুমি ইয়ার মূর কাটিবর নিমিত্তে দ্রৌপদীর গুরিত মোর আগতে অঙ্গীকার করিছিলা; এতিয়া সেই প্রতিজ্ঞা রাখা উচিত।” কিন্তু অশ্বত্থামা তেওঁর গুরুর পুতেক, এই দেখি অৰ্জ্জুনে তেওঁক বধ নকরি শিবিরলৈ লৈ আহিল।

দ্রৌপদীয়ে পাওয়বিলাকর গুরু-পুত্রক গরুর দরে পঘারে বন্ধা, আরু শোক আরু লাভেরে মূর দাঙ্গিব নোৱৰা হোৱা দেখি মরমেরে কলে, “হে অৰ্জ্জুন! এওঁ গুরুর পুত্র, এওঁর এনে দশা সহ্য নহয়। আরু এওঁর পিতা দ্রোণাচার্য্যে তোমালোকক অস্ত্র-বিদ্যা শিকাইছিল, তেওঁ এই অশ্বত্থামার শরীরত বর্তমান আছে; এতেকে এওঁর প্রাণ মারিলে গুরুর পাপ লাগিব, আরু তোমার কলঙ্ক হব। বিশেষ এওঁর মাতৃ গৌতমী একেই পতির শোকত ব্যাকুল হৈ আছে, তাতে আৰুও তেওঁক পুত্ৰ শোক দিয়া অনুচিত। পুত্রর শোকে যে দারুণ কষ্ট দিয়ে, তাক মই বুজিছোঁ। গুরুর ভার্য্যাক সেই শোক দিবর মোর ইচ্ছা নাই; শীঘ্ৰে এওঁক মুকলি করি দিয়া।” দ্রৌপদীর এই কথা শুনি অৰ্জ্জুনে ততালিকে অশ্বত্থামার মূরর কিরীটিটো কাঢ়ি লৈ বান্ধ মেলি দিলে ।

এই কথার দ্বারা জানিব পারি দ্রৌপদী, কেনে ক্ষমাশীলা, আরু তেওঁর কিমান সহন- গুণ আছিল; চোৱাচোন, আপোনার পুত্রবধীরো দুখ দেখি তেওঁর মন মরমেরে কোমল হৈ পমি গৈছিল। কোনো এজন জ্ঞানী মানুহে কৈছে যে, “বি আমার অনিষ্ট করে, আমি তাক হিংসা করিলে তার সমান হওঁ, আরু ক্ষমা করিলে তাকে শ্রেষ্ঠ হওঁহঁক।” কিন্তু এই বুলিয়েই সদায় সকলোকে ক্ষমিব লাগে, এনে নহয়; আন আন কথার দরে ক্ষমারো সীমা আছে; তলত লিখা দ্রৌপদী আর যুধিষ্ঠিরর কথোপকথনর দ্বারা তাক বুজিব পারি।

২ পাঠ

দ্রৌপদী আর ঘুধিষ্ঠিরর কথোপকথন।

- পাণ্ডৱবিলাক বনলৈ যোৱাৰ পাচত এদিন গধূলি দ্রৌপদী আরু যুধিষ্ঠিরে একে লগে বহি অতি দুখেরে কথোপকথন করিছিল। তাতে দ্রৌপদীয়ে যুধিষ্ঠিরক সম্বোধন করি কবলৈ ধরিলে, “মহারাজ! আমার দুখত সেই দুর্জ্জন, পাপী, ক্রূর দুর্য্যোধনর কিঞ্চিৎমানো কষ্ট-ে -বোধ হোৱা নাই। আপোনাক মোরে সৈতে পহুর ছাল পিন্ধাই বনলৈ খেদায়ো তার মন অনুতাপ শূন্য। আপুনি তার জ্যেষ্ঠ আর ধর্মপরায়ণ; আপোনাকো কর্কশ বাক্য শুনাবলৈ সি সঙ্কুচিত নহল; এতেকে সেই পাপীর বুকু লোরে বন্ধা হৈছে। আপুনি সুখীয়া, দুখ সহিব নোৱারে; সি আরু তার বন্ধুবিলাকে আপোনাকো এনে মহৎ দুখ দি আনন্দ হে পাইছে। হে মহারাজ! আপুনি পছর ছাল পিন্ধি বনলৈ যাত্রা করা সময়ত কেৱল দুরা দুৰ্য্যোধন, কর্ণ, শকুনি, আরু দুর্যোধনর দুষ্ট ভাইয়েক দুঃশাসন, এই চারি জনর মাথোন চকুর লোতক নোলাল, অন্য সকলো লোকে মহাশোকেরে কান্দিছিল। আপুনি এতিয়া যি শয্যাত শুইছে, তাৰু আপোনার পূর্ব্ব কালর শয্যারে রিজালে মোর মনত অত্যন্ত শোক জন্মে, আপুনি সভাত হাতী-দাঁতেরে নির্মিত, হীরা-মুকুতারে বিভূষিত আসনত ছিছিল; এতিয়া আপোনাক কুশাসনত বহা দেখি মোর হিয়া বিদরি যায়। আগেয়ে আপোনাক রজাবিলাকেরে পরিবৃত "হৈ সভাত বহি থকা দেখিছিলোঁ, এডিয়া অফলৈ থকা দেখি মোর মন দুঃখিত হয়। হে ভারত! পূর্ব্বে চন্দনেরে লিপ্ত হৈ আপোনার শরীরে সূর্যার নিচিনাকৈ কান্তি করিছিল; এতিয়া সেই শরীর ধূলি আরু বোকারে মলিন দেখি মোর সুখর সীমা নেথাকে । আগেয়ে আপুনি নিৰ্ম্মল পার্ট- কাপোর পরিধান করিছিল; এতিয়া ফটা কাপোর পিন্ধিছে। পূর্ব্বে অলঙ্কার- আদিয়ে ভূষিত সুপকারবিলাকে আপোনাক আরু আপোনার ভ্রাতৃবিলাকক অভিনয় মৃদু আহার যোগাইছিল; এতিয়া সেই ভ্রাতৃবিলাকেরে সৈতে আপুনি হাবিত স্বভারতে জন্মা ফল-মূলর দ্বারা উদর পুরাইছে। এনে সুধীরা লোকবিলাকর দুখ দেখি মোর মনত শান্তি নাই। ভীমসেনে বন-বাসরপরা বি কষ্ট পাইছে, সেই দুখর কথা চিন্তা করি এতিয়া উপযুক্ত সময়তো আপোনার মনত ক্রোধর উৎপত্তি নহয় নে ? হে প্রভু! সেই নির্ঝর আর বলবস্তু ভীমসেন সকলো শত্রুকে রণত পরাস্ত করিবর নিমিত্তে ব্যগ্র, তথাপি আপোনার প্রতিজ্ঞার বশ হৈ ইমান কষ্ট সহি আছে। অৰ্জ্জুন কেৱল দুই বাহুযুক্ত হৈও শত বাহু কার্তবীর্য্যাৰ্জ্জুনের সমান; তেওঁ যুদ্ধ করিবলৈ পালে কালান্তক যমর দরে বিক্রম- প্রকাশ করি শরর দ্বারা সকলোকে ধ্বংস করিব। আপোনার মনত থাকিব পায়, তেওঁর অন্ধ্রর দ্বারা পরান্ত হৈ আপোনার রাজসূয় যজ্ঞত পৃথিবীর সকলো রজা বশ হোৱাত ব্রাহ্মণবিলাকে অতি রঙ্গেরে আপোনার বললৈ আগমন করিছিল। দেৱতা আরু দানৱবিলাকর পূজা আরু পুরুষ-শ্রেষ্ঠ অৰ্জ্জুনের শোক দেখি আপোনার মনত কিয় খং নোপজে ? হে ভারত! সেই সুখীয়া আরু দুখ সহিবর অনুপযুক্ত অৰ্জ্জুনক বনবাসী দেখিও আপোনার যে খং উঠা নাই, ইয়াতে মই বিবুদ্ধি । তেওঁ দেৱতা, মনুষ্য আরু নাগবিলাকক অকলৈ দমিলে, তেওঁ এতিয়া বনবাসী হোৱাতো যে আপোনার কোপ নহয়, ইও এটা আশ্চর্য্য। তেওঁ অতি আচরিত রথ, হাতী আরু ধোঁৱারে আবৃত হৈ আপোনার রাজসূয় যজ্ঞলৈ পৃথিবী পতিবিলাকরপরা অপরিমিত ধন আকর্ষণ করিছিল, আরু যার এপাট শরেই শতসংখ্যক হয়, তেওঁর বন- বাসর ক্লেশ দেখিও আপোনার কিছু খং নুঠে? শ্যাম-কলেবর, অতি দীর্ঘকায়, বুঝা, ঢাল-তরোয়ালয় রণত পার্গত নকুলক বনবাসী দেখি নো আপোনার রং লুকাই থাকে কিয়? হে যুধিষ্ঠির! মাদ্রী দেবীর পুতেক, দেখনিয়ার আরু বলৱন্ধ সহদেৱে বন-বাসর কষ্ট পোৱাতো আপুনি কিছু সহি আছে ? এই নকুল আরু সহদের, দুয়ো বর সুখত উঠিছিল, তেওঁবিলাকর দুখ সহ্য নহয়; সিবিলাকর কষ্ট দেখিও আপোনার ক্রোধর উদয় নহয়, ই কেনে আচরিত কথা! মই দ্রুপদ রাজার বংশত জাত খৃষ্টদয়ের ভনীয়েক, পাঁচজনা বীরর ভার্য্যা, মহারাজা পাণ্ডুর বোয়ারীয়েক; মোর ক্লেশ দেখিও আপুনি সহি আছে, ইয়ার বা কারণ কি? হে ভরত-ফুলর প্রদীপ! আপোনার বেজার নাই, ই নিশ্চয়; নতুবা আপোনার ভাইয়েকবিলাকর আরু মোর বন-বাসর দুখ দেখিও আপোনার মনত দুখ নোপজে কিয় ? সকলোৱে জানে, যে ক্রোধহীন ক্ষত্রিয় নাই; ক্ষত্রিয়র স্বভাবের বিপরীত আচরণ করা আপোনাকে হে মাথোন দেখিছোঁ। সমুচিত সময়ত যি ক্ষত্ৰিয়ই ক্লোথ নকরে, তেওঁ সকলোরেপরা পরার পায়; এতেকে শত্রু ক্ষমা করা আপোনার উচিত নহয়। ক্রোধর দ্বারায় হে শত্রুর নাশ হয়। কিন্তু ক্ষমা করিবর উচিত সময়ত যি ক্ষত্রিয়ই ক্ষমা-গুণলৈ আওহেলা করে, ञि সকলোরে অপ্রিয় হয়, আর ইহকাল, পরকাল, উভতে কষ্ট পায়।”

“হে মহারাজ! এই কথার দৃষ্টান্ত-স্বরূপে, পূর্ব্বে এই বিষয়ত প্রহ্লাদ আর বলির যি কথোপকথন হৈছিল, তাক কওঁ শুনোক । পূৰ্ব্বকালত বসিয়ে তেওঁর পিতামহ, সকলো ধৰ্ম্মর তত্ত্বজ্ঞ, দৈত্যরাজ প্রহ্লাদক এইরূপে সুধিলে, “হে পিতামহ, ক্ষমা আরু ক্লোষ, এই দুইর ভিতরত কোনটো শ্রেষ্ঠ, এই কথাত মোর সংশয় আছে; অনুগ্রহ করি আপুনি সংশর ছেদ করি দিওক ।” তেওঁর কথা শুনি প্রহ্লাদে উত্তর করিলে, “সমার ক্রোধ করা অনুচিত, আর সদার ক্ষমা করাও ভাল নহর, ইরাকে নিশ্চারণে জানিবা । যি সময় ক্ষমা করে, সি অনেক দুখ পায়, তাৰু ভৃত্যবিলাকে নেমানে, শত্রুরেও ভালৈ ভয় নকরে, আরু সকলোৱেই তাক তুচ্ছ করে। এতেকে সদায় ক্ষমা করিবলৈ জ্ঞানীসকলে বাধা করিছে। পূর্ব্বে কোৱা গৈছে যে, ক্ষমাশীল মানুহক ভৃত্যবিলাকে অবজ্ঞা করে, অঞ্চল সেয়ে নহয়; সিহঁতে তেওঁর ধন-বস্তুকো অপহরণ করে, আরু তেওঁর বাহন, যন্ত্র, অলঙ্কার, শয্যা আর আসন, এবং পান আরু ভোজনর বস্তুবিলাককো ইচ্ছা হলেই নিজর ব্যবহারত লগায় । গরাকীয়ে কোনো বস্তু দিবলৈ আজ্ঞা করিলে সিহঁতে নিদিয়ে; অধিকারর যি রাপে সম্মান করিব লাগে, তাকো নকরে। আর ক্ষমাৱন্ত লোকে মৃত্যুতকৈও গর্হিত অপমান পায়। এই বিলাকত বাজেও সদায় ক্ষমা করার আন বিস্তর দোষ আছে।”

পাঠ

দ্রৌপদী আরু যুধিষ্ঠিরর কথোপকথন (সমাপ্ত)।

দ্রৌপদীয়ে বুলিলে, “মহারাজ! ক্রোধরপরা মানুহর যি অনিষ্ট হয়, এতিয়া তাক শুনোক । যি উচিত কাল আরু ঠাইর বিবেচনা নকরাকে সদায় খং করে, সি আপোনার খঙ্গর দ্বারা আপোনাক বিপদত পেলায়। ক্রোধী মানুহর বন্ধুর সৈতে বিরোধ হয়; আপোন আরু পর, সকলো লোকে তার অহিত চিন্তে। খঙ্গাল মানুহে নিজ খঙ্গর গুণে বিবিধ দণ্ড পায়। তার ধন, জন আরু প্রাণো যায়। যি শত্রু মিত্র নুবুজি খং করে, সাপে বাহ লোৱা ঘরর দরে তাক মানুহে এরে; মানুহে যাক ত্যাগ করে, তার কুশল কেনেকৈ হব? অলপ ছিদ্র পালেই মানুহে নিশ্চয়ে তার অনিষ্ট করে। এতেকে অত্যন্ত ক্রোধ ত্যাগ করিব লাগে; কিন্তু অতি নম্র হোৱাও অনুচিত। ক্রোধ আরু ক্ষমা দুইকো উচিত সময় বুজি ব্যবহার করা হে যুগুত।”

এই বিলাক কথা কৈ দ্রৌপদীয়ে আকও যুধিষ্ঠিরক সম্বোধন করি কলে, “হে মহারাজ! পণ্ডিতবিলাকে সকলো সময়তে যিবিলাকক ক্ষমিবলৈ কৈছে, এতিয়া মই সেইবিলাকর কথা কওঁ শুনোক । পূর্ব্বে যারপরা উপকার গোত্রা গৈছিল, তেওঁ কোনো জগর করিলে, পূর্ব্বর উপকারলৈ চাই তেওঁক ক্ষমা করা উচিত। সকলো মানুহ সমানে বি নহয়, আরু মানুহর ভ্রমো আছে। এতেকে আশ্রিত মানুহে বা নুবুজি কোনো লোকে কোনো অপরাধ করিলে তেওঁ ক্ষমার যোগ্য; কিন্তু জানি-বুদ্ধি করা কার্য্যক যি অজ্ঞানত করা বুলি আপত্তি করে, সি কপটী; এতেকে তার অপরাধ লঘু হলেও তাক গুরু দণ্ড করা উচিত। সকলোরে প্রথম অপরাধ ক্ষমিব লাগে। কিন্তু কোনোরে পুনরবার অপকার করিলে, সেই অপকার ক্ষুদ্র হলেও সি দণ্ডনীয়। ওপরত কোৱা লোকবিলাক ক্ষমার স্থল, তদ্ভিন্ন অন্য স্থলত ক্রোধ করিব লাগে। মহারাজ! ধৃতরাষ্ট্রর পুতেকহঁত লোভী আর সদায় আপোনার অহিত চিন্তে; এতেকে সিহঁতর প্রতি আপোনার খং উঠা উচিত। এতিয়া কৌরৱবিলাকক ক্ষমা করিবর সময় নহয়, ই সিহঁতক হিংসা করিবর হে উপযুক্ত কাল। এই কারণে সিহঁতর ওপরত ক্রোধ করা আপোনার কর্তব্য।”

দ্রৌপদীর কথার অন্তত যুধিষ্ঠিরে উত্তর করিলে, “দ্রৌপদী ! ক্রোধেই মানুহর সুখ আরু দুখর মূল। উচিত ঠাই আরু সময়ত খং করিলে মানুহর মঙ্গল, কিন্তু ইয়ার বিপরীত আচরণ করিলে ক্রোধ মানুহর নাশক হয়। এতেকে যি অঙ্গক পরাস্ত নকরি সদায় লাই দিয়ে, সি অৱশ্যে বিপদত পরে। খক্ষর পরাই মানুহর সৰ্ব্বনাশ হোৱা দেখা যায়। ক্রোধান্বিত মানুহ পাপত প্রর্বতমান হয়, গুরু-জনকো প্রহার বা কর্কশ বাক্যেরে অপমান করে। খং উঠা মানুহে করিব নোৱারে এনে ফর্ম্ম, আরু বুলিব নোৱারে এনে বাকা নাই। বঙ্গাল মানুহে আপোনার প্রাণকো মারিব পারে। খার এইবিলাক দোষ দেখি মঙ্গল-বাঞ্ছা করা জ্ঞানী লোকসকলে খাদক দমাই রাখে। পণ্ডিতসকলে যি খক্ষক পরিত্যাগর যোগ্য বুলি কৈছে, তার আশ্রয় লোৱা আমার নিচিনা মানুহর উচিত নহয়। হে দ্রৌপদী! এইবিলাক কথা ভাবি চাইয়ে মোর খং নুঠে। খং-করোতার প্রতি বি খং নকরে, তেওঁ আপোনাক আর সিজনকো রক্ষা করে। উঠি বুদ্ধির দ্বারা দমাই রাখে, জ্ঞানী লোকে তেওঁক তেজস্বী বা বীর বোলে। ক্রোধান্বিত মানুহর পারগতা, শীল্লতা, বীরত্ব, এই সমুদায় গুণেই লোপ পায়। পৃথিবীত ক্ষমাশীল লোক নহলে মানুহবিলাকর পরস্পর মিলেই নেথাকিব; কিয়নো খঞ্জরপরাই বিবাদ হয়। ক্ষমা তেজস্বীবিলাকর শক্তি, তপস্বীবিলাকর তপস্যা, সত্যবাদীসকলর সত্য, আর ক্ষমাই বন্ধ আরু ক্ষমাই শান্তি । এতেকে হে কৃষ্ণা! তেনে ক্ষমাক ত্যাগ করা আমার নিচিনা লোকর অযুগুত। যিসকল লোকে ক্ষমার দ্বারা ক্রোধক জিনে, তেওঁবিলাকে ইহকালত সম্মান, আরু পরকালত সদ্‌গতি পায়।”

ওপরত লিখা কথার দ্বারা বুজিব পারি যে, অতিশয় ক্রোধ আর অভিনয় ক্ষমা দুইও সমানে বেয়া। খং আৰু ক্ষমা-গুণ দুইকো মানুহে স্বভাৱরপরা পাইছে; এতেকে উচিত সময়ত দুইরো ব্যবহার করিব লাগে, তেহে আমার কুশল হয়।

৪ পাঠ

রামচন্দ্রের প্রতি ভরতর

অযোধ্যার রাজা দশরথে তেওঁর জোষ্ঠ পুত্র রামচন্দ্র যুবরাজ পাতিবর ইচ্ছা করিলত তেওঁর প্রিয় ভার্যা কেকেন্দ্রীয়ে সেই কথাত অমান্তি হৈ রামক বনলৈ পঠাই তেওঁর পুতেক ভরতর্ক যুবরাজ করিবর নিমিত্তে কোৱাত বুঢ়া রজাই লাগী আরু যুৱতী ভার্য্যার কথা পেলাব নোৱারি ইঙ্গিতেরে সেই কথাত সম্মতি দিলে, আরু ভঅনুসারে রামে বনলৈ যাত্ৰা করিলে । তেতিয়া ভরত অযোধ্যাত নাছিল, উলটি আহি রামর বনবাসর, আরু সেই শোকত দশরথ রাজার মৃত্যু হোৱার, বর্ষা পাই অত্যন্ত দুখেরে রামক বিচারি গৈ তেওঁর আগত তলত লিখা কথাবিলাক কলে। তার দ্বারা নিজ জোষ্ঠ রামচন্দ্রলৈ তেওঁর যিমান চেনেহ আর ভক্তি আছিল, সি উত্তমরূপে প্রকাশ পাইছে।

ভরতে কলে, “হে শত্রুনাশক ! পৃথিবীত আপোনার তুল্য কোন আছে ? আপুনি দুখত কাতর নহর, সুখেও আপোনার অহঙ্কার বঢ়াব নোৱারে। বুঢ়া লোকবিলাকেও আপোনাক সৎকার করে, আর কোনো কথাত সংশয় হলে আপুনিও তেওঁবিলাকর পরামর্শ লয়। যিবিলাকে আপোনার দরে নিজর হিতাহিত যুদ্ধে, তেওঁবিলাক কেতিয়াও কষ্টত নগরে। আরু আপোনার মহানুভবতা, সত্যবাদিতা, বহুদর্শিতা, জ্ঞান আর বুদ্ধি আছে; সেইবিলাক গুণেই আপোনার মন যে দেবতার তুল্য, তার বিশেষ প্রমাণ দিছে। সেই মনত এই সংসার যে অনিত্য আরু অসার, এই কথার সম্পূর্ণ বোধ আছে ; এতেকে দুখ বা হানিরপরা তাত বিকার নজন্মে। এই কারণ মই প্রবাসত থাকোতে মোর অল্পবুদ্ধি আর দুর্মতি মাতৃয়ে মোর ভালর নিমিত্তে ব্যগ্র হৈ যি ঘোর অপরাধ করিছে, তাক ক্ষমা করো। মই পুত্রর কর্তব্যর দ্বারা আবদ্ধ; এতেকে তেওঁক জগন্নর উপযুক্ত শান্তি দিব নোৱারোঁ। মই মহামতি দশরথর পুতেক আর পাপ-পুণ্য এই দুইর প্রভেদ জানো ; এতেকে কেনেকৈ পরিহিত কাম করিম ? আমার পরম মান্য পিতৃ, রাজা দশরথ লোকসকলর পূজ্য আছিল, আর দেবতার দরে সভাক উজ্জ্বল করছিল; তেওঁৱো নিন্দা করিব নোৱাহেঁ। কিন্তু যুক্তি আর ধর্ম্মর বোধ থকা কোনো মানুহে তিরোতার কথা শুনি এনে অন্যায় আর রাজনীতির বিরুদ্ধ কাম করিব নোৱারে। ফোর বচন এটি মোর মনত পরিছে, তার অর্থ এই, যে মৃত্যু ওচর চাপিলে, সকলো প্রাণীর বুদ্ধি আর শক্তির লোপ পায়; আমার পিতৃ.রজার কার্য্যর দ্বারা সেই বচনর সত্যতা সম্প্ৰমাণ হৈছে। আপুনি সৎপুত্র, এতেকে কুপিত ভাৰ্য্যায় বশ হৈ, বিবেচনা নকরাকে আমার পিতৃয়ে যি অকৰ্ম্ম করিলে, আপুনি ডাক মার্জনা করিব লাগে। যি পুত্রে পিতৃর ঘোষ গণনা নকরে, তেওঁহে স্বপ্নপ পুত্র, আরু সকলোরে আদর পায়। ইরার অন্যথা করিলে ওলোটা ফল হয়। আপুনিও তেনে পুত্র হওক, আরু পিতৃর কুকৰ্ম্মক প্রখ্যাত নকরিব; কিয়নো তাকে করিলে আপুনি সকলোরে নিন্দার পাত্র হব। হে বীর! মোক আরু মোর মাতৃ কৈকেয়ীক ড্রাগ করোক। পিতৃর নাম-রক্ষা আর আমার মিতির, কুটুম আরু প্রজাবিলাকক প্ৰতিপাল করা আপোনার উচিত। ক্ষত্রিয়র বনবাস কেনে অসঙ্গত! যি লোকে প্ৰজাক পালন করিব লাগে, জটার ডার বৈ আরু বাকলি বসন পিন্ধি হাৰিত থকা, তেওঁর কেনে অযুগুত ! এতেকে পিতার তেনে আজ্ঞা মানা নহয় ।

ধর্ম-শাস্ত্রর নিয়ম অনুসারে সিংহাসনত উঠি প্রজাপালন করা ক্ষত্রিয়র প্রধান কৰ্ম্ম। কোন ক্ষত্রিয় ইমান প্রাপ্ত হব পারে যে, পরোপকার করিবর বর্ত্তমান, নিশ্চিত আরু স্থির উপায়ক ত্যাগ করি অনিশ্চিত আরু আশঙ্কা যুক্ত ভবিষ্যত উপায়লৈ আশা করিব ? যদি শারীরিক ক্লেশ সহি কষ্ট সাধ্য ধর্ম করিবর আপোনার ইচ্ছা হৈছে, তেন্তে আপুনি ন্যায় অনুসারে চতুব্বর্ণ প্রজার প্রতিপালন করাত যি দুখ হয়, তাক গ্রহণ করি আপোনার বাঞ্ছা পূরাওক। নীতিজ্ঞ পণ্ডিতসকলে "কৈছে, যে চারি আশ্রমর ভিতরত গৃহশ্রম শ্রেষ্ঠ। আপুনি কিয় সেই আশ্রম এরিবর ইচ্ছা করিছে ? মই বয়সে আপোনাকে সরু আর জ্ঞানতো হীন; এতেকে আপুনি থাকোঁতে মই কেনেকৈ রাজ্য-ভার লম ? মোর বুদ্ধি অপরিপক্ষ, উপযুক্ত গুণো নাই, পদতো আপোনার তলতীয়া; এইবিলাক কারণর নিমিত্তে আপুনি নোহোৱাকৈ জন-সমাজত থাকিবলৈ মোর সাহ, নজন্মে। আপুনি ধর্ম্ম; এতেকে পৈতৃক রাজ্য গ্রহণ করি বন্ধু-বান্ধরেরে সৈতে তার শাসন করোক। ধৰ্ম্ম- কার্য্যর বিধি জনা মান্যবর বশিষ্ঠে, ইয়াত উপস্থিত থকা ব্রাহ্মণ আর প্রজাবিলাকেরে সৈতে, এই ঠাইতে আপোনাক রাজ্য অভিষিক্ত করোক। আমার দ্বারা অভিষিক্ত হৈ আপুনি অযোধ্যালৈ যাওক, আরু রাজ্য শাসন করি দেবতা সকলেরে সৈতে ইন্দ্রর দরে শত্রুবিলাকক দমন করোক গৈ। মানুহর জন্ম হলেই যে তিনটা ধার লাগে, সেইবিলাকর পরিশোধ করি মোক আপোনার প্রজা বুলি জ্ঞান করোক, এবং দুষ্টর দমন আর শিষ্টর পালন করোক। আপুনি রক্ষা হোৱার নিমিত্তে আজি সন্তসকলে আনন্দ পাওক, আরু দুষ্ট লোকবিলাক দণ্ডর ভয়ত দশো দিশে পলাই যাওক । আপুনি মোর মাতৃর বিদ্বেষ ক্ষমোক, আরু নগরলৈ উলটি গৈ আপোনাক বনবাসলৈ পঠোৱাৰ বাবে পিতৃর যি দুর্নাম “হৈছে, তাৰু দূর করোক। মই মূর দোৱাঁই প্রার্থনা করিছোঁ, পরমেশ্বরে সকলো জীৱ-জন্তুর প্রতি যেনে কৃপা করে আপুনি মোর আরু মোর বন্ধুবর্গর প্রতি তেনে কৃপা দান করো।

৫ পাঠ

রামচন্দ্রের উত্তর।

ভরতর কথা সমাপ্ত হলত রামচন্দ্রে উত্তর করিলে, “হে কৈকেয়ীর আরু মহারাজা দশরথর পুত্র! তুমি যি কথা কৈছা, সি যে যুক্তি-যুক্ত, তাত সংশয় নাই। কিন্তু হে ভাই ! ভাবি চোৱাচোন, আমার পিতৃয়ে যেতিয়া তোমার মাতৃক বিয়া করে, তেতিয়া এই রাজ্য তেওঁর স্ত্রী-ধন স্বরূপে দিবলৈ অঙ্গীকার করিছিল। তার পাচত দেবাসুরর যুদ্ধত তেওঁ দেৱতাবিলাকর ফলীয়া হৈ রণ করোতে আহত হোৱাত তোমার মাতৃরে বি গুর্খা করে, তার দ্বারা সন্তুষ্ট হৈ তেওঁর বাঞ্ছিত বর দিবর নিমিত্তে পুনরায় প্রতিজ্ঞা করে। তোমার মান্যবর্তী মাতাই এতিয়া সেই প্রতিজ্ঞা সোঁত্ররাই দুটা বর খোজে, প্রথমটো এই, যে রজাই যেন তোমাক রাজ্য দিয়ে, আর দ্বিতীয়টো এই, যে মোক যেন তেওঁ বনলৈ খেদায়।

১৭

রজাই প্রতিজ্ঞাত আবদ্ধ থকার গুণে এই দুই প্রার্থনার বিরোধ আচরণ করিব নোৱারি সেই কথাত মান্তি হ'ল। এতেকে পিতৃর আজ্ঞাত মই এই ঠাইত থাকিব লগীয়া হৈছোঁ। পিতৃয়ে তোমার মাতার আগত যি অঙ্গীকার করিছিল, তার পালনর নিমিত্তে মই চৈধা বছর বনত থাকিব লাগে; এই কারণেই ভাই লক্ষ্মণ আৰু ভাৰ্য্যা সীতাক লৈ এই হাবিলৈ আহিছোঁ, আরু মই পিতৃর আজ্ঞা অৱশ্যে পালন করিম। তুমিও সেই রূপেই শীঘ্ৰে রজা হৈ তেওঁর বাঞ্ছা পূর করিব লাগে। হে মোর ভাই ভরত! মোর কথা লোরা, আমার পিতৃক অঙ্গীকার স্বরূপ ধাররপরা মুক্ত করা। তুমি ধর্ম্ম-নজনা নোহোৱাঁ; এতেকে পিতাক মুক্তি করা, আর মাতাকো সম্ভোষ দিয়া। অযোধ্যালৈ উলটি যোৱা, এবং শত্রুর আরু ব্রাহ্মণবিলাকে সৈতে লগ লাগি তুমি প্রজাবিলাকর সুখ বৃদ্ধি করাগৈ । মই এতিয়াই সীতা আর লক্ষ্মণেরে সৈতে দণ্ডকারণ্যত সোমাম । হে ভরত! তুমি মানুহর ওপরত রাজত্ব করা গৈ, মই বনরীয়া অন্তুক শাসন করিম। তুমি আনন্দচিত্তেরে আমার অনুপম নগরলৈ যোৱা, মই অরণ্যত প্রবেশ করে।। তোমার মূরর ওপরত রাজছত্রে সূর্যার তাপ গুচাই শীতল ছাঁ দিয়ক ; আরু এই হাবিত থকা গছর ছাঁই রদর তাপরপরা মোক রক্ষা করিব। অসীম বুদ্ধি আর নীতিজ্ঞ শত্রুয়ে পরামর্শর দ্বারা তোমার সহায়তা করিব আরু মোর পরীক্ষিত বন্ধু লক্ষ্মণ মোর সহায় হব । হে ভরত ! শোক নকরিবা। আমার চারি ডাইর যত্নর দ্বারা আমার পিতৃর অঙ্গীকার সফল হব।” ধনা রামচন্দ্র! তুমি পিতৃ-ভক্তি আরু অঙ্গীকার রক্ষার শেষ সীমা দেখাই দিলা।

৬ পাঠ

হরিশ্চন্দ্রর উপাখ্যান।

দুখীয়াক দান করিব লাগে; কিন্তু যি দানে দাতাক সৰ্ব্বস্বান্ত করে, সি প্রশংসনীয় নহয়, আরু সাধুলোকে ধন- প্রাণকো দি আপোনার অঙ্গীকার রাখে।

পূর্ব্বে ত্রেতা যুগত “হরিশ্চন্দ্র” নামেরে মহাধর্মী আরু সুবিখ্যাত এজনা রজা আছিল। তেওঁর রাজ্যত দুর্ভিক্ষ, রোগ আরু কারো অকালত মৃত্যু নহৈছিল, আৰু কোনো প্রজার অধর্ম্মত মতি নাছিল। এদিন তেওঁ মৃগয়ার নিমিত্তে বনলৈ গৈ, কোনো এজনা তিরোভাই কাতর ভাৱে “মোক ত্রাণ করা” বুলি বারদ্বার চিঞরা শুনিলে । তেতিয়া, রজাই মৃগয়া ত্যাগ করি “মই শাসন করা দেশত কোনে অন্যায় আচরণ করিছে ? বলবন্ত আরু পরাক্রমী মই দেশাধিকার আগত থাকোতে কোন পাপীয়ে কাপোরর আঁচলত জুই বান্ধি লৈছে ? কোনে আজি মোর পরর দ্বারা ক্ষতবিক্ষত হৈ মহানিদ্রায় আশ্রয় লব খুজিছে ?” খঙ্গেরে এইরূপে কৈ কান্দনর শব্দ অনুসরি যাবলৈ ধরিলে। রজার এইবিলাক কথা শুনি বিশ্বামিত্র খৰিয়ে দূররেপরা মাত লগাই বর খঙ্গেরে তেওঁক রবলৈ আদেশ করিলে। রজাই তপস্বিশ্রেষ্ঠ বিশ্বামিত্রর বং হোৱা দেখি ভয়ত আঁহতপাত্তর দরে কপিবলৈ ধরিলে, আরু প্রণাম করি বিনয়েরে বুলিলে, “হে মহাভাগ ! মই রজা; এতেকে এইটো মোর কর্তব্য কাম। ধর্ম-শাস্ত্রর মতে ধর্ম্ময় রজাই দান আরু রক্ষণ করিব লাগে, আর ধনু ধরি রণ করিযও লাগে; ইয়াত আপোনার বং হোৱা অনুচিত।”

এই কথা শুনি বিশ্বামিত্রে বুলিলে, “মহারাজ! দানর পাত্র কোন, কাক রক্ষা করিব লাগে, যুদ্ধ বা ফাৱে সৈতে করা উচিত, এই কথা শীঘ্ৰে কোরা ।” রাজাই উত্তর করিলে, “সজ ব্রাহ্মণ, আরু দরিদ্রক দান, ভয়াতুরক রক্ষা আরু শত্রুর সৈতে রণ করিব লাগে।” রজার উত্তর সাঙ্গ হলত বিশ্বামিত্রে কলে, “মই ব্রাহ্মণ, যদি তোমার রাজ ধরে বোধ আছে, তেন্তে মোক মোর বাঞ্ছিত বস্তু দান করা।” ঋষির এই বাক্য শুনি রাজাই পুনরায় প্রাণ পালে যেন ভাবি, অতিশয় আনন্দেরে বিশ্বামিত্রক কলে, “হে ভগৱান! আপোনাক কি লাগে নিশঙ্ক মনেরে কওক, আর যদিও সেই বস্তু দুর্লভ হয়, তেও আপোনাক তাক দিলোঁ বুলি মানোক । মোর সোণ, রূপ, পুত্র, ভার্য্যা, শরীর, প্রাণ, রাজ্য, নগর, সকলে। ধন-সম্পত্তি, এই বিলাকর ভিতরর, আপোনাক যিহকে লাগে, কোৱা মাত্রেই মই তাক দিম।” তেতিয়া বিশ্বামিত্রে বুলিলে, “মহারাজ! আপোনার দান মই গ্রহণ করিলোঁ; আপুনি এতিয়া দানর যোগ্য দক্ষিণা দিওক ।” বিশ্বামিত্রর কথা শুনি রজাই উত্তর করিলে, “ঋষিরাজ ! কি বস্তুর দান পাবর আপোনার বাঞ্ছা, প্রথমতে তাক কওক; দানর অন্তত উচিত দক্ষিণা অৱশ্যে দিয়।"

বিশ্বামিত্রে বুলিলে “গাওঁ, নগর, পৰ্ব্বত আরু সাগরে সৈতে এই পৃথিবী, হাতী, ঘোঁরা আরু রথে সৈতে রাজ্য, ধন আরু ধনর উরাল, এই সমুদায়, তদ্ভিন্ন, পুত্র, ভার্যা, নিজ শরীর আরু লগত যোৱা ধৰ্ম্মত বাজে, অন্যান্য যি বস্তু আছে, সেই সকলোকে মোক দান করোক।” ঋষির বাক্য শুনি রাজা হরিশ্চন্দ্রই অতিশয় আনন্দিত মনেরে আরু হাঁহি-মুখেরে কৃতাঞ্জলি হৈ “তথাস্তু” বুলি সমুদায় দান করিলে। দানর অন্তত বিশ্বামিত্রে বুলিলে, “মহারাজ ! রাজা, পৃথিবী, ধন, জন সকলোকে যদি দান করিলা, তেন্তে সেইবিলাকত কার অধিকার হল, মোর নহল নে ?" হরিশ্চন্দ্রই উত্তর করিলে, “দান করার আগেয়ে মই যেতিয়া পৃথিবীর রজা আছিলো, তেতিয়াও আপুনি সকলোৱে গরাকী আছিল; আজি আপুনি রজা হৈছে, এতিয়া আরু সেই বিলাকত আপোনার অধিকার হব, তাত সংশয় কি ?” এই কথা শুনি বিশ্বামিত্রে বুলিলে, “যদি তুমি মোক রাজ্য দান করিলা, আরু সমুদায় পৃথিবী মোর হল, তেন্তে তোমার কটি সূত্রকে আদি করি সকলো অলঙ্কার খহাই থৈ তুমি বাকলি বসন পিন্ধি ভাৰ্য্যাপুত্রেরে সৈতে মোর দেশরপরা বাজ হোত্রা৷” হরিশ্চন্দ্র রজাই বন্ধু পাতর সমান এই বাক্য শুনি ক্ষণেক কাল নিরব হৈ আছিল, পাচত ব্রহ্মশাপর ভয়ত সৰ্ব্বস্ব ত্যাগ করিবলৈ নিশ্চয় করি ঋষির কথাত মান্তি হল, আরু তেওঁর ভার্য্যা শৈব্যা আরু পুতেকটিরে সৈতে নগররপরা যাত্রা করিলে।

এনেতে বিশ্বামিত্র ঋষিয়ে বাট ভেঁটি ধরি বুলিলে, “তুমি দানর উপযুক্ত দক্ষিণা নিদিয়াকৈ কলৈ যোৱা?” রজাই উত্তর করিলে “হে ঋষিরাজ! এই সমুদায় রাজ্য আপোনাক দান করিলোঁ, আমার তিনটা দেহ মাথোন অৱশিষ্ট আছে।” বিশ্বামিত্রে বুলিলে, “তথাপি তোমার অঙ্গীকৃত দক্ষিণা অৱশ্যে দিব লাগে। অঙ্গীকার করা বস্তুর দান, শত্রুরে সৈতে যুদ্ধ আরু আর্দ্র মানুহক রক্ষা, করিব লাগে বুলি পূর্ব্বে তুমিয়েই কৈছা!” ঋষির কথাত অতিশয় দুঃখিত হৈ রজাই কলে, “প্রভু! দক্ষিণা দিবর নিমিত্তে সম্প্রতি মোর হাতত ধন নাই, পাচে দিম। মোর মনর ভাব বিশুদ্ধ, আপুনি তাক গমি চাই মোর প্রতি প্রসন্ন হওক।” বিশ্বামিত্রে বুলিলে, “দক্ষিণা পাবর নিমিত্তে মই কিমান কাল অপেক্ষা করিব লাগিব, তাক কোৱা৷” রজাই উত্তর করিলে, “সম্প্রতি মোর ধন নাই, এমাহর মূরত দক্ষিণা দিম; মোক যাবলৈ অনুমতি করোক।” তেতিয়া বিশ্বামিত্রে কলে, “মহারাজ! যাওক, নিজ ধৰ্ম্মর পালন করোক, বাটত আপোনার কুশল হব, আর শত্রুরেও নাশ পাব।” 

৭ পাঠ

হরিশ্চন্দ্রের উপাখ্যান (ক্রমাগত)

এইরূপে অনুমতি পাই রজা খোজ কাঢ়ি নগররপরা যাবলৈ ওলাল; তাতে ভার্য্যা আরু পুত্রে সৈতে রজাক যোৱা দেখি প্রজাবিলাকেও তেওঁলোকর লগত যাবর উপক্রম করি কবলৈ ধরিলে, “হে নাথ! আমাক দুখত পেলাই আপুনি কলৈ যায় ? আপুনি ধৰ্ম্মপরায়ণ, দুখীয়াক দয়া করোতা; ধর্ম্মত যদি আপোনার শ্রদ্ধা আছে, তেন্তে আমাকো লৈ যাওক । হে মহারাজ! আপুনি অলপ পলম করোক, আমি আপোনার মুখ পত্র চাই লওঁহঁক; আমার চক্ষু-স্বরূপ ভ্রমরে তার মধু পান করোক । পুনরায় আরু আমি আপোনাক কেতিয়া দেখিবলৈ পাম? হায় হায়! যি জনা পূর্ব্বে ফুরিবলৈ ওলালে, তেওঁর আগে পাচে রজাবিলাক গৈছিল, আজি তেওঁর পাচত পুত্রটি লৈ তেওঁর ভার্য্যাই গমন করিছে। যি জনা আগেয়ে কোনো ঠাইলৈ যাওঁতে তেওঁর ভৃত্যবিলাক হাতীত উঠি আগে আগে গৈছিল, সেই মহারাজা হরিশ্চন্দ্র আজি খোজ কাঢ়ি যাব লাগিছে।”

“হে রাজেন্দ্র! আপোনার সুকুমার আরু উত্তম প্রবেরে শেভিত মুখত বাটর ধূলি পরি তার কেনে অৱস্থা হব! হে নৃপতি শ্রেষ্ঠ! আপুনি যাব নেলাগে, নগরত থাকো, আরু স্বধৰ্ম্ম প্রতিপালন করোক। দুখীয়াক দুখ গুচোৱাই ক্ষত্রিয়বিলাকর ঘাই ধর্ম্ম, তার অনুশীলন করোক। আপুনি আমাক এরি গলে পুত্র, ভার্য্যা, ধন আরু ধানার পরা আমার কি লাভ হব? এই সকলোকে পরিত্যাগ করি আমি ছাঁর দরে আপোনার পাচে পাচে যামহঁক। হে নাথ ! হে মহারাজ! হে স্বামী ! আমাক কিয় এরি যায়? আপুনি যতে থাকে, আমিও ততে থাকিলেই আমার সুখ, আপুনি যতে থাকে, সেইয়ে আমার স্বর্গ; আপুনি যত নাই, সেই ঠাই আমার সম্বন্ধি নরকর তুল্য।” প্রজাবিলাকর এই বাক্য শুনি রাজা অতিশয় শোকার্ত হল, আরু সিবিলাকর মরমত যাবলৈ এরি বাটতে রল। রজাক বাটত রৈ থকা দেখি বিশ্বামিত্রর খং উঠিল, আরু সেই ঠাইলৈ আহি কবলৈ ধরিলে, “ধিক্ দুষ্ট! ধিক্! তই মিথ্যাবাদী। মোক রাজ্য দান করি আকও তাক লব খুজিছ।” রজাই এই কর্কশ কথা শুনি কম্পিতভাৱে “মই যাও” এই বুলি ভার্য্যার হাতত ধরি পুনরায় যাবলৈ আরম্ভ করিলে । তেওঁ 'এই দরে সেই সুকুমারী, শ্রমাতুরা, প্রিয় ভার্য্যাক হাতত ধরি লৈ যাওঁতে বিশ্বামিত্রে হাতর লাখুটিয়ে কুররীক প্রহার করিলে; কিন্তু তেওঁক সেইরূপে মরা দেখিও হরিশ্চন্দ্রে “মই যাও” এই কথাত বাজে আন একো নকলে। এই দরে শৈব্যা ভার্য্যা আরু শিশু সন্তানটিরে সৈতে লাহে লাহে গৈ তেওঁ দিব্য বারাণসী নগর পালে। এই নগরত কোনো মানুহর অধিকার নাই, সি সদাশিবর সম্পত্তি; এতেকে হরিশ্চন্দ্রে রাজ্যদান করার পরা বিশ্বামিত্রর তাত অধিকার জন্মা নাছিল। রজাই ভার্য্যা পুত্রেরে সৈতে অতি দুখেরে খোজ কাঢ়ি গৈ সেই নগরত সোমাইয়ে বিশ্বামিত্ৰক দেখা পালে। তেতিয়া হরিশ্চন্দ্রই অতি বিনীতভাবে হাত যোর করি বুলিলে, “হে ঋষিরাজ! এই মোর প্রাণ, এইটি মোর পুত্র আরু এই জনা ভার্যা, এই বিলাকর ভিতরর যার দ্বারা আপোনার কার্যা চলে, তাকে আপুনি গ্রহণ করোক, নাইবা আমি আন কি করিব লাগে, আজ্ঞা করোক।”

এই কথা শুনি বিশ্বামিত্রে উত্তর দি বুলিলে, “মহারাজ! এমাহ পূর হৈ গল, তোমার যদি নিজের প্রতিজ্ঞা মনত আছে, তেন্তে মোক দক্ষিণা দিয়া।” রজাই উত্তর দিলে, “হে তপোধন! আজিয়েই মাহর মূর পরিছে মাথোন; এই দিনর এতিয়াও আধা শেষ আছে, এই আৰা দিন আপুনি বাট চাওক, অধিক কাল অপেক্ষা করিব নেলাগে।” বিশ্বামিত্রে কলে, “উত্তম কথা, মই পুনরায় আহিম, কিন্তু আমির দিনর ভিতরতে দক্ষিণা নিদিলে মই নিশ্চয়ে শাপ দিম।” এই কথা কৈ তেওঁ গুচি গল । ইফালে “মোর অঙ্গীকৃত দক্ষিণা কেনেকৈ দিম? মোর ধন নাই, ঘনবস্তু মিত্তিরো নাই; দক্ষিণার ধন কত পাম? দান লবর মোর অধিকার নাই; এতেকে ভিক্ষা করিবও নোৱারোঁ। প্রাণকে পরিত্যাগ করিম নেকি? নাইবা কি করিম? কলৈ যাম? অঙ্গীকার রক্ষা নৌ করোতেই যদি মোর মৃত্যু হয়, ভেয়ে ব্রহ্মস্ব হরণর পাপর নিমিত্তে কৃমি হব লাগিব, আরু মোর কেতিয়াও সতি নহর,” এইরূপে চিন্তা করি করি রজা অতিশয় ব্যাকুল হল।

রজাৰু চিন্তিত আরু মূর দোৱাই দুঃখিতভাৱে থকা দেখি তেওঁর পত্নীয়ে শোকাকুল আরু গাদ মাতেরে রজাক সম্বোধন করি কবলৈ ধরিলে, “মহারাজ! ভাৱনা ত্যাগ করোক, আপোনার সত্যক রক্ষা করোক, সত্য-এষ্ট মানুহ শ্মশানর দরে বজ্জনীয়; হে পুরুষ-শ্রেষ্ঠ! সত্যরক্ষাতকৈ আন ধৰ্ম্ম নাই। যি আপোনার বাক্য নেরাখে, তার হোম, যজ্ঞ, বেদ পাঠ আরু দান, ইত্যাদি সকলো কাৰ্য্য নিষ্ফল। ধৰ্ম্ম-শাস্ত্রে সত্যক সকলোতকৈ শ্ৰেষ্ঠ বুলি কৈছে। সত্যক রক্ষা করিলে যেনেকৈ সন্নতি হয়, নকরিলেও সেই দরে অধোগতি হয়। যি লোকে সাতোটা অশ্বমেধ আরু রাজসূয় যজ্ঞ করিছে, তেরো এবার অসত্য কথা কলে স্বর্গরপরা পতিত হয়। মহারাজ! মোর পুত্র হৈছে”- এই বুলি কুবরীয়ে বরকৈ কান্দিবলৈ ধরিলে, আর লোতকেরে তেওঁর চকু আবৃত দেখি রাজাই তেওঁক এইরূপে কলে, “কল্যাণী । তোমাক কম্পা দেখি লরাটিয়ে ভয় খাইছে, শোক এরা আরু কি কব খুজিছিলা শীঘ্ৰে কোৱা । ”

স্বামীর কথা শুনি কুঁবরীয়ে বুলিলে, “মহারাজ! সন্তসকলে পুত্রর নিমিত্তেই ভার্য্যার প্রয়োজন বুলি কৈছে; মোর পুত্র আছে; এতেকে মোক বেচি যি ধন পায়, তারেই ঋষিক দক্ষিণা দিওক ।” এই কথা শুনি রজা মূর্ছিত হল। পাচে জ্ঞান পাই বর শোকেরে বিলাপ করি কবলৈ ধরিলে, “ভদ্রে! তুমি যে মোক এনে কথা কলা, ই বর দুখর বিষয় । পরম প্রীতিরে আমি হাঁহি-মুখেরে আলাপ করিছিলোঁহঁক, মোর পাপর গুণে তুমি তাকো পাহরিলা নে ? হায়! হায়! এনে নিষ্ঠুর কথা তুমি কেনেকৈ কলা? সি দুৰ্ব্বচন, মই তাক কেনেকৈ পালন করিম?” এই বুলি রজাই আপোনাকে অনেক বার ধিক্কার করিলে, আরু পুনরায় মুছকছ গৈ ঢলি মাটিত পরিল।

৮ পাঠ

হরিশ্চন্দ্র রজার উপাখ্যান (ক্রমাগত

তেতিয়া হরিশ্চন্দ্রক এই দরে মাটিত পরি থকা দেখি তেওঁর কুররীয়ে অত্যন্ত শোকেরে কবলৈ ধরিলে, “হায় ! কার অভিশাপত তোমার এই দশা হৈছে? পূর্ব্বে তুমি মৃগর নোমেরে বোৱা বহুমূল্য কাপোরেরে আবৃত শয্যাত শুইছিলা, আজি মাটিত পরি আছা, হে স্বামী! তুমি আগেয়ে কোটি-কোটি টকা ব্ৰাহ্মণক দান করিছিলা, আজি মাটিত শুইছা। হায়! কি দুখ ! দৈত্রর কেনে শক্তি ! সি ইন্দ্র আরু বিষ্ণুর তুল্য এই মহারাজার এনে দুর্গতি করিছে !” এই কথা কৈ, স্বামীর দুখ সহিব নোৱারি তেৱোঁ মূৰ্চ্ছিতা হল। পিতৃ-মাতৃক এইরূপে মূহুকছ গৈ মাটিত পরি থকা দেখি লরাটিয়ে, “হে পিতৃ! পিতৃ ! অ! আই ! আই ! উঠা, মোর বরকৈ ডোক লাগিছে, মুখ শুকাই গৈছে, মোক কি আছে খাবলৈ দিয়া৷” এই বুলি কান্দিবলৈ ধরিলে।

এনে সময়তে মহর্ষি বিশ্বামিত্র কালান্তক যমর নিচিনা খঙ্গেরে দক্ষিণার ধন খুজিবলৈ আহি উপস্থিত হল, আরু রজা হরিশ্চন্দ্রক মূৰ্চ্ছিত হৈ মাটিত পরি থকা দেখি তেওঁর মূরত কমণ্ডলুর পানী ছটিয়াই এই দরে বুলিলে, “হে রাজেন্দ্র! উঠাঁ, মোক অঙ্গীকৃত দক্ষিণা দিয়া। ধরুৱা মানুহর নিতো নিজে দুখ বাঢ়ি যায় ।” সেই শীতল জলর স্পর্শত রজাই চেতন পাই বিশ্বামিত্ৰক দেখিলে, আরু পুনরায় মূহুকঁছ গল । তাতে তেওঁ বর রাগান্বিত হৈ রজাক সম্বোধন করি বুলিলে, “যদি তোমার ধর্ম্ম-রক্ষার ইচ্ছা আছে, তেন্তে মোক তোমার অঙ্গীকৃত দক্ষিণা দিয়া । সত্য-রক্ষা করিবর নিমিত্তেই সুৰ্যো দীপ্তি দিছে, সভাতে পৃথিবী ৱৈ আছে, সত্যেই পরম ধৰ্ম্ম বুলি উত্ত হৈছে, স্বর্গো সত্যতে আছে; এহেজার অশ্বমেধ আরু এক সত্যক তুলত দুখিলে অশ্বমেধ হাজারকৈ সত্য গধুর হয় ! কিন্তু ভূমি অনার্য্য, পাপ- মতি, জ্বর আরু মিছলীয়া; তোমাক এইবিলাক কথা কোত্রার প্রয়োজন কি? তথাপি হে রাজা! মই তোমাক সন্তাত্রেরে কওঁ শুনা, আজি তুমি বেলি মার যোত্রার আগেয়ে যদি মোক দক্ষিণা নিদিয়াঁ, তেন্তে মই তোমাক নিশ্চয়ে শাপি ভা করিম ? এই কথা কৈ তেওঁ উলটি গল। ইফালে “কলৈ যাম ? কি করিম? কাক ধন খুজিম?” এইরূপে চিন্তা আরু ভয়ত রজা বিহ্বল হল। তেওঁর তেনে অৱস্থা দেখি তেওঁর ভাষাই পুনরায় তেওঁক মাত লগাই বুলিলে, “মহারাজ! আপুনি মোর কথার দরে আচরণ করোক, তেনেহলে ঋষির শাপাগ্নির দ্বারা জন্ম হব নেলাগিব ?” পুনঃ পুনঃ কুঁৱৰীয়ে এইরূপে উপগোত্রাত রজাই ফলে, “প্রিয়ে ! মই নিকরুণ, তোমাক বিকিম, এনে দুৰ্ব্বাক্য যদি মোর মুখে গুলায়, ভেঙে ঘোর নিষ্ঠুর মানুহেও যাক করিব নোৱারে, মই আজি সেই কাম করিম।” ভার্য্যাক এই কথা কৈ রজা অভিনয় শোকত চকুর লোতকেরে ভিত্তি নগরলৈ গল, আরু গদাদ মাতেরে উচ্চৈস্বরে কলে, “হে নগরীয়া লোকসকল! মোর কথা শুনা, আরু যদি মই কোন, তাক সোধা, তেন্তে মই মানুহ নহওঁ, রাক্ষস, নাইবা ঘোর নিষ্ঠুর আরু মহাপাপী বুলি জানিবা; কিয়নো মই মোর প্রিয় ভার্য্যাকো বেচিবলৈ আহিছোঁ, তথাপি মোর প্রাণ যোৱা নাই। মোর প্রাণ-প্রিয়াঙ্ক দাসী করি লবর যদি তোমালোকর কোনো জনর প্রয়োজন আছে, তেন্তে শীঘ্ৰে মোর জীবন নৌ যাওঁতেই, সেই কথা 6"

এনে সময়তে এজন বুঢ়া বামুণ আহি রজাক মাত লগাই বুলিলে, “মই ধন দি কিনো মোক দাসী দে, মোর বহু ধন আছে, আরু মোর ভার্যা অতি সুকুমারী, তেওঁ ঘরর কাম করিব নোৱারে এতেকে মোক এজনী দাসী লাগে। তোর ভার্য্যার কার্য দক্ষতা, বয়স, রূপ আরু স্বভাৱর উচিত মূল্য মই দিছোঁ, মোক সেই তিরোতা দে।” ব্রাহ্মণর এই কথা শুনি হরিশ্চন্দ্র রজার শোকেরে বুকু ফাটি যোৱা যেন হৈ মুখে মাত নোলাল। তেতিয়া সেই বামুণে রজার বাকলি বসনর আঁচলত ধন বান্ধি দি রাজ-মহিষীর হাত বান্ধিলে, আর চুলিত ধরি টানি নিলে। মাকক এই দরে নিয়া দেখি শিখণ্ড-ধারী রাজকুমার রোহিতাশ্বে মাকর আঁচল টানিবলৈ ধরিলে।

তেতিয়া রাজ-পত্নীয়ে অতিশয় কাতর মাতেরে কলে, “হে আর্যা ! হে পিতৃ মোক অলপমান এরোক, মই মোর লয়াটিক চাই লওঁ, পাচে আরু ইয়াক দেখিবলৈ নেপাওঁ” এই বুলি পুতেক সম্বোধন করি কলে, “হে রাজকুমার! * মই এতিয়া লোকর দাসী হলো, তোমার মই অস্পৃশ্য, মোক নুচুবা।” ভেভিয়াও মাক টানি নিয়া দেখি সেই বালকে “আই আই” বুলি পাচে পাচে যাবলৈ ধরিলে; সেই কারণে ক্রোধান্বিত হৈ, ব্রাহ্মণে কোঁত্ররক গোর মারি দিলে, তথাপি বালকে মাকর আঁচল নেরিলে; তাতে রাজ-পত্নীয়ে অতি বিনয় বাকোরে বুলিলে, “হে নাথ! আপুনি অনুগ্রহ করি এই লরাটিকো কিনি লওক; কিয়নো আপুনি মোক কিনিছে হয়; কিন্তু ই মোর লগত নেথাকিলে মই আপোনার কোনো কাম করিব নোত্রারিম। এতেকে এই হতভাগিনীর প্রতি প্রসন্ন হওক, আরু গাইরে সৈতে দামুরির পরে মোরে সৈতে মোর সন্তানটিক লগ লগাওক।” তেতিয়া ব্রাহ্মণে রজাক সম্বোধন করি কলে, “মোর হাতত ধনর যি অৱশেষ আছে, তাক লৈ লৱাটো মোক দে।” এই বুলি তেওঁর কাপোরত ধন বান্ধি দিলে, আর লরাটিক মাকে সৈতে একে লগে ৰাখি আঁছুরি-লৈ গল । তেতিয়া স্ত্রী-পুত্রক এইরূপে লৈ যোৱা দেখি রজাই মহাশোকেরে বিলাপ করিবলৈ ধরিলে,- “হায় হায় ! থাক চন্দ্র, সূর্য, বায়ু আরু ইতর মানুহে কেতিয়াও দেখিবলৈ নেপাইছিল, মোর সেই ভার্য্যা এতিয়া লোকর দাসী হল। সূর্যা-বংশত জাত এই সুকুমার লরাটিও বেচা গল। হা ফিক্ ! মোর সমান দুৰ্ম্মতি মানুহ পৃথিবীত নাই। হা প্রিয়ে! হা পুত্র যোর, অনার্য্যর পাপর দ্বারা তোমালোকয় এনে দশা হৈছে; তথাপি মোর প্রাণ ৰোৱা নাই। ধিক্ ধিক্ !” এইরূপে রজাই বিলাপ করি থাকোতেও সেই বামুণে কোঁৱর আরু কুঁবরীক লৈ গৈ অনেক ওখ গছ আরু ঘরর আর হল; এনেতে বিশ্বামিত্রে পুনরায় রজ্জাক ধন খুজিলেহি। তাতে হরিশ্চন্দ্রে স্ত্রী-পুত্রক বেচি পোৱা ধন তেওঁক সমৰ্পিলে। কিন্তু সেই ধন অলপীয়া দেখি ঋষিয়ে শোকান্বিত রজাক মাত লগাই বুলিলে, “দুরাচার ক্ষত্রিয় ! মোক যজ্ঞর দক্ষিণা ইমান হে দিয় নে ? ই মোর যোগ্য হৈছেনে ? আজি ম‍ই তোক মোর শক্তি দেখাম । তই মোর তপস্যা, নিৰ্ম্মল ব্রহ্ম তেজ, উগ্র প্রভাব আরু বেদ পাঠর ক্ষমতা বুজিবি।” এই কথা শুনি রজাই কাকুতি করি কলে, “হে প্রভু ! পুত্ৰ, ভাৰ্য্যা, দুইকো বেচি যি ধন পাইছিলোঁ, সেই সকলোখিনি আপোনাক দিছোঁ, আরু মোর ধন নাই; আন এক সময়ত বাকী ধন দিম, আজিলৈ মোক ক্ষমা করোক।” তেতিয়া বিশ্বামিত্রে উত্তর দি বুলিলে, “এই দিনর যি চতুর্থ ভাগ অৱশিষ্ট আছে, সেইখিনি কাল মই অপেক্ষা করিম, আরু অধিক কথা নকবি।” এইরূপে নির্দয় আরু কর্কশ কথা কৈ, রজাই দিয়া ধন লৈ কৌশিক ঋষিয়ে প্রস্থান করিলে।

২৯ পাঠ

হরিশ্চন্দ্র উপাখ্যান (ক্রমাগত)।

বিশ্বামিত্র গলত রঞ্জা ভয় আরু শোকসাগরত তল গল; পাচে সকলো কথা গমি চাই উচ্চেস্বরে এই কথা কলে, “মোক ধন দি দাস করি লবর যদি কোনো লোকর আৱশ্যক আছে, তেন্তে তেওঁ শীঘ্ৰে, সূর্য্যদেৱতা অন্ত নৌহওঁতেই, সেই কথা কওক।” এই কথার অন্তত অতি কুরূপ, কুকুরবিলাকেরে আবৃত আরু হাতত টোকোন লোৱা এটা চণ্ডালে আহি বুলিলে, “হের! মই তোক কিনিব খুজিছোঁ, তোর বেচ কি ? অলপ নে বহুত, বেগতে ক।” রজাই তার সেই বিকট আকৃতি, আরু তাক অতি নিৰ্দ্দয় যেন, দেখি সুধিলে, “তুমি কোন ?” চণ্ডালে উত্তর করিলে, “মই এই ঠাইর প্রবীর নামেরে চাণ্ডাল, মরা মানুহর কাপোর বেচি উপজীব্য করো; ইয়াক এই নগরর সকলোৱে জানে।” তাতে রজাই উত্তর দি বুলিলে, “মই চাণ্ডালর দাসত্বস্বরূপ গর্হিত কার্য্য করিবলৈ ইচ্ছুক নহওঁ; ঋষির শাপত বরং দক্ষ হম, তেও চাণ্ডালর অধীন হব নোৱাৰোঁ।” তেওঁ এই কথা কওঁতেই বিশ্বামিত্র উপস্থিত হল হি, আরু খঙ্গেরে চকু পকাই রাজাক “এই চাণ্ডালে তোক বহুত ধন দিব খুজিছে, সেই ধন লৈ মোক যজ্ঞর দক্ষিণা নিদিয় কিয় ?” রজাই কলে, “প্রভু! আপুনি জানে, মই সূর্য বংশত জাত; ধনর লোভত কেনেকৈ চাণ্ডালর দাস হম ?" এই কথা শুনি বিশ্বামিত্রে বুলিলে, “যদি তই চাণ্ডালত বেচা গৈ উচিত সময়ত মোক দক্ষিণা নিদিয়, তেন্তে নিম্নয়ে তোক ম‍ই শাপিম।” কলে,

তেতিয়া হরিশ্চন্দ্র রজা চিন্তা-সাগরত মগ্ন হৈ অতি বিহবলভাবে চরণত ধরি কবলৈ ধরিলে, “হে ঋষিরাজ ! মোর প্রতি প্রসন্ন হওক, মই আপোনার ভক্ত, বর ভয় পাইছোঁ; যি অৱশিষ্ট ধন দিব লগীয়া আছে, তার বাবে মই আপোনার দাস হৈ থাকিম । অনুগ্রহ করি মোক চাণ্ডালর সঙ্গী হোৱার কট্টর পরা রক্ষা করোক।” এই বুলি কাকৃতি করাত বিশ্বামিত্র ঋষিয়ে রজাক সম্বোধন করি কলে, “উত্তম কথা, তই যদি মোর দাস হৈছ, তেন্তে মই এক অর্বুদ টকার নিমিত্তে তোক এই চাণ্ডালত বেচিলোঁ।” এই কথা শুনি চাণ্ডালে অতিশয় আনন্দেরে বিশ্বামিত্ৰক সেই ধন দিলে, আর ইষ্ট-বন্ধুর বিয়োগত ব্যাকুল হৈ থকা রজাক বান্ধি টোকোনেরে টজনিয়াই আপোনার ঘরলৈ লৈ গল । তেতিয়া হরিশ্চন্দ্র রজাই সেই চাণ্ডালর ঘরত থাকি সদায় রাতিপুৱা, দুপরীয়া আৰু গধূলি ইয়াকে মাত্র কৈছিল, যে “হায় ! মোর সেই প্লানমুখী ভার্য্যাই লরাটির মলিন মুখ দেখি, কি জানি, এই চরে ভাবিছে, “রজাই ধন ঘটিব, আরু বামুণক অধিক টকা দি আমাক মোকলাব; কিন্তু হায়! মই যে কি ঘোর পাতক করিছোঁ, সেই মৃগাক্ষীয়ে তাক নেজানে। মোর রাজ্য গল, বন্ধুবিচ্ছেদ হল, স্ত্রী-পুত্র বেচা গল, শেষত আপুনিও চাণ্ডালতাক পালোঁ। হায় হায় ! মই কিমান দুখ ভোগ করিব লাগিছোঁ। মোর কি কপাল !” সৰ্ব্বস্বহীন হোৱা সেই রজাই এইরূপে নিতৌ পরমপ্রিয় পুত্র ভার্য্যাকে সুরীর অতিশয় দুখেরে কাল নিয়াবলৈ ধরিলে।

কিছু কালর মূরত মরার কাপোর হরণ করা চাণ্ডালর অধীনে হরিশ্চন্দ্র শ্মশানর রজা হল, আর সেই চাঙালে তেওঁক মরা-শৱলৈ অপেক্ষা করি দিনে-রাতিয়ে মরিশালিত থাকিবলৈ আদেশ করি ফলে, যে “প্রত্যেক শহর কাপোররপরা যি লাভ হয়, তার ছ ভাগর এভাগ রজার ঘরত শোধাব লাগে, তিনি ভাগ মোর প্রাপ্য, আরু দুভাগ তোর পরিশ্রমর বেচ।” হরিশ্চন্দ্রে সেই আজ্ঞা পাই বারাণসীর দক্ষিণ ফালে থকা শ্মশানলৈ গল। সেই ঠাই কুকুর, শিয়াল, শগুণ আরু মানুহর মূরর খোলারে পরিপূর্ণ, ধোঁয়ারে আবৃত আরু অত্যন্ত দুর্গন্ধ। সি মানুহর তেজ, মাংস আর তেলেরে লিপ্ত। তাত ভূত, পিশাচ, ডাইনী আর বক্ষবিলাকে সদায় বাস করে, আরু মৃতকর মিতির কুটুমবিলাকে “হা পুত্র! হা মিত্র ! হা বন্ধু ! হা প্রিয়া ! হা স্বামী ! অ ভাই ! ঔ ককাই! ঔ আই ! ঔ মোমাই ! ঔ ভাগিন ! কলৈ গলা?” এই বুলি অতিশয় দুখেরে আরু উচ্চৈস্বরে করা চিৎকারর দ্বারা কাণত তাল লাগে। আধা পোৱা শবর ওঁঠ সঙ্কুচিত হৈ দাঁত দুপারি ওলোৱাত বোধ হয় যেন সি শরীরর এনে দশা হয় বুলি ব্যঙ্গ করি হাঁহিছে। জুইর চট্- চট্‌ ধ্বনি, কাউরীয়ে হাড় খোঁটার শব্দ আরু মরার মিত্র-কুটুম্বর কান্দনর স্বর শুনি আনর বেজার আরু ভয় লাগে, কেৱল চাণ্ডালে মাথোন আনন্দ পায়। ভূত, প্রেত, পিশাচবিলাকর কোহালত প্রলয়র কাল হৈছে যেন বোধ হয় ।

হরিশ্চন্দ্র রজাই সেই ঠাই পাই অভিনয় শোকাকুলিত মনেরে কবলৈ ধরিলে, “হা মন্ত্রী! হা বিপ্ৰসকল ! হা ভাতৃবিলাক ! হা শৈব্যা ! হা পুত্র! বিশ্বামিত্রর খক্ষর দ্বারা ভাগ্যহীন হোৱা মোক এরি তোমালোক কলৈ গলা ?” তেওঁ এইরূপে সদায় বিলাপ করি চাণ্ডালর আদেশ পালিবলৈ ধরিলে; আরু “এই ভাগ রজার, এই ভাগ প্রধান চাণ্ডালর, এই ভাগ মোর,” নিত্যে ইয়াকে কৈ জীয়াই থাকোতেই পুনর্জন্ম পোৱা যেন হল। বহু গাঠি দিয়া কটা কথা তেওঁর শরীরর আবরণ; মুখ, বাহু, পেট এইবিলাক চিতার ভস্মেরে এবং আঙ্গুলি আরু ডিজি মরার তেজ, মাংস আর তেলেরে লিপ্ত; মৃতকর উদ্দেশে দিয়া অল্পেই তেওঁর আহার, আরু মরার মালা তেওঁর শিরর ভূষণ হৈছিল। রাতি আরু দিন কেতিয়াও তেওঁর টোপনি নাছিল, আরু মুখত সদায় হায় হায় শব্দ; এইরূপে হরিশ্চন্দ্র রজাই যার মাছ গত করিলে। সেই ফাল তেওঁর মনত এশ বছরর লমান যেন লাগিছিল। হরিশ্চন্দ্র রক্ষাই এই অৱস্থাত বাস করোতে এদিন তেওঁর কুঁবরীরে সর্পর দংশনত গতায়ুস তেওঁর লরাটিক কোলাত লৈ “অ ! পুত্র! অ! বৎস ! মোক এরি কলৈ গলা ?” বারদ্বার এই বুলি অতি ক্ষীণ আরু মলিন বেশের শ্মশানলৈ আহি বিলাপ করিবলৈ ধরিলে- “হে মহারাজ! আপুনি পূর্ব্বে এই লরাটিক অতিশয় আনন্দেরে-ধেমালি করি কুরা দেখিছিল, আজি চাওক সি সাপর কামোরত প্রাণ এরি মাটিত পরি আছে।” তেওঁর কান্দনর শব্দ শুনি পুতের কাপোর হরণ করিবর কারণে রজা হরিশ্চন্দ্র বেগাই সেই ঠাইলৈ আহিল। কিন্তু রাজপত্নী বহুদিন কষ্টত থকার নিমিত্তে বিবর্ণ আরু কুরূপ হৈ পুনর্জন্ম পোৱা যেন হৈছিল, এই কারণ রজাই তেওঁক চিনিব নোৱারিলে। হরিশ্চন্দ্রও অতি মলিন আরু শুকান কাঠর নিচিনা হোৱা হেতু, কুঁবরীয়েও তেওঁ কোন নেজানিলে। তেতিয়া রজাই সাপর বিষত গতায়ুস হোৱা বালকটিক রাজলক্ষণযুক্ত দেখি ভাবিবলৈ ধরিলে, “হায়! কোনোবা চক্রবর্তী রজার ঘরত এই বালকর জন্ম হৈছিল; কিন্তু দুরাত্মা যমে তার এই দশা করিলে। ইয়াক দেখি মাফর কোলা শুই থকা মোর সন্তানটি মনত পরে। যদি দুষ্ট ধর্মে তাক মারি নিয়া নাই, তেন্তে মোর রোহিতাশ্বরো আকৃতি আর বয়স ইয়ার তুল্য হব পায়।” সেই সময়তে কুঁত্ররীয়ে “হা পুত্র! কার শাপত আমার এই কণ্ঠ হৈছে ? হা মহারাজ! হা নাথ ! কলৈ গলা ? মোর এই দুম্বর সময়ত একেবারে মাত নলগোৱা কিয় ? তোমার রাজ্য গল, বন্ধুবান্ধরেরে বিচ্ছেদ হল, পুত্ৰ ভাৰ্য্যা বেচা গল। হা বিধাতা! হরিশ্চন্দ্র রক্ষার নো তুমি কি দুর্গতি নকরিলা ?” এই প্রকারে বিলাপ করি ফাি ধরিলে। হরিশ্চন্দ্র রাজাই তেওঁর এই বাক্য শুনি ভার্য্যা আর মৃত পুত্রক চিনি পালে, আর “এই জনী মোর শৈব্যা ভার্য্যা, এইটি মোর সন্তান” এই বুলি অভিনয় দুখেরে কান্দি মূর্ছিত হল। কুঁবরীয়েও তেওঁক চিনি পাই আরু তেওঁর তেনে দশা দেখি মূৰ্চ্ছিত হৈ মাটিত পরিল। তার পাচত দুয়ো চেতনা পাই পুনরায় বিলাপ করিবলৈ ধরিলে।

১০ পাঠ

হরিশ্চন্দ্রের উপাখ্যান (সমাপ্ত)

রজাই বুলিলে “হা পুত্ৰ ! তোমার কেনে সুন্দর স্ত্র ! কেনে শুৱনি নাক ! কেনে সুন্দর চক্ষু ! তোমার এনে দশা দেখি মোর হিয়া বিদরি নেযায় কিয় ? এতিয়া পিতৃ, পিতৃ বুলি মোর গুরিলে কোন আহিব ? মই বা বাপা, বাপা বুলি কাক আঁকোৱালি ধরিম ? কার অঠুর ধূলিরে মোর গা, কোলা আরু কাপোর মলিন হব ? হা মোর পুত্র ! বুকুর কুটুম! মোর পরা তোমার জন্ম; কিন্তু মই কু পিতা, তোমাক সামান্য বস্তুর দরে বিকিলোঁ। মোর বিপুল ধন আর বৃহৎ রাজ্য হরণ করিও সন্তুষ্ট নহৈ দৈৱস্বরূপ নিষ্ঠুর সাপে শেষত সন্তানটিকো দংশিলে। এতিয়া সেই সর্পে দংশা পুত্রর মুখ দেখিয়েই বিষয় দ্বারা মোর চকু অন্ধ হৈছে। হরিশ্চন্দ্র রাজাই গদ্‌গদ বাকারে এইরূপে বিলাপ করি সেই মৃত শিশুটিক বুকুত লৈ পুনরায় মূর্ছিত হল।

তেতিয়া তেওঁর কুঁবরীয়ে বর শোকেরে কবলৈ ধরিলে, “এওঁ সেই পুরুষশ্রেষ্ঠ আরু জ্ঞানীবিলাকর মনক পোহর করা চন্দ্রস্বরূপ হরিশ্চন্দ্র রজা; তেওঁর বাক্যর দ্বারায়ে মই তাক বুজিছোঁ, ইয়াত কোনো সংশয় নাই। সেই বিখ্যাত- কীর্তি মহারাজার দরে এওঁরো উন্নত নাসিকা, আরু কৃদ্দকলির সদৃশ দাঁত। এই রজা আজি কর পরা শ্মশানলৈ আহিল?” এই বুলি অতি আচরিত মনেরে, আরু স্বামীর দুখত পুত্রশোককো পাহরি, সেই দুঃখিনী কুঁবরীয়ে মাটিত পৰি থকা রজাক চাবলৈ ধরিলে, আরু তেওঁ স্বামীয়ে অতিশয় নিন্দিত আরু চাণ্ডালর যোগ্য দণ্ড পোৱা দেখি অতি দুঃখেরে মূৰ্চ্ছিতা হল; পাচত চেতন পাই “রে নিদারুণ দৈব ! তোর ধিক্! তই অতিশয় নিলাজ আরু নিন্দিত। তই এই দেবতুল্য রাজাক চাণ্ডাল করিলি। হরিশ্চন্দ্র রাজার রাজ্য-নাশ আর বন্ধু বিচ্ছেদ হল, তেওঁর পুত্র ভার্য্যাও বেচা গল ; তাতো তোর সন্তোষ নজন্মিল, তেওঁক তই চাণ্ডাল করিলি ? হা মহারাজ! মই আজি ইমান দুখেরে মাটিত পরি আছোঁ, মোক ওখ আরু কোমল শয্যালৈ নোতোলা কিয় ? আজি দেখোঁ, তোমার ছত্র-চামর ব্যজন তৃষ্ণার আদি একোৱেই নাই, বিধাতার কেনে বিড়ম্বনা!পূর্ব্বে যার আগে আগে রজাবিলাকে ভূতার দরে নিজ কাপোরর আঁচলেরে মাটির ধূলি সারি গৈছিল, আজি সেই হরিশ্চন্দ্র রজার মরা মানুহর মূরর খোলারে, মৃতকর মালারে, শিয়াল, শগুণ, আরু পর ভক্ষণর দ্বারা আনন্দিত ভূত-প্রেতেরে আবৃত, চিতার ধোঁৱারে অন্ধকার আর অশুচি শ্মশানত অতি দুখের নিবাস করিছে।” এই বুলি রাজপত্নীয়ে রজার ডিঙ্গিত ধরি অতি কাতর স্বরেরে কান্দি কান্দি আরও ফবলৈ আরম্ভ করিলে, “হে মহারাজ এই স্বপ্ন নে সতা, মোক নিশ্চয় করি কওক, মোর মন মোহিত হৈছে। হে ধৰ্ম্মত ! আপুনি পরম ধার্ম্মিক; তথাপি আপোনার এনে দশা হৈছে, এই কথা যদি সঁচা হয়, তেন্তে পৃথিবীত ব্রাহ্মণাদির পূজা আরু পালনত একো ধৰ্ম্ম নাই ; সত্যকথন, নিষ্কপটতা আরু দয়া, এই সকলো বৃথা।” কুঁবরীর এই কথা শুনি দীঘল হুমুনিয়াহ কাঢ়ি গদ্‌গদ মাতেরে হরিশ্চন্দ্র রজাই তেওঁ চাণ্ডাল হোৱার সকলো বিবরণ ফলে, তাতে তেওঁর ভার্য্যাইও কান্দি কান্দি পুতেকর মৃত্যুর বৃত্তান্ত রজা জনালে।

তেতিয়া রজাই বুলিলে, “প্রিয়ে ! আরু অধিক কাল দুখর উপাসনা করিবর মোর ইচ্ছা নাই; কিন্তু দুর্ভাগ্যর গুণে মই স্বাধীন নহওঁ, চাণ্ডালর অনুমতি নোহোৱাকৈ যদি অগ্নিত প্রবেশ করে। ভেঙে পরজন্মত আকৌ চাণ্ডাল হব লাগিব। মোর বংশ-রক্ষক এটি মাথোন পুত্র আছিল, মোর দুদৈর-জলর সোঁতত সিও উটি গল । দুখ-সাগরত পরা লোকে প্রাণ এরিব পারিলেই পার পায়; কিন্তু ম‍ই পরাধীন প্রাণ কেনেকৈ এরো ? যেই হওক, কষ্টত পরা মানুহে পাপলৈ ভয় নকরে। পুত্রর বিয়োগত মানুহর যেনে দুখ হয়, পশু-পক্ষীর জাতিত জন্ম, অসিপত্র নরক, আরু বৈতরণী নদী, এইবিলাকর কতো তেনে নহয়। এতেকে হে সুন্দরী! মোর অপরাধ ক্ষমা করিবা, মই পুত্রর পরেরে সৈতে বলা জুইত জাঁপ দিওঁ; তুমি মোর কথা লোৱা। মই অনুমতি দিছোঁ, বামুণর ঘরলৈ উলটি যোৱা। যদি মই কিবা দান করিছিলোঁ, হোম যজ্ঞ করিছিলোঁ, আরু যদি মই গুরুসকলক সন্তোষ দিছিলোঁ, তেন্তে পরকালত পুত্রেরে সৈতে তোমার সাক্ষাৎ পাম । হে সুন্দরী ! যদি মই ইতিকিং করি, কঠিন কথা কৈ বা আন কোনো প্রকারে তোমাক কিবা দুখ দিছিলোঁ, তেনেহলে মই প্রার্থনা করো, মোক ক্ষমা করা।"

এই কথা শুনি কুঁবরীয়ে বুলিলে, “মোরো আরু কষ্ট সহ্য নহয়, জুইত সোমাই আপোনার সহগামিনী হয়।” তেতিয়া রজাই চিতা সাজি পুতেকর পর তাত তুলিলে, আরু সভার্যে। করযোর করি হৃদয়ত থকা অনাদি, অনন্ত, পরমাত্মা পরমেশ্বরক চিন্তিবলৈ ধরিলে। রজাই সেইরূপে চিন্তা করি থাকোতেই ইন্দ্রে সৈতে দেৱতাসকল ধৰ্ম্মক আগত লৈ উপস্থিত হল হি, আরু রজাক সম্বোধন করি কলে, “মহারাজ! শুনা এই জনা ব্ৰহ্মা, এই জনা ভগৱান ধৰ্ম্ম, এই সকল দেৱতা আরু এই জনা বিশ্বামিত্র মুনি। যারে সৈতে পূর্ব্বে তিনিও লোকত কোনোৱে মিত্রতা করিব নোৱারিলে, সেই বিশ্বামিত্র স্বয়ং তোমারে সৈতে বন্ধু তার কামনা করিছে।" তেতিয়া ইন্দ্রে বুলিলে, “মহারাজ! মই ইন্দ্র, তোমার গুৰিলৈ আহিছোঁ, তুমি তিনিও লোকক জিনিলা। তুমি এতিয়া পুত্র ভার্য্যারে সৈতে সশরীরে স্বগলৈ গতি করা; এনে অৱস্থা অন্য লোকর দুষ্প্রাপা; কিন্তু তুমি আপোনার কার্যার দ্বারা তাক লাভ করিলা।” ইয়াকে কৈ ইন্দ্রে, চিতার ওচরলৈ গৈ অপমৃত্যু-বিনাশক অমৃত বরদিলে, তাতে রজার পুতেকে পুনরায় জীবন পাই সুকুমার আরু সুস্থ শরীর আর প্রসন্ন মনেরে চিতারপরা নামিল । তেতিয়া হরিশ্চন্দ্র রজাই মরা পুতেকক পুনরায় পাই সভার্য্যে অতি আনন্দিত হল, আরু ইন্দ্রক সম্বোধন করি বুলিলে, “দেবরাজ! মোর গরাকী চাণ্ডালর অনুমতি নোপোৱাকৈ মই স্বৰ্গলৈ যাব নোৱাৰোঁ।” তাতে ধর্ম্মে রজাক সম্বোধন করি কলে, যে হরিশ্চন্দ্রক পরীক্ষা করিবর কারণে তেৱেঁই চাণ্ডালর রূপ ধরিছিল । পাচে রজাই ইন্দ্রর অনুমতি অনুসারে পুত্র, ভার্যা আরু অযোধ্যা নগরত থকা ভূতাবিলাকক লগত লৈ সশরীরে স্বৰ্গলৈ উঠল।

১১ পাঠ

খনীনেত্রর উপাখ্যান ।

পূৰ্ব্বকালত খনীনের নামেরে এজনা রজা আছিল। তেওঁ অপুত্রক হেতু পুত্র পাবর কারণ পিতৃসকলক বক্তিবর

ইচ্ছারে মাংস আহরণ করিবর কারণ এদিন অকলশরে ধেনু-কাঁড় লৈ আরু ধোঁরাত উঠি বনলৈ গল। হাবির ওচর

পাওঁতেই এটা হরিণাই ওলাই আহি, রজাক সম্বোধন করি কলে, “মহারাজ! মোক বধ করি আপোনার বাঞ্ছা সিদ্ধি করোক।” পহুর কথাত আচরিত হৈ রজাই বুলিলে, “মোক দেখিলে মরিবর ভয়ত আন পহু পলাই যায়, তই স্বয়ং মৃত্যুর মুখত পরিব খুজিছ, ইয়ার কারণ কি?” হরিণাই উত্তর করিলে, “মহারাজ! মোর পুত্র নাই ; এতেকে মোর জীবন অসার্থক; এনে জীৱন আরু অধিক কাল রাখিবর ইচ্ছা নকৰোঁ।”

এই সময়তে আন এটা হরিণাই আহি রজাক কলে, “হে মহারাজ! মোক বধ করি মাংসর দ্বারা ধর্মকৃত্য করোক, তাতে আপুনি বাঞ্ছিত ফল পাব, মোরো উপকার হব। পুত্র পাবর কারণে পিতৃসকলক পূজিব খুজিছে; এই মৃগ অপুত্ৰক, তার মাংসর দ্বারা আপোনার পুত্র লাভ কেনেকৈ হব? মানুহে যি কাম করিব খোজে, তার উপযুক্ত বস্তুর আয়োজন করিব লাগে। আপুনি জানে, দুর্গন্ধি বস্তুর পরা কেতিয়াও সুগন্ধর উৎপত্তি নহয়।” এই কথা শুনি রাজাই বুলিলে, “এই মৃগে পুত্রর অভাবত তার সংসারত বৈরাগ্য হোৱার কারণ বুলি কৈছে; তোর নো জীৱনত বিরাগ কিয় হৈছে কচোন ?" হরিণাই উত্তর করিলে, “মহারাজ! মোর বহুত পোজী আছে; সিহঁতর চিন্তাই সদায় মোক দগ্ধ করে, হরিণ-জাতিক সকলো প্রাণীয়ে সহজে বধিব পারে; এই কারণে কিবা জানি মোর মরমর সন্তান-সন্ততিবিলাকক কোনোবাই হিংসে, এই ভাত সদায় মোর মন ব্যাকুল; মোর মনত মানুহ, সিংহ, বাঘ, শিয়াল আরু কুকুর এই সকলোরেপরা সিহঁতর অনিষ্টর আশঙ্কা হয়। মোর সন্তানবিলাক বাহিরলৈ গলে কিবা জানি সিহঁত জাল, ফান্দ বা অন্যপ্রকার কূট-যন্ত্রত, নাইবা সিংহাদির হাতত পরে, মোর মনত এনে নানা চিন্তা হয়। চাওকচোন মই কেনে ঘোর ভাৱনাত পরি আছো। এই চিন্তাত মোর রাতিয়ে দিনে সুখ-শান্তি নাই । মই আপোনাক মোর দুখর কারণ কলোঁ; এতিয়া প্রার্থনা করো, যেন আপুনি মোক বধ করি এই দুখর পরা উদ্ধার করে। ইমান কষ্ট পায়ো যে, মই স্বয়ং প্রাণ এরা নাই, তার কারণ এই যে, যি আপোন-খাতী হয়, সি অসূর্য।' (সূর্যার পোহর নথকা) নামেরে নরকলৈ যায়; কিন্তু যজ্ঞর নিমিত্তে পশুর সৃষ্টি, এতেকে যজ্ঞত বধ করা হলে পশুরে সাতি পায়। পূর্ব্বে অগ্নি আরু বরুণ দুয়ো পশু আছিল, যজ্ঞত প্রাণ এরি দীপ্তিমন্ত দেৱতা হল। এতেকে হে মহারাজ! মোর প্রতি সদয় হওক, আরু মোক যজ্ঞর নিমিত্তে বধি উর্দ্ধ লোকত ঠাই দিওক । তাকে করিলে আপুনিও অভিলষিত পুত্র পাব।”

ইয়ার পাচত প্রথমটো হরিণাই উত্তর করিলে, “মহারাজ! এওঁর বহু সন্তান, এতেকে এওঁ ধন্য, আরু বধর অযোগ্য; মই দুর্ভগীয়া আরু অপুত্রক এই কারণ মোর প্রাণ মারোক।” তেতিয়া দ্বিতীয়টো হরিণাই পুনর মাত লগালে, “মহারাজ! যি লোকে কেৱল এটা মাত্র দেহর দুখ সহে, তেওঁ সুখীয়া; যার দেহর সংখ্যা অনেক, তেওঁর দুখো অধিক। আগেয়ে মই অকলৈ থকা কালত একেটা দেহরে কষ্ট মাথোন পাইছিলোঁ, যেতিয়া ভার্যা বিয়া করিলোঁ, তেতিয়া মোর দুখ দুগুণ হল, আরু তার পাচত যেতিয়া সম্ভানবিলাক জন্মিলে, তেতিয়া সিহঁতর সংখ্যা যিমান, মোর শরীরর সংখ্যাও সিমান হল, আরু সেই পরিমাণে দুখো বাঢ়ি গল। মহারাজ! যি লোকে যাতনা নেপায়, তেৱেঁই ধনা; মোর এই জীৱন কেৱল দুখর নিমিত্তেই হে হৈছে, আরু পরকালতো সুখ নহয়, কারণ মোর সন্তানবিলাকর পোহপালর নিমিত্তে মই যিবোর কার্যা করিছোঁ, তদ্দ্বারা নিশ্চয়ে নরকত হে মোর ঠাই হব।”

সেই দুই হরিণার এইবিলাক বাদানুবাদ শুনি রাজাই বুলিলে, “পুত্রবস্তু নে অপুত্ৰক লোক সুখী, তাক নিশ্চয় করিব নোৱারি মোর মন অস্থির হৈছে। সন্তানরপরা মানুহর ইহকালত কষ্ট হয়, ই সঁচা; কিন্তু এই কথাও মোর শুনা আছে, যে অপুত্রক লোক ধরুৱা হৈ থাকে। এতেকে জীব হত্যা নকরাকৈ পুত্রলাভর নিমিত্তে যজ্ঞ করিম। ” ইয়াকে কৈ তেওঁ নগরলৈ উলটি গল।

কোনো হরিণাই যে ওপরত লিখা কথা কৈছিল, এনে নহয়; তার দ্বারা মানুহে যে কোনো অৱস্থাত সম্পূর্ণ সুস্থ নেপায় ইয়াকে মাথোন বুজোৱা হৈছে। আমি সদায় দেখিছোঁ, অপুত্ৰক লোক পুত্র পাথর নিমিত্তে ব্যাকুল; যার আবৌ বহুত পুতেক- জীয়েক, তেওঁ সিহঁতর পোহপালর আরু নরিয়া চোৱার চিন্তাতে সদায় দুখত কাল নিয়ায়; এতেকে এই সংসারত সম্পূর্ণরূপে সুখীয়া কেও নাই । এই হেতু নির্দোষ-কাম করি যি অলপ সুখ পোৱা যায় তারেই সন্তুষ্ট হৈ থাকিব লাগে ।

7
প্ৰবন্ধ
ৰাচনৱলী সম্পাদক। ১ম
0.0
"হেমচন্দ্ৰ বৰুৱা ৰচনাৱলী সম্পাদক ১ম" প্ৰখ্যাত হেমচন্দ্ৰ বৰুৱাৰ প্ৰচুৰ ৰচনাৰাজি উন্মোচন কৰা সাহিত্যিক ভঁৰাল। এই উদ্বোধনী সংস্কৰণত তেওঁৰ মৰ্মস্পৰ্শী কবিতাৰ পৰা আৰম্ভ কৰি অন্তৰ্দৃষ্টিসম্পন্ন ৰচনা আৰু আকৰ্ষণীয় চুটিগল্পলৈকে বিভিন্ন লেখাৰ সংকলন কৰা হৈছে। বৰুৱাৰ কথাৰ চশমাৰে পাঠকে তেওঁৰ সাহিত্যিক শক্তিৰ বিৱৰ্তনৰ সাক্ষী হৈ তেওঁৰ সময়ৰ সাংস্কৃতিক আৰু সামাজিক পৰিৱেশৰ মাজেৰে যাত্ৰাত নামি পৰে। বৰুৱাৰ গল্প কোৱাৰ সমৃদ্ধি আৰু সাহিত্যলৈ তেওঁৰ অৱদানৰ চিৰস্থায়ী প্ৰাসংগিকতা অনুভৱ কৰিবলৈ এই সংকলনত নিজকে বিলীন কৰক।
1

কানীয়াৰ কীৰ্ত্তন

9 November 2023
0
0
0

প্রথম অঙ্ক প্রথম দর্শন ভদ্ৰেশ্বৰ বৰুৱাৰ চৰাঘৰ (যোৰ পাটী-ঢাত বৰ গাঁৰু আৰু আগত তামোলৰ বটা লৈ ভদ্ৰেশ্বৰ উপবিষ্ট ) পদ্মপাণি মহন্তৰ প্ৰবেশ ভদ্ৰেশ্বৰ- গোসাঁইদেউ বহোক, ভালেমান দিন দেখো দেখা নাই, কলৈ নো

2

পাঠ-মালা ।

10 November 2023
0
0
0

বালকবিলাকর প্রতি সম্বোধন । হে প্রিয় লরাবিলাক ! তোমালোকে দেখিছা, যে আমার দেশাধিকারসকলে তোমালোকর হিতর নিমিত্তে ধন ভাঙ্গি পঢ়াশালি পাতি দিছে৷ এনে সুচল পাইও যদি তোমালোকে বিদ্যা আৰ্হি জ্ঞানী নোহোৱাঁ, তেন

3

অসমীয়া ভাষাৰ ব্যাকৰণ

11 November 2023
0
0
0

অথ ণত্ববিধি । ১। ব ব এবং ঋ ঋ ইহঁতৰ পিছত নৰ ঠাইত ণ হয়, আৰু কবৰ্গ, পবর্গ এবং হ য ব এই সকল বর্ণে মাধ্যত ব্যবধান কৰিলেও হয়। যথা কৃষাণ, বৰ্ণ, হৰণ, কৰণ, কাৰণ ইত্যাদি। ব্যবধান হলে যেগে, ক্ষেপন, দর্পণ, কার

4

অসমীয়া ব্যাকৰণ

13 November 2023
0
0
0

অসমীয়া ব্যাকৰণ ব্যাকৰণ কি। সকলো জন্তুতকৈ মানুহবিলাকৰ স্বভাৱ বেলেগ। সিবিলাকে ইটোৰ ওপৰত সিটোৱে ভাৰসা ৰাখি অনেক গোট খাই একে ঠাইত থাকে। এই দৰে থাকিব লাগিলে আপোনাৰ মনৰ ভাৱ জনাবৰ আৰু আনৰো মনৰ ভাৱ যুদ্ধেব

5

অসমীয়া লৰাৰ ব্যাকৰণ ৷

14 November 2023
0
0
0

ব্যাকরণ কি? যিবিলাক নিয়ম জানিলে কোনো এক ভাষা শুদ্ধকৈ লিখিব আৰু কব পারি, সেইবিলাক থকা পুথিক সেই ভাষার ব্যাকরণ বোলা যায়। এই পুথিত অসমীয়া ভাষা শুদ্ধরূপে কবর আৰু লিখিবর কিছুমান নিয়ম আছে, এতেকে ই অসমী

6

গা ভালে ৰাখিবৰ উপায় আৰোগ্যৰক্ষাবিধানৰ আদি-পাঠ

15 November 2023
1
0
0

১। বিশুদ্ধ বায়ু (১) বায়ু আৰু কিহৰ দ্বাৰা সি নিৰ্ম্মিত। ৪। আহাৰ বা পানী নোখোৱাকৈ আমি কেইবা দিনো জীয়াই থাকিব পাৰোঁ; কিন্তু বায়ু নহলে আমি খন্তেকতে মৰোঁ। এই জগতলৈ আহি প্ৰথমতে আমি দেহৰ ভিতৰলৈ বায়ু স

7

শ্রীহেমচন্দ্র দেবশর্ম্মার দ্বারা লিখা হৈ।

16 November 2023
1
0
0

আদি পাঠ। মাজ চোৱা। আলচ। হে মোৰ মৰমৰ লৰা বিলাক তোমালোকে কঁঠালৰ এঠা দেখিছা। — সি কেঁছাই থাকোতে সকলো বস্তুকে কামোৰ মাৰি ধৰে, কিন্তু শুকালে একোতে নেলাগে। মানুহৰ বুদ্ধিও তেনে। লৰা কালৰ বুদ্ধিএ কেঁছা এঠা

---

এখন কিতাপ পড়ক